তাজুল ইসলাম॥ সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নে বাংলাদেশের কর্মপন্থা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে এবং অন্যান্য দেশ এখন তা অনুসরণ করতে চাইছে। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য-প্রযুক্তি উপদেষ্টা জয় বলেন, “আমরা সারা বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছি। আমার জানামতে পৃথিবীতে আর কোনো দেশ নেই, এত অল্প সময়ের মধ্যে একটা দরিদ্র দেশ নিজেদের অর্থায়নে, অন্য কোনো দেশের সহযোগিতা বা পরামর্শ না নিয়ে নিজেরাই ডিজিটাইজ করেছে। “আর একারণেই এখন বাংলাদেশ সারা বিশ্বের সামনে উদাহরণ। আমি বলব- আমরা এক্সপার্ট হিসেবে দাঁড়িয়েছি।”
জয় বলেন, “এখন জাতিসংঘ আমাদের কাছ থেকে এক্সপার্টিজ চায় যে অন্যান্য দরিদ্র দেশ কীভাবে ডিজিটাইজেশন করতে পারে। অন্যান্য দেশও আমাদের কাছে আসছে এখন, যে আমাদের শিখিয়ে দাও, আমাদের দেশ ডিজিটাইজড করে দাও। সেটা আমরা করছি।” আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় না থাকলে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বলে ‘কিছুই হত না’ বলে মন্তব্য করেন তিনি। নির্বাচনী ইশতেহারে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার ঘোষণা দিয়ে ২০০৮ সালে নির্বাচনে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ। তখন থেকে সরকারকে পরামর্শ ও পরিকল্পনা দিয়ে সহায়তা করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর ছেলে জয়।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে ‘আইসিটি ফর ডেভেলপমেন্ট-২০১৬’ পুরস্কার দেওয়া হয় জয়কে। এ পুরস্কার পাওয়ায় জয়কে সংবর্ধনা দিতেই তথ্য-প্রযুক্তি বিভাগ এ সংবর্ধনার আয়োজন করে। বক্তৃতার শুরুতেই তার এ পুরস্কার পাওয়ার কৃতিত্ব আওয়ামী লীগ সরকারকে দেন জয়। “এ স্বীকৃতি, পুরস্কার শুধু আমার একার নয়, এটা হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকারের। আট বছর আগে যখন ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন প্রকাশ করি তখন বাস্তবায়ন করতে নেমে যায় আওয়ামী লীগের সকল কর্মী।” ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার কাজে সরকারের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানিয়ে জয় বলেন, “আপনাদের পরিশ্রমের কারণে এ পর্যায়ে আসতে পেরেছি। পরামর্শ দিয়েছি, পরিকল্পনা করেছি, তবে বাস্তবায়ন করেছেন আপনারা।”
জয় বলেন, “অনেকে বলেছিল, ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল শুধু শহরের মানুষ, ধনী মানুষ পাবে। সাধারণ মানুষ পাবে না। “আমরা বলেছিলাম- না, সেটা আমরা হতে দেব না। সারা বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ যাতে এই ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল পায় সেভাবেই আমরা কাজ করব।” অর্থ কোথা থেকে আসবে অনেকে সে প্রশ্ন তুলেছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা বলেছিলাম করব, নিজেদের অর্থেই করব। আমরা সেটা করেছি।” সে সময় বিশ্ব ব্যাংক সহায়তা করার জন্য এগিয়ে এলেও সরকার তা নেয়নি বলে জানান তিনি।
“আজকে আমি অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, সম্পূর্ণ ডিজিটাল বাংলাদেশ; পরিকল্পনা থেকে আরম্ভ করে বাস্তবায়ন, সম্পূর্ণভাবে আমরা নিজেদের মতন করে করেছি। নিজেদের পরিকল্পনা-ই করেছি, নিজেদের অর্থেই করেছি।
“কিছু কিছু বড় পর্যায়ে যে প্রযুক্তি দেশে নেই, বাইরের কোম্পানি এসে করেছে। তবে বেশিরভাগ ডিজিটাইজেশন করেছে বাংলাদেশের কোম্পানি।” অনুষ্ঠানে জয়কে শুভেচ্ছা স্মারক দেওয়া হয়, পাঠ করা হয় মানপত্র। অন্যদের মধ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, তথ্য-প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।