শাহাদাৎ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি॥ ভারপ্রাপ্ত উপজেলা কমান্ডার হাজী মো: আবু ছায়েদ সাংবাদিক সম্মেলনের শুরুতেই মুক্তিযুদ্ধ এবং এর ইতিহাস ও মুক্তিযোদ্ধাদের করণীয় এবং বরখাস্তকৃত কমান্ডারের সাংবাদিক সম্মেলনের বিষয়বস্তুর মিথ্যা প্রমান করেন। তিনি সকল সাংবাদিকদেরকে এক কপি লিখিত বক্তব্য দিয়ে সাথে অনাস্থা প্রস্তাবের অভিযোগসমূহও উপস্থাপন করেন। তিনি ও তাঁর সহযোগীদ্বয় ১৩/১২/১৬ তারিখের সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থাপিত বক্তব্যের তিব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেন এবং এর তীব্র প্রতিবাদ জানান। তিনি তাঁর দীর্ঘ বক্তৃতায় সমস্ত মিথ্যা অভিযোগের প্রমানসহ বক্তব্য উপস্থাপন করেন এবং বরখাস্তকৃত কমান্ডারের বিরুদ্ধে প্রমানীত অভিযোগগুলো পুনরায় উপস্থাপীত করেন।
১। মরহুম এ কে এম ইকবাল, পিতা আঃ সামাদ, গ্রাম ও ডাকঘর- মূলগ্রাম, উপজেলা কসবার স্থলে তাঁর স্ত্রীর নাম প্রতিস্থাপনের বিষয় আটক রাখা।
২। মরহুম মোঃ রুসন মিয়া, পিতাঃ বাদশা মিয়া, গ্রাম ও ডাকঘর- সৈয়দাবাদ এর স্থলে তাঁর স্ত্রীর নাম প্রতিস্থাপনের বিষয় আটক রাখা। এসব কাজে টাকা ছাড়া আপনি কোন কাজ করেন না।
৩। অমুক্তিযোদ্ধ সামসু মিয়ার সন্তানকে গ্রাম- নোয়াগাঁও, ডাকঘর- পানিয়ারূপ, উপজেলা-কসবা, জেলা- ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ৫০০/- টাকার বিনিময়ে প্রত্যায়নপত্র দেয়া। যার নাম কোন তালিকায় নেই। তার শুধু সার্টিফিকেট আছে কিন্তু সে ভূয়া।
৪। ২/৯/১৫ তারিখের মন্ত্রণালয়ের ৩৪০ নং স্মারকে বর্ণিত ১ ও ২ নং ক্রমিকে বর্ণিতদের আবেদন করা স্বত্ত্বেও তাঁদের ভাতা আটক রাখা।
৫। বাদৈর ইউনিয়ন কমান্ডের আহবায়ক মোঃ জাহাঙ্গীর আলমকে অবৈধভাবে বাদ দেয়া ও বিধি বহির্ভূর্তভাবে মোঃ মহসিনকে আহবায়ক করা এবং এ ব্যাপারে জেলা কমান্ডারের নির্দেশ অমান্য করা।
৬। ২৭টি বাড়ি যাদের নামে বরাদ্দ করা হয়েছে তাঁদের কিছু সংখ্যকের কাছ থেকে ২৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত উৎকোচ নেয়া।
৭। ১১টি সোলার প্যানেল বরাদ্দের ব্যাপারে প্রত্যেকের কাছ থেকে ৬ হাজার টাকা করে নেয়া এবং স্থাপনের খরচ বাবদ সরকারী বরাদ্দ ৬৬ হাজার টাকাও তিনি তাদেরকে না দিয়ে তাদের স্বাক্ষর গ্রহণ করা।
৮। আপনি গতবারও অনুদান গ্রহণ করেছেন এবারও আপনি অনুদান গ্রহণ করেছেন কিন্তু যাদের প্রয়োজন তাদেরকে দেয়া হয়নি। যাঁদেরকে অনুদান দেয়া হয়েছে তাঁদের কাছ থেকে ফরমের জন্যে কারো কারো কাছ থেকে ৫০/- টাকা ও কারো কারো কাছ থেকে ১০০/- উৎকোচ গ্রহণ করা।
৯। যাচাই-বাছাই এর কথা বলে আপনি অমুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়েছেন।
১০। উপজেলা কমান্ডের ৭২ (বাহাত্তর) টি ৬ ফুট সরকারী ঢেউটিন যা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে রাখা হয়েছে তা অবৈধভাবে বিক্রি করে আত্মসাৎ করেন।
১১। গঠনতন্ত্র মোতাবেক নিয়মিতভাবে যৌথসভা না করা, কোন কার্যবিরণী না লেখা এবং সংশ্লিষ্টদের বিতরণ না করা।
এই অভিযোগের ভিত্তিতেই কমান্ডার সাহেব হারিয়েছেন তাঁর সম্মান এবং পদ। তিনি উপযুক্ত সময়ে কোন জায়গায় উপযুক্ত কথা বলতে ব্যার্থ হয়েই শুন্য হাতে ফিরেছেন। সমাধান কল্পে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কমান্ডারের অফিস এমনকি মন্ত্রীমহোদয়ের অফিসে পর্যন্ত অপারগতার ছাপ রেখে অর্জিত সম্মান এবং অর্পিত দায়িত্ব কোনটিই রক্ষা করতে পারেননি কিন্তু সংবাদ সম্মেলনের মিথ্যার ঝুড়ি আওড়িয়েছেন কিন্তু কি লাভ যার উত্তর আবার সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমেই দিয়েছেন। সর্বোপরি একজন মুক্তিযোদ্ধা যত ভুলই করুন না কেন তার ক্ষমা আছে এবং সম্মান পুনরুদ্ধার করা আমাদের সকলেরই দায়িত্ব। বঙ্গবন্ধু তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে আমাদেরকে শিখিয়েছেনও তাই। আসুন আমরা আমাদের ভাইকে ক্ষমা করে শুধরিয়ে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করি এবং শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালি করি।