তাজুল ইসলাম॥ আমাদের সবার প্রীয় সর্বসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক আর নেই। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৮১। শেষ ইচ্ছানুযায়ী কুড়িগ্রামে লেখকের নিজ গ্রামের মাটিতে শেষ আশ্রয় পাবেন তিনি। হাসপাতাল থেকে মরদেহ নেয়া হয় তাঁর গুলশানের বাসভবনে। রাতে লাস হিমঘরে রাখা হবে তারপর আগামীকাল সকাল ১০টায় প্রাথমে চ্যানেল আই প্রাঙ্গনে ও সকাল পৌনে ১১ টায় বাংলা একাডেমীতে দ্বিতীয় নামাজে জানাজার পর সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তাঁর মরদেহ সকাল ১১টায় শহীদ মিনারে রাখা হবে। বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জামে মসজিদে আরেকটি জানায়ার পর শেষ ইচ্ছানুযায়ী কুড়িগ্রামের গ্রামের বাড়িতে তাকে দাফন করা হবে। তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সৈয়দ হক চেয়েছিলেন জীবনের শেষ কয়টি দিন দেশের মাটিতে কাটাতে আর তাই তিনি লন্ডন থেকে দেশে ফিরে আসেন এবং এসে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হন। আর তখন প্রধানমনন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে দেখতে হাসপাতালে যান এবং চিকিৎসার যাবতীয় দায়িত্ব তিনি নেন। কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাস যে এইখানেই নিরব। কারো কিছু করার থাকে না এই শেষ অধ্যায়ে। শুধু স্মৃতি হাতড়ে বেড়ানো বা সৃজনশীলতার সৃষ্টিকে আকড়ে ধরে পরবর্তী অগ্রসর হওয়া ছাড়া আর কোন গতি থাকে না। সৈয়দ শাসসুল হকের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।
১৯৩৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর কুড়িগ্রামের জন্ম গ্রহণ করেন সৈয়দ শামসুল হক। কবিতা, উপন্যাস, নাটক, ছোটগল্প তথা সাহিত্যের সকল শাখায় সাবলীল পদচারণার জন্য তাকে সর্বসাচী লেখক বলা হয়। মাত্র ২৯ বছর বয়সে সৈয়দ শামসুল হক বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান। বাংলা একাডেমি পুরস্কার পাওয়া সাহিত্যিকদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে কম বয়সী লেখক। তার অজ¯্র সৃষ্টিকে পুজি করেই পরবর্তী এবং বর্তমান প্রজন্ম এগিয়ে যাচে। তাঁর মৃত্যু সংবাদে দেশবাসী মুচরে পড়েছেন। আমরা শোককে শক্তিতে পরিণত করে এগিয়ে যাব তারই দেখানো নীতি এবং পথে।