আন্তর্জাতিক ডেক্স বাসসের কল্যাণে॥
ভারত-চিন সম্পর্ক কি নতুন মোড়ে পৌঁছতে পারে? জল্পনা শুরু চিনা কূটনীতিকের ভাষণের পর। চিনের সর্বক্ষণের মিত্র পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের তুমুল টানাপড়েনের মাঝেই ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্কের উপর জোর দিল চিন। নয়াদিল্লির চিনা দূতাবাসে নিযুক্ত এক শীর্ষ কূটনীতিক বললেন, গত কয়েক বছর ধরে ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। চিন-ভারত হাত মিলিয়ে চললে এশিয়া মহাদেশ গোটা বিশ্বকে শাসন করার ক্ষমতা রাখে, ইঙ্গিত চিনা কূটনীতিকের মন্তব্যে।
বৃহস্পতিবার দিল্লিতে চিন সংক্রান্ত বিভিন্ন বইয়ের একটি সম্পাদকীয় দফতরের উদ্বোধন করেছেন নয়াদিল্লির চিনা দূতাবাসের মিনিস্টার কাউন্সেলর চেং গুয়াংঝং। সেই অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে চেং বলেন, ‘ড্রাগন’ এবং ‘হাতি’ এক সঙ্গে হাতে হাত রেখে নাচতে পারে। চেং বলেন, ‘‘নিজস্ব বৈশিষ্ট্যগুলি ধরে রেখেও সহযোগিতার সাধারণ ক্ষেত্র খুঁজে নিতে ভারত ও চিনের মধ্যে সাংস্কৃতিক আদানপ্রদান ও আলোচনা অত্যন্ত জরুরি বিষয়। পৃথিবীর দুই প্রাচীনতম সভ্যতা ভারত ও চিন পরস্পরের দৈত্যাকার প্রতিবেশী হিসেবেও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পথ খুঁজে নিতে দারুণ ভাবে সক্ষম।’’
চেং-এর কথায়, যে নেতরা ভারত-চিন মৈত্রীর উপর জোর দিয়ে এসেছেন, তাঁরা বার বারই বলেছেন, ভারত এবং চিন, দু’দেশই যখন উন্নত হয়ে উঠবে এবং পরস্পরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে চলবে, তখনই প্রকৃত ‘এশীয় যুগ’ শুরু হবে। ভারত-চিন মৈত্রী শুধু এশিয়াকে নয়, গোটা বিশ্বকে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা রাখে বলেও চিনা কূটনীতিক এ দিন মন্তব্য করেন। গোটা এশিয়ায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা ধরে রাখার এবং এশিয়ার সমৃদ্ধি ফিরিয়ে আনার ঐতিহাসিক দায়িত্ব ভারত এবং চিনেরই, মন্তব্য চেং গুয়াংঝং-এর।
চিন-ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে টানাপড়েনের বিষয় একাধিক। তবে সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানই চিন-ভারত সুসম্পর্কের পথে সবচেয়ে বড় কাঁটা। পাকিস্তানের আবদার মেনে ভারতের এনএসজি-প্রবেশের পথে কাঁটা বিছিয়েছে চিন। জইশ-প্রধান মাসুদ আজহারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আদায় করার যে চেষ্টা ভারত চালাচ্ছে, তাও একাধিক বার আটকে দিয়েছে চিন। ভারত-পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে এখন যে তুমুল উত্তপ্ত পরিস্থিতি, তার প্রেক্ষিতেও চিন পাকিস্তানের দিকেই ঝুঁকে থাকার ইঙ্গিত দিয়েছে। কিন্তু সে সবের মাঝেই চিনা কূটনীতিক বৃহস্পতিবার যে ভাবে ড্রাগন আর হাতির মৈত্রীর প্রশ্নে বার বার জোর দিলেন, তাকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন ভারতীয় কূটনীতিকরা।