টিআইএন॥ বাংলাদেশ রেলওয়েতে যুক্ত হচ্ছে বুলেট ট্রেন। এটি যুক্তিযুক্ত এবং যুগউপযোগী বটে। কারণ বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে; মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত হচ্ছে। তাহলে আমাদের মান্দাতার আমলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আকঁড়ে থাকলে চলবে না তাই ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত নতুন হাইস্পিড ট্রেন (বুলেট) চালুর উদ্যোগ নিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে রেলপথে ঢাকা-চট্টগ্রামের দূরত্ব কমবে প্রায় ৯০ কিলোমিটার। কমবে যাত্রী ভোগান্তিও। এরই মধ্যে এমন প্রস্তাবনা পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
ঢাকা-চট্টগ্রাম সেকশন বাংলাদেশ রেলওয়ের সব থেকে গুরুত্ত্বপূর্ণ র রুট। এ রুটের দৈর্ঘ্য ৩২০ দশমিক ৭৯ কিলোমিটার। বর্তমানে ঢাকা থেকে টঙ্গী-ভৈরববাজার-ব্রাহ্মণবাড়িয়া-কুমিল্লা হয়ে চট্টগ্রামে পৌঁছে ট্রেন। এতে অনেক সময়ও লাগে। কিন্তু ঢাকা থেকে কুমিল্লা লাকসাম হয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত হাইস্পিড ট্রেন লাইন নির্মাণ করা হলে প্রায় ৯০ কিলোমিটার দূরত্ব কমে যাবে। সময়ও কমবে প্রায় দুই ঘণ্টা। কর্মকর্তারা বলছেন, বুলেট ট্রেন ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার গতিতে চলবে। প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ঢাকা থেকে খুবই কম সময়ে চট্টগ্রামে পৌঁছানো যাবে।
ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার গতির রেলপথ নির্মাণের উদ্যোগ এটাই প্রথম। ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি সমীক্ষা প্রকল্পের প্রস্তাব পাঠিয়েছি। এ কাজ শেষ হলেই মূল প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। এ মেগা প্রকল্পে চীন অর্থায়নের আগ্রহ দেখিয়েছে। সম্প্রতি ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে দ্রুত গতির রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পে’র ওপর সম্ভাব্য সমীক্ষা ও বিশদ নকশা পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে কয়েক দফা পিইসি (প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি) সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ প্রকল্প নির্মাণে সমীক্ষা প্রকল্পের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ১১০ কোটি টাকা। ২০১৬ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সমীক্ষায় প্রস্তাব করা হয়েছে।
এদিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের জন্য একটি সম্ভাব্য সমীক্ষা প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন আছে। বুলেট রেলপথটি এই এক্সপ্রেসওয়ের পাশ দিয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানালেন সংশ্লিষ্টরা। সড়ক ও জনপথ বিভাগ জানায়, এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করার জন্য তিনটি সম্ভাব্য রুট নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রথমটি হচ্ছে মদনপুর (ঢাকা) -দাউদকান্দি-কুমিল্লা-ফেনী হয়ে চট্টগ্রাম, এই রুটের দৈর্ঘ্য ২১৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার। দ্বিতীয় রুটটি মদনপুর (ঢাকা)-দাউদকান্দি-বরুড়া-ফেনী হয়ে চট্টগ্রাম, এই রুটের দৈর্ঘ্য ২০৮ দশমিক ৫ কিলোমিটার। তৃতীয় রুটটি মদনপুর (ঢাকা)-দাউদকান্দি-চাঁদপুর-ফেনী হয়ে চট্টগ্রাম যাবে। এ রুটের দৈর্ঘ্য ২৮০ কিলোমিটার। এ তিন রুটের মধ্যে দূরত্ব কম হওয়ায় মদনপুর (ঢাকা)-দাউদকান্দি-বরুড়া-ফেনী হয়ে চট্টগ্রাম রুটে হাইস্পিড রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা করছে মন্ত্রণালয়।