গোলাম আজিজ॥ অবশেষে খোঁজ মিলল অপু বিশ্বাসের। বিদেশে আছেন তিনি। তবে ভালো নেই। প্রচন্ড মানসিক কষ্টে আছেন। শারীরিকভাবেও ভেঙ্গে পড়েছেন। সহসা দেশে ফিরছেন না। ২৯ আগষ্ট বেলা ২টা ৪৭ মিনিট। একটি বিদেশি নাম্বার থেকে কল আসে। বিসিভ করতেই ভেসে আসে অপরিচিত মহিলার কন্ঠস্বর। আমর পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তিনি নিজেকে অপু বিশ্বাসের ঘনিষ্ট বলে দাবি করেন এবং অপু সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য সংবাদ মাধ্যমকে জানাতে চান। তিনি বলেন, অপু ভালো নেই। তার এই ভালো না থাকার জন্য শাকিব খান দায়ী। অপুকে বিয়ে কলেছেন শাকিব এমনও দাবি তার। বিয়ের শাল উল্লেখ করতে পারলেও কোন কাজী অফিসে বিয়ে হয় তা সুত্রটি জানাতে পারেননি। একজন প্রযোজন যিনি কিনা শাকিব অপুর খুব কাছের মানুষ হিসেবে পরিচিত তিনি এই বিয়েতে সহযোগিতা করেন, বাসায় কাজী নিয়ে আসেন। গুলশানে শাকিবের বাসাতেই বিয়ে পড়ানো হয় বলে সূত্রটি দাবি করে বলেন, ওই প্রযোজক ছিলেন বিয়েতে উকিল বাবা। আর শাকিবের এক চাচাতো ভাই ছিলেন সাক্ষি। অপুর পক্ষে কোন সাক্ষী ছিল না বলেও দাবি সূত্রের।
বিয়েতে কারও পরিবারের অন্য কোনো সদস্য উপস্থিত ছিলেন না বলে জানান তিনি। সূত্র জানায়, মুসলিম রীতি অনুযায়ী সম্পন্ন হওয়া বিয়েতে হিন্দু ধর্মাবলম্বী অবন্তী বিশ্বাস অপুর নাম কাবিননামায় অপু ইসলাম খান নামে লিপিবদ্ধ করা হয়। অপুর ঘনিষ্ঠ সূত্র বলে দাবিদার ব্যক্তি বলেন, বিয়ের পর বেশ সুখেই দিন কাটছিল তাদের। গুলশানে শাকিবের বাসাতেই বেশির ভাগ সময় কাটাতো দুজনের। শাকিবের অনুরোধে অপু অন্য কোনো নায়কের বিপরীতে তেমন একটা অভিনয় করতে পারেননি। সূত্র জানায়, এক সময় তাদের সম্পর্ক তিক্ততার দিকে মোড় নিতে শুরু করে। এর জন্য অপুর প্রতি শাকিবের আচরণই দায়ি বলে জানায় সূত্র। অপুর চেয়ে অন্য মেয়েদের প্রতি শাকিবের দুর্বলতা বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি অপু আঁচ করতে পারলে তাদের সম্পর্কের অবনতি হতে শুরু করে। দুজনের মধ্যে দূরত্ব তৈরী হতে থাকে। তারপরও অপু চেয়েছিলেন শাকিবকে নিয়ে ঘর করবেন। কিন্তু শাকিব কোনো কথা তো শুনতেনই না বরং অপুর ওপর নানাভাবে নির্যাতন করতেন বলে দাবি সূত্রের।
২৯ আগষ্ট বিদেশি আগন্তকের কল থেকে এসব বিষয় জানা গেলেও এতদিন তা নিশ্চিত করার চেষ্টা চলে। ২৮ আগষ্ট সাকিব খান ছবির শুটিংয়ে অষ্টেলিয়া যাওয়ার পর এখনও না ফেরা এবং অপুকে না পাওয়ার কারণে তাদের কোনো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। সূত্রটির সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা চলে। আর নিশ্চিত হয়েই তা প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সূত্রটি জানায়, অপু বিশ্বাস কোনোভাবেই শাকিব খানকে ছাড়তে চান না। শাকিব খানকে নিয়েই সুখে সংসার করার ইচ্ছা তার। সূত্র আরও জানায়, বিয়ের কাবিননামার