আন্তর্জাতিক ডেক্স॥ নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসছে হিলারি ক্লিনটন ও ডনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে লড়াইটা ততই তীব্র হয়ে উঠছে। জনপ্রিয়তার মাপকাঠি একেবারে ছুঁই ছুঁই করছে। জনমত জরিপে হিলারি ক্লিনটনকে প্রায় ছুঁয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প। এবিসি নিউজ/ওয়াশিংটন পোস্ট শনিবার যে জরিপ প্রকাশ করেছে তাতে হিলারি ও ট্রাম্পের জনপ্রিয়তার পার্থক্য শতকরা মাত্র এক পয়েন্টে। হিলারি ক্লিনটনকে সমর্থন করেছেন শতকরা ৪৬ ভাগ ভোটার। অন্যদিকে ট্রাম্পকে সমর্থন করেছেন শতকরা ৪৫ ভাগ ভোটার। এতটা তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে উঠেছে গত শুক্রবার গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই হিলারি ক্লিনটনের কিছু ই-মেইল নিয়ে তথ্য প্রকাশের পর। এফবিআইয়ের এ কর্মকান্ড নিয়ে অনেক প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
বলা হচ্ছে, সরকারি প্রতিষ্ঠান হয়ে নির্বাচন যখন একেবারে সমাগত তখন একজন প্রার্থীর সম্পর্কে এ ই-মেইল প্রকাশের মধ্যে অন্য কোনো উদ্দেশ্য থাকতে পারে। ডেমোক্রেটরা তো বলেই বসেছেন এফবিআই পরিচালক জেমস বি কমি আইন লঙ্ঘন করেছেন। সে যা-ই হোক, সর্বশেষ ৫টি জনপ্রিয় ও জাতীয় জরিপ ফল নিয়ে গড় ফল প্রকাশ করেছিল সিএনএন-এর পোল অব পোলস। তাতে দেখা যায়, হিলারি ক্লিনটনকে সমর্থন করেছেন শতকরা ৪৭ ভাগ ভোটার। ট্রাম্পকে শতকরা ৪২ ভাগ। ওদিকে এবিসি/ওয়াশিংটন পোস্ট জরিপ চালায়। তাতে দেখা যায়, প্রতি ১০ জন ভোটারের মধ্যে ৬ জনেরও বেশি মনে করেন, হিলারি ক্লিনটন বিষয়ক ই-মেইল প্রকাশ পাওয়া বা তা নিয়ে এফবিআইয়ের তদন্তে ভোটে কোনো প্রভাব ফেলবে না। তবে ১০ জনে তিন জন বলেছেন, এ ঘটনায় হিলারির দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিতে পারেন। ওদিকে ব্যাটলগ্রাউন্ড বা সুইং স্টেটগুলোতে নতুন জরিপ প্রকাশ পেয়েছে। নর্থ ক্যারোলাইনায় জরিপ চালিয়েছে এনবিসি/ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল/মারিস্ট ইউনিভার্সিটি। এতে হিলারিকে সমর্থন করেছেন শতকরা ৪৭ ভাগ ভোটার। ট্রাম্পকে শতকরা ৪১ ভাগ। অথচ নির্বাচনে চূড়ান্ত বিজয় পেতে হলে ট্রাম্পের জন্য এ রাজ্যে জয় আবশ্যক। অক্টোবরের শুরুতে একই জরিপে হিলারির অবস্থান ছিল শতকরা ৪৮ ভাগ। ট্রাম্পের শতকরা ৪৩ ভাগ। এনবিসি/ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল/মারিস্ট ইউনিভার্সিটি আরো জরিপ চালিয়েছে ফ্লোরিডায়। সেখানে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছেন হিলারি ও ট্রাম্প। হিলারির সমর্থন সেখানে শতকরা ৪৫ ভাগ। ট্রাম্পের শতকরা ৪৪ ভাগ। অক্টোবরের শুরুতে একই জরিপে হিলারির জনসমর্থন ছিল শতকরা ৪৬ ভাগ।
ট্রাম্পের শতকরা ৪৪ ভাগ। ফলে নতুন জরিপে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তায় উত্থান বা পতন না থাকলেও হিলারির জনপ্রিয়তা কমেছে শতকরা এক ভাগ। অন্যদিকে ফ্লোরিডায় নিউ ইয়র্ক টাইমস আপশট/সিয়েনা জরিপে দেখা গেছে, ডনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন করেছেন শতকরা ৪৬ ভাগ ভোটার। হিলারিকে শতকরা ৪২ ভাগ।
প্রসঙ্গিকতা হলো এই জরিপ কি সঠিকতা প্রকাশ করে নাকি জনগণের চোখে মাত্র অন্ধত্বের ছাপ ফেলে। কারণ মানুষ কাকে ভোট দেবে তা সর্বোচ্চ গোপনীয় রেখেই এগিয়ে যান। আর আমার দেখে জাতি হিসেবে আমেরীকানরাতো তাদের এই অধিকারের গোপনীয়তা সর্বোচ্চ সম্মান ও শক্তি দিয়ে রক্ষা করেন। যেখানে এই সামাজিক কালচার গড়ে উঠেছে এবং চলমান রয়েছে সেখানে জরিপের কি মাহাত্ম। আসলে এই আগাম কথাবার্তা একপ্রকার মিডিয়া ক্যু এর সামিল। জয়ি প্রার্থীকে হারিয়ে দেয়ার সামিল। কিংবা পরাজিত প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করার সামিল মাত্র। যাই হউক এবারের নির্বাচন এক ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিতে সজ্জিত। তাই আমি বিশ্বাস করি সকল জল্পনা ও কল্পনার অবসান ঘটিয়ে নতুন কোন বার্তা দেবে বিশ্ববাসিকে। সেই বার্তাই হতে পারে আগামীর জন্য শিক্ষানীয় বার্তা। আশা বিশ্ববাসীকে অপেক্ষা করতে হবে আরো কয়েকটি দিন এবং সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছার প্রতিফলন দেখার জন্য।
যেই আমেরীকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তাতে তাদের পররাষ্ট্রনীতি বা চলমান সরকারের ধারাবাহিকতার কোন ব্যত্যয় ঘটবে না। কারণ যেই আসুক না সে সেই উত্তরাধিকারীর পথই অনুসরণ করবে এটাই সত্য এবং অতীতের অভিজ্ঞতায় দৃশ্যমান জলন্ত উদাহরণ। তাই নিরবতা জেগে উঠা পর্যন্ত অপেক্ষা করে দেখি কিভাবে আগামী বিশ্বের নেতৃত্ব পরিচালিত হয়; শয়তানের তেলেসমাতির বাজিমাত অথবা সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছার বহি:প্রকাশ।