তানভির আহমেদ॥ গরিব পরিবারের একটি ছেলের সাথে একই গ্রামের একটি গরিব মেয়ের বিয়ে হয়। ছেলেটার বয়স ২১ বছরের মত, আর মেয়েটার বয়স ১৬ বছর। বিয়ের পর ছেলেটা মেয়েটিকে বললেন, তোমার কি কোন ইচ্ছে আছে? মেয়েটা বলল, আমার ইন্জিনিয়ার হওয়ার বড় আশা ছিল! এরপর ছেলেটা মেয়টাকে নিয়ে ঢাকায় চলে আসে। মেয়েটিকে ভার্সিটিতে ভর্তি করায়ে লেখাপড়া করায়। ছেলেটা ভোর ৪ টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত পরিশ্রম করে। মেয়েটার লেখাপড়ার খরচ আর সংসার খরচ চালানোর জন্য।
বিয়ের অনেকদিন পার হওয়ার পরও তাদের মধ্যে কোন স্বামী স্ত্রীর শারীরিক সম্পর্ক হয় নি! মেয়েটার বন্ধু বান্ধব প্রশ্ন করে ছেলেটা কে? মেয়েটা উত্তর দেয়, সে আমার ভাই! ছেলেটা কখনো রিক্সা চালায়, কখনো দিন মজুরি করে, কখনো ইট ভাটায় কাজ করে, আবার কখনো কুলির কাজ করে। এভাবে মেয়েটার জন্য, নিজের কথা না ভেবে তা তার জন্য টাকা রোজগার করে শুধু মেয়েটাকে ইন্জিনিয়ার বানানো জন্য!
হঠাৎ পরীক্ষা চলে আসলো! মেয়েটার ও ছেলেটার কারও চোখে ঘুম নাই। ছেলেটা রাত দিন মিলে ২০ ঘন্টা কাজকর্ম করে। বাকি ৪ ঘন্টা সংসারের সব কাজ রান্না থেকে শুরু করে সব কাজ করে। এভাবে মেয়েটার পরীক্ষা শেষ হয়ে গেল! এরপর ছেলেটা একটু কাজ কমায়। পরীক্ষার ফলাফল মেয়েটা পাশ করলো! ভাল জায়গায় চাকরি পেল, অনেক টাকা পয়সার মালিক হলো। বড় বাড়ি, গাড়ি আর অনেক কিছু হলো। মেয়েটার জন্য বিভিন্ন জায়গায় থেকে বিয়ের প্রস্তাব আসতে থাকলো। কেউ জানে না, তার বিয়ে হয়েছে কিনা বা তার স্বামী কে?
মেয়েটা তার বড় বাড়ি লাইটিং করে, বড় পার্টি দিয়েছে। কিন্তু কেউ জানে না কি জন্য এ পার্টির অয়োজন। সবার একই প্রশ্ন এ কিসের পার্টি। সবাই মিলে মেয়েটিকে প্রশ্ন করলো এ পার্টি কি জন্য বলবেন? মেয়েটি বলল ১২ টার সময় সবার সামনে বলবো কিসের পার্টি! ছেলেটা সেই লুঙ্গি গামছা আর ছেড়া একটা জামা গায়ে বাড়ির এক কোনায় দাড়িয়ে আছে! ১২ টা বেজে গেলো, এরপর মেয়েটা ছেলেটার হাত ধরে যেখানে কেক রাখা আছে সেখানে নিয়ে এল! সেখানে নিয়ে এসে সবাইকে বললেনঃ- ভদ্র পুরুষ ও মহিলাগন, একে কেউ চিনেন? যার মাথার গাম পায়ে ফেলে, নিজে খেয়ে না খেয়ে আমাকে লেখাপড়া করিয়েছে। তার জীবনের সব সুখ আমার জন্য বিসর্জন দিয়েছে। এই আমার স্বামী যার সাথে বিয়ের পর থেকে এখন পর্যন্ত আমাদের কোন শারীরিক সম্পর্ক হয় নি! তাকে এই কাপড়ে রেখেছি, যাতে আপনারা তাকে চিনতে পারেন। এই বাড়ি, গাড়ি, টাকা, তার গায়ের এক ফোটা ঘামের দামও না! আমি তার স্ত্রী, আমার যা কিছু আছে তার ১০০ গুন দিলেও আমি আমার স্বামীকে ছেড়ে কোথাও যাবো না। এটাই স্বামী স্ত্রীর ভালবাসা।