একট্ িকপি অপুর কাছেই ছিল। কিন্তু এ বছরের শুরুর দিকে দুজনের মনোমালিন্য চরমে পৌঁছলে শাকিব জোর করে অপর কাছে থেকে কাবিননামা নিয়ে যান। এত কিছুর পরও শাকিবের ফিরে আসার অপেক্ষায় থাকেন অপু। তাতে অবশ্য কোনো কাজ হয়নি। শাকিব-অপুর সম্পর্ক যখন চরম অবনতির দিকে গড়াই তখনই হতাশ হয়ে অপু চলতি বছরের মার্চ থেকে নিজেকে সবার আড়াল করে নেন। শাকিবের বিপরীতে চুক্তবদ্ধ হওয়া বসগিরি ও শুটার ছবির কাজ ফিরিয়ে দেন। শুটিং বাকি থাকা পাংকু জামাই, রাজনীতি; মা ছবির কাজে আর ফেরেননি। গুলশানে নিজের জিম সেন্টারটিও বন্ধ করে দেন। নতুন কোন ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হওয়া দূরে থাক কোন নির্মাতা বা সাংবাদিকের মুখোমুখি পর্যন্ত হননি তিনি। এমনকি নিজের কাছের মানুষদের কাছ থেকেও দূরে সরে যান। এত কিছুর মধ্যেও বারবার শাকিবকে সুবোধ ছেলের মতো নিজের কাছে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।
ব্যর্থ ও হতাশ হয়ে জুন মাসে বিদেশে চলে যান অপু। সূত্রটি জানায়, বর্তমানে নতুন নায়িকা বুবলীর প্রতি শাকিবের অতি প্রীতি অপুকে আরও বিধ্বস্ত করে ফেলেছে অপু নাকি বলেছেন শাকিব যত কিছুই করুক তাকে ডিভোর্স দেবেন না তিনি। সূত্রের দেওয়া তথ্য মতে, অপু বলেছেন শাকিব খান এতদিন ধরে তার ওপর যে নির্যাতন চালিয়েছেন তার প্রতিশোধ কড়ায় গন্ডায় উসুল করবেন তিনি। কোনোভাবেই শাকিবকে ডিভোর্স দেবেন না। শাকিবকে নিয়েই সংসার করবেন তিনি। সূত্রের কাছে জানতে চাওয়া হয় শাকিবকে বিয়ে করার সিদ্ধান্তটি এখন কীভাবে দেখছেন অপু। সূত্র বলছে, অপু এটিকে ভুল সিদ্ধান্ত হিসেবেই দেখছেন এখর আর বারবার বলছেন ‘আমি ভুল করেছি’। সূত্র জানায়, শাকিবের সঙ্গে ২০০৬ সালে জুটি বেঁধে প্রথমে কোটি টাকার কাবিন, এর পিতার আসন, চাচ্চু, দাদীমা, মায়ের হাতে বেহেস্তের চাবি প্রভৃতি ছবিতে কাজ করতে গিয়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এক সময় তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বাস্তবে ও পর্দায় এই জুটির অবস্থা ছিল বেশ রমরমা। দর্শকও বড় পর্দায় শাকিব-অপু জুটির রসায়ন সাদরে গ্রহণ করেন। চলচিত্রকাররা বলেছেন, চলচিত্রে শিল্পী সংকট চলাকালে এই জুটি ছিল দর্শক-নির্মাতার ভরসার প্রতীক। তাদের গোপন রোমান্স বিয়ের খবর চলচিত্র জগৎ ছাড়াও সাধারণ মানুষ অনেক আগেই অনুমান করতে পেরেছিলেন। চলচিত্র জগতের মানুষ এ তথ্য জানিয়ে বলেন, এতে কেউ কোনো বিরূপ মনোভাব পোষণ করেননি। এক সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে প্রেম-বিয়ে হতেই পারে। কিন্তু পরবর্তীতে তা তিক্ততায় গড়াক এটি কারো কাম্য নয়। সূত্র জানায়, অপু বিশ্বাস এ বছরের শেষ দিকেই দেশে ফিরবেন। এ সময়ের মধ্যে শাকিবের কাছ থেকে কোনো রকম ইতিবাচক সাড়া না পেলে সংবাদ সম্মেলন করে শাকিবের অনেক অজানা তথ্য সবাইকে জানিয়ে দেবেন অপু। তথ্য সূত্র বাংলাদেশ প্রতিদন।