আলাউদ্দিন তরফদার॥ ফেনীর এক সময়ের বহুল আলোচিত সাবেক সংসদ সদস্য জয়নাল হাজারী একটি ভিডিও বার্তায় বলেছেন, একরামকে খুনের আগে আমাকে খুন করার সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু আলাউদ্দিন নাসিম বলেছিল থাক এটা বুড়ো হয়ে গেছে এমনিতেই মারা যাবে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় একথা বলেন, ফেনীর আলোচিত সাবেক সংসদ সদস্য জয়নাল হাজারী। ফেনীতে একসময় অনেক প্রতাপ থাকলেও এখন তিনি নিরবেই থাকেন রাজধানীতে। তার হাতে গড়া কর্মীদের অনেকেই এখন তার সাথে নেই। এমনকি তার নিজস্ব কর্মীদের অনেকেই হাত মিলিয়েছেন বিরোধীপক্ষের সাথে।
এ বিষয়ে তিনি ভিডিও বার্তায় বলেন, ফেনীতে আমাকে প্রতিরোধের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। তাতে কিছু যায় আসে না। কিন্তু তারা ফেনীর লক্ষ লক্ষ মানুষকে জিম