রাইসলাম॥ এ কেমন কথা যা শুনতে সম্পূর্ণই বেমান। যাক এই কথাগুলো পাগলে বা হিতাহিত জ্ঞানহীন মানুষের প্রলাপ হলেও মেনে নেয়া যায় না। কিন্তু আসলে এই কথাটি কোন মানুষের বলে মনে হয় না। তারপরও পরে দেখি কে এই মুখ্য এবং কি তার উদ্দেশ্য। ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদুর একটি বক্তব্য মঙ্গলবার প্রথম আলোর প্রথম পাতায় গুরুত্বের সাথে ছাপা হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে মায়াদু বলেছেন, বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে ব্রাসেলসে অনুষ্ঠেয় বাংলাদেশ-ইইউ যৌথ কমিশনের বৈঠকে আলোচনা হবে। ২০ ডিসেম্বর ব্রাসেলসে বাংলাদেশ-ইইউ যৌথ কমিশনের গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকার-বিষয়ক উপকমিটির বৈঠকের আলোচনায় বিষয়টি আসবে। গত সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে ডিকাব টক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন ইইউ রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে যেহেতু ইইউ যুক্ত ছিল, খুব সংগত কারণেই ব্রাসেলসের বৈঠকের আলোচ্যসূচির শীর্ষে থাকবে বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের প্রসঙ্গটি। বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচন ২০১৯ সালে হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে এ সময়টা খুব দূরে নয়। নির্বাচন নিয়ে জনগণের আস্থা ফেরাতে ইসি গুরুত্বপূর্ণ বলে মত দেন তিনি।
বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন ও জাতীয় নির্বাচন বিষয়ে মায়াদুর এই বক্তব্য খুবই ইঙ্গিতপূর্ণ। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একপক্ষীয় নির্বাচনে ইইউ তাদের পর্যবেক্ষক দল পাঠায়নি এবং নির্বাচনকে মেনেও নেয়নি। যদিও এরপর থেকে ক্ষমতাসীন সরকারের সাথে স্বাভাবিক সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছে। তবে বিভিন্ন সময়ে নিজেদের অপছন্দ মনোভাব প্রকাশ করতেও দ্বিধা করেনি। আগামী জাতীয় নির্বাচনের এখনো আড়াই বছর সময় বাকি। এত আগে পশ্চিমা একজন প্রভাবশালী কূটনীতিক কর্তৃক নির্বাচন কমিশন নিয়ে সিরিয়াস বক্তব্য দেয়া এবং নিরপেক্ষ কমিশন গঠনের তাগিদ বড় ধরনের কিছুর আভাস বলেই মনে হচ্ছে।
গত সেপ্টেম্বরে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রীর ঢাকা সফরের পরপরই ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে ‘আগাম নির্বাচনের তোড়জোড়’ সংক্রান্ত বক্তব্য দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ক’দিন পরে শেখ হাসিনা জানান যে, আগাম কোনো নির্বাচনের চিন্তা নেই তার সরকারের।
কেরির সফর পরবর্তী নির্বাচনী হইচই থেকে ধারণা করা যায় যে, ১৯ সালের নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তাদের কোনো ধরনের শক্তিশালী অবস্থান তুলে ধরেছিল। বিষয়টা জাতিসংঘের অধীনে ১৯ সালের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া সংক্রান্ত হতে পারে। তার জের ধরেই আগে আগে নির্বাচনের একটি সুযোগ নিতে চেয়েছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু শেষমেশ যে কোনো কারণেই হোক এমন চিন্তা থেকে সরে এসেছে দলটি। যদিও এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না যে, পুরোপুরি সরে এসেছে কিনা। এদিকে মায়াদুর বক্তব্য ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নও আগামী নির্বাচন নিয়ে সিরিয়াসলি ভাবছে। সেই সিরিয়াস ভাবনাটা কী- এটাই এখনকার মূল বিষয়। সেটা হয়তো জানতে সময় লাগবে। তবে নিশ্চিতভাবে ধারণা করা যায়, আমেরিকার অবস্থানের সাথে মিলিয়েই নিজেদের অবস্থান ঠিক করবে ইইউ।
ব্রাসেলসে বৈঠকের শীর্ষ ইস্যুতে বাংলাদেশে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়টি থাকার কথা থেকেই বুঝা যাচ্ছে পশ্চিমারা নতুন নির্বাচন কমিশনকে বর্তমান রকিব কমিশনের মতো আওয়ামী নতজানু দেখতে চায় না। আর এতে তারা সফল হলে মোটামুটি একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিকে এগোতে পারে বাংলাদেশ।
এই হল আহাম্মকের কথা। নির্বাচন হবে সম্পূর্ণ স্বাধীন একটি দেশের এবং এদেশের জনগণই এই নির্বাচন নিয়ে মাথা ঘামামে এবং তাদের পছন্দ-অপছন্দ নিয়ে মাতা-মাতি করবে। কিন্তু এই ক্ষেত্রে উড়ে এসে জোড়ে বসা বা মার চেয়ে মাসির দরদ বেশী প্রকৃতির লোকের অভাব হয় না। আমার সন্দেহ এসকল লোকদের জ্ঞান এবং ক্ষমতা নিয়ে। তাদের দৌঁড়-যাপ দেখেছি। তাদের শ্রীষ্টাচার বিবর্জিত কথাবার্থাও শুনেছি কিন্তু খালি কলসির আওয়াজ বেশি বলা ছাড়া আমার আর কিছু বলার নেই। কারণ তারা অথব্য। তাদের হয়তো জানা নেই যে সৃষ্টিকর্তা সীমা লঙ্গনকারীদেরকে পছন্দ করেন না। তারা আমাদের প্রভু নন এবং তাদের কথা অনুযায়ী আমরা বা আমাদের চলতে হবে তাও নয়। আমাদেরও মেরুদন্ড আছে, জ্ঞান-বুদ্ধি আছে তেমনি আছে সম্ভাবনাময় আপার স্বাধীনতা। যা প্রয়োগ করে এযাবত কাল পর্যন্ত এগিয়ে এসেছি এবং আগামীতেও সকল ষঢ়যন্ত্র নস্যাৎ করে এগিয়ে যাব। এই গত সাত বছরেরও কি জ্ঞানপাপীদল বুঝতে পারেনি এই ডিজিটাল ফরমেশনে তাদের কি করা উচিত। সদ্য শেষ হওয়া আমেরীকার নির্বাচন এবং শ্রদ্ধেয় বন্ধু ট্রাম্প থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী দিনে কুটনৈতিকগণ পথ চলবেন এবং সংযমী কথা বলবেন। সর্বোপরী বলতে চাই নিজের চরকায় তৈল দিন।