বাআ॥ “৩শরা নভেম্বার বাংগালী জাতীর ইতিহাসে আরেকটি কলঙ্ক মাখা দিন।’গভীরভাবে শ্রধাঞ্জলি জানাই।। গভীর সমুদ্র থেকে জাহাজকে নিরাপদে বন্দরে নিয়ে আসতে এক’জন দক্ষ নাবিক লাগে।মুক্তিযুদ্ধের সেই ভয়াভহ দুঃসময়ে তাজউদ্দীন সাহেব ছিলেন একজন হতভাগ্য পাইলট এবং তাঁর বিশ্বস্ত তিন কান্ডারি’!! “জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু এবং আমাদের জাতীয় চার নেতাকে হারিয়ে এই দেশ এতিম হয়ে পড়েছিল।জাতীর জনকের কন্যা জন-নেত্রী শেখ হাসিনা ৯৬এ ক্ষমতায় না আসলে এ দেশ থেকে স্বাধীনতার চেতনা বলে কিছুই থাকতো না,যা আমরা ৭১এ লক্ষ কোটি রক্তের বিনিময়ে অর্জন করেছিলাম।আমি এখানে ধারাবাহিক ভাবে জেল হত্যার রিপোর্ট প্রকাশ করছি’।
“আইজি প্রিজন নুরুজ্জামানের জেলহত্যা রিপোর্ট,(১) “আজ মহান জেল হত্যা দিবস।এটাকে জেল হত্যা দিবস না বলে “জাতীয় লজ্জা দিবস বলা উচিৎ ছিল।১৯৭৫ এর ১৫ই আগস্ট আর ৩রা নভেম্বর একি সুত্রে গাথা। আমাদের জাতিকে মেধা সুন্য করার শপথ নিয়ে নেমে ছিলেন জীয়া, রশিদ এবং মোস্তাক গংরা।এবং তারা স্বার্থক হয়েছিলেন বলে আজ আমাদের সমাজে বুদ্ধিজিবীর জায়গায় কিছু বেস্যা-সুসীল জায়গা করে নিয়েছে।এটা ১৯৭১এর ১৪ই ডিসেম্বরের পুনরাবৃতি। বাংলাদেশ আওয়ামিলীগ যদি ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় না আসতো তাহলে ৭১ এর বাকি যে চেতনা ছিল তাও মিলিন হয়ে জেতো। “১৯৭৫এর ৩ নভেম্বর ভোর তিনটায় আমি বংগভবন থেকে মেজর রশিদের একটা ফোন পাই। তিনি আমার কাছে জানতে চান, ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে কোনো সমস্যা আছে নাকি? আমি জানালাম, ঠিক এই মুহূর্তের অবস্থা আমার জানা নেই। এরপর তিনি আমাকে জানালেন কয়েকজন বন্দিকে জোর করে নিয়ে যেতে কিছু সেনাসদস্য জেল গেটে যেতে পারে। আমি যেনো জেল গার্ডদের সতর্ক করে দেই। সেই অনুযায়ী আমি সেন্ট্রাল জেলে ফোন করি এবং জেলগেটে দায়িত্তে থাকা ওয়ার্ডারকে ম্যাসেজটি জেলারকে পৌছে দিতে বলি, যাতে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়। ৩/৪ মিনিট পর বঙ্গভবন থেকে আরেকজন আর্মি অফিসারের টেলিফোন পাই। তিনি জানতে চান আমি ইতিমধ্যেই জেল গার্ডদের সতর্ক করে দিয়েছি কিনা। আমি ইতিবাচক জবাব দেবার পর তিনি আমাকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা স্বচক্ষে দেখার জন্যে জেলগেটে চলে যেতে বলেন।
আমি তখন ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে ডিয়াইজি প্রিজনকে ফোন করি। খবরটা জানিয়ে আমি তাকে তাতক্ষনিকভাবে জেলগেটে চলে যেতে বলি। দেরি না করে আমিও জেলগেটে চলে যাই এবং ইতিমধ্যে সেখানে পৌছে যাওয়া জেলারকে আবার গার্ডদের সতর্ক করে দিতে বলি। এরই মধ্যে ডিয়াইজিও জেলগেটে পৌছেন। বঙ্গভবন থেকে পাওয়া খবরটা আমি আবার তাঁকে জানাই। এর পরপরই মেজর রশীদের আরেকটি ফোন পাই। তিনি আমাকে জানান, কিছুক্ষণের মধ্যেই জৈনক ক্যাপ্টেন মোসলেম জেলগেটে যেতে পারেন। তিনি আমাকে কিছু বলবেন। তাঁকে যেন জেল অফিসে নেওয়া হয় এবং ১, জনাব তাজুদ্দীন আহমেদ, ২জনাব মনসুর আলী৩, জনাদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম ৪, জনাব কামরুজ্জামান্, এই চার জন বন্দিকে যেন তাঁকে দেখানো হয়।
এ খবর শুনে আমি প্রেসিডেন্টের সংগে কথা বলতে চাই এবং টেলিফোনে প্রেসিডেন্টকে খবর দেওয়া হয়। আমি কিছু বলার আগেই প্রেসিডেন্ট জানতে চান, আমি পরিস্কারভাবে মেজর রশীদের নির্দেশ বুঝতে পেরেছি কিনা। আমি ইতিবাচক জবাব দিলে তিনি আমাকে তা পালন করার আদেশ দেন।(চলবে…)