১৬ই ডিসেম্বর মানে বিজয় এবং এই বিজয় দিবস বা দিনটিকে কেন্দ্র করেই বাঙ্গালী এবং বাংলাদেশী আপামর জনসাধারণ প্রস্তুতি নেয় আনন্দ উপভোগ করতে। বিশেষ করে ডিসেম্বর মাস বিজয়ের মাস। এই পুরো মাসটি জুড়েই বাঙ্গালী আনন্দ উপভোগ করার বিভিন্ন কর্মকান্ড পরিচালিত করেন। বিজয়ের মাস আসলেই দেখা যায় শহীদ মিনার ধোয়া মোছার কাজ এমনকি নতুন ভেদি (শহীদ মিনার) তৈরীর কাজ। বিজয়ের পূর্বেই সকল কাজ সম্পন্ন করে বিজয় দিবস উদযাপন করা হয়। বিজয় দিবসের সাবজর্নীন এই আনন্দ উপভোগ করা হয় অজ-পাড়া গায়ের ভিখেরী থেকে শুরু করে রাজধানীর সর্বোচ্চ সম্মানী ব্যক্তিটি পর্যন্ত। এই সার্বজনীনতাই শরীক হতে কোন পরিচয়ের প্রয়োজন ছিল না অতীতে কিন্তু বর্তমানে পরিচয়ের প্রয়োজনীয়তা উপলব্দি করতেছি।
এই বিজয়ের আনন্দে শরীক হওয়া থেকে বঞ্চিত করতে হবে স্বাধীনতা বিরোধী চক্রকে। যারা এই স্বাধীনতা বিরোধীদের সঙ্গে ক্ষমতার লোভে হাত মিলিয়েছে তাদেরকেও এই বিজয়োল্লাস থেকে বঞ্চিত করে বোঝাতে হবে আগামী বিজয়োল্লাস করার জন্য তাদেরকে কি কি অভ্যাস বা যোগসূত্রগুলো পরিত্যাগ করতে হবে। স্বাধীনতা বিরোধী চক্র আজও আমাদের সার্বজনীন বিজয়ের স্বাদ এবং আনন্দকে ম্লান করতে মরিয়া। বর্তমান সরকারের বিচক্ষনতার কারণে বর্তমানে যদিও তারা কোণঠাসা কিন্তু তাদের চক্রান্ত এখনও থামেনি। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির প্রয়োজন আরো ঐক্যবদ্ধভাবে স্বাধীনতা এবং এই বর্তমান উন্নয়ন বিরোধীদের এই দেশ থেকে চিরতরে বিতারিত করা। এতে যদি কারো আপনজনও তালিকায় পড়ে তাহলেও বৃহৎ স্বার্থে এই ত্যাগ স্বিকারে প্রস্তুত হউন।
বিজয় দিবসে একটি বিষয় আমাদের পরিস্কার হওয়া উচিত, মাঝে মাঝে বিজয় দিবসকে ঘিরে বিভিন্ন বাহিনী বা সংস্থা কেন্দ্রিক প্রচারণার মহোৎসব লক্ষনীয়। স্পষ্ট করে বলতে চাই বিজয় দিবস সার্বজনীন। ধর্ম, বর্ণ, গোত্রের সার্বজনীন প্রায়াসেই অর্জিত হয়েছিল ১৬ই ডিসেম্বরের বিজয়। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে তাঁর মহা পরিকল্পনা অনুযায়ী অগ্রসরতার ফলই আজকের আমাদের এই বিজয়। এখানে শুধু তালিকায় উল্লেখিত মুক্তিযোদ্ধারাই যে অবদান রেখেছিলেন তা নয় বরং যার যার অবস্থান থেকে সকলেরই সম্মিলিত প্রয়াসের ফল এই বিজয়। কেউ বা ইমাম/ মোয়াজ্জিন সেজে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগীতা করেছিলেন আবার কেউবা নৌকা দিয়ে বিভিন্ন কৌশলের মাধ্যমে মুক্তযোদ্ধাদের প্রাণ বাঁচিয়ে সহযোগিতা করেছিলেন যুদ্ধের সফলতায় পৌঁছতে। আবার কেউবা আশ্রয় দিয়ে, খাবার দিয়ে, খবর দিয়ে এমনকি নানাবিধ উপায়ে বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছতে সহযোগীতা করেছিলেন। সাংবাদিকতার, গানের, অর্থের যোগানসহ বিভিন্ন উপায়ে আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ, পরামর্শ, সহযোগীতা, উৎসাহ ও উদ্বিপনার মাধ্যমে এই সফলতায় পৌঁছতে সহায়তাকারীরাও মুক্তিযোদ্ধা কিন্তু কেউ কেউ বর্তমান তালিকায় নেই বা যুক্ত হতে আগ্রহী নন। কিন্তু সেই সকল লোকজন হয়তো মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট নেয় নি কিন্তু তাদের অবদানতো বিজয়ের দ্বাড়প্রান্তে পৌঁছার ক্ষেত্রে অনস্বীকার্য।
বিজয়ের সফলতার অংশীদ্বার এই দেশবাসী। দেশবাসীর সঙ্গে যুক্ত করতে হবে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি। তাই স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির প্রকৃত পরিচায়কগণই এই বিজয়ের সার্বজনীন আনন্দ উপভোগ করবে। এখানো থাকবেনা কোন মানুষের/ বাহিনীর/ সংস্থার এমনকি বংশ ও গোত্রের একক অধিপত্য বা কৃতিত্ব। সার্বজনীনভাবে সকলেই যারা প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি (ক্ষমতার লোভে লোভহীন) তারাই উপভোগ করবে এবং বিশ্ববাসিকে এর সঙ্গে সড়িক হয়ে এই মহৎ উৎযাপনের মহাত্ব এবং এর প্রকৃত ইতিহাস জানাতে সক্রিয় থেকে জাতী থেকে জাতী পরম্পরায় এগিয়ে নিয়ে যাবে এই ঐতিহ্যবাহি শান্তির সোনার বাংলা খ্যাত বাংলাদেশকে।
লক্ষনীয় বিষয় এই যে, বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা ঠিক তেমনি আমাদের মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর পিতাও বটে। কিন্তু তিনি বা তাঁর উত্তরাধিকারিরা একটি বারের জন্যও বঙ্গবন্ধুর মালিকানার দাবি করেননি। বরং তাদের মাধ্যমেই জাতি শরীক হয়েছে বঙ্গবন্ধুর পরিবারে। বঙ্গবন্ধু সাবজনীন এবং তিনি সমগ্র দেশের নেতা; বাংগালীর অধিসংবাদিত নেতা। বিশ্বনেতা আমাদের বঙ্গবন্ধু যিনি আমাদের জাতির জনক। ঠিক তেমন তাঁরই উত্তরসূরী তনয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বাংলাদেশের গন্ডি পেরিয়ে বিশ্ব নেতায় পরিণত হয়েছেন। এই বঙ্গবন্ধু বা শেখ হাসিনার মালিকানা যেমন কোন একক ব্যক্তি বা পরিবারের নয় বরং সার্বজনীন বিশ্ব পরিমন্ডলে সকলের। তেমনি আমাদের বিজয়ের আনন্দ সার্বজনীন এবং কৃতিত্ব সকলের। তাই দাম্বিকতা ও গর্ভের এবং একক কৃতিত্বের মহোৎসব থেকে বের হয়ে এসে সার্বজনীন স্বাধীনতার পক্ষের প্রকৃত বাংলাদেশী এবং বাঙ্গালীদের যুক্ত করে আগামীর বাংলাদেশকে উন্নয়নের সর্বোচ্চ শীখরে পৌঁছাতে প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করুন।