আন্তর্জাতিক ডেক্স॥ নূর চৌধুরীকে নিয়ে অনেক খবর প্রকাশ এবং প্রচারিত হয়েছে। তাই যতটুকু মিডিয়া এবং বিশ্বস্ত সুত্রের মাধ্যমে জানা যায় তাই প্রকাশ করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি এবং মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি নূর চৌধুরীকে দেশে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া গ্রহণে সম্মত হয়েছে কানাডা। বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়েছে। কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টিফেন ডিওন মঙ্গলবার (২৫অক্টোবর) অটোয়ায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৈঠকে বলেন, ‘আমরা বিষয়টি নিয়ে কানাডা সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে কথা বলব। বৈঠকে দুই মন্ত্রী বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি নূর চৌধুরীকে দেশে ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।’ উল্লেখ্য, নূর চৌধুরী ১৯৯৬ সাল থেকে কানাডায় বসবাস করছেন।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাসটিন ট্রুডোর মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকের ফলো আপ হিসাবে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নূর চৌধুরীকে দেশে ফিরিয়ে দেয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী সাজাপ্রাপ্ত আসামি নূর চৌধুরীকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তরে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানান। বৈঠকে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিষয়টিও উত্থাপিত হয়। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার গৃহীত পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন। বৈঠকে কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশের মাটি থেকে সকল প্রকার সন্ত্রাস নির্মূলে বাংলাদেশ সরকারের নিরলস প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন। এ সময় কানাডার মন্ত্রী আইনের শাসন এবং মানবাধিকার প্রশ্নে কানাডার পক্ষ থেকে সবধরনের সহায়তা প্রদান এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশের পাশে থাকতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলীকে আশ্বাস প্রদান করেন।
বৈঠকে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে এয়ার সাভির্স এগ্রিমেন্টের (এএসএ) সর্বশেষ অবস্থা, ফরেন ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন এন্ড প্রটেকশন এগ্রিমেন্ট (এফআইপিএ) এবং ফরেন অফিস কনসালটেশন বিষয়ে (এফওসি) সমঝোতা স্মারক নিয়ে আলোচনা করা হয়। একমাত্র এফআইপিএ ব্যাতিত অপর সকল চুক্তি এবং এমওইউ এখনো পেন্ডিং রয়েছে। এটি কানাডার বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। এসব বিষয় আলোচনায় স্থান পায়। কানাডার পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে জানানো হয়, প্রস্তাবিত চুক্তি ও এমওইউ নিয়ে তারা কাজ করছেন। এ বিষয়ে শিগগিরই তারা তাদের অবস্থান বাংলাদেশকে জানাতে পারবেন। বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধি পাওয়ায় দুই মন্ত্রীই সন্তোষ প্রকাশ করেন। বর্তমানে এই বাণিজ্যের পরিমাণ ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী বলেন, গত মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্ট্রিল সফরে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। বার্তায় আরো বলা হয়, পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী কানাডার প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরে আসতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণপত্র পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টিফেনের কাছে হস্তান্তর করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ কীভাবে ২০২১ সালের মধ্যে একটি মধ্য আয়ের দেশে রূপান্তরিত হওয়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছে, তা দেখার জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরে আসার আমন্ত্রণ জানান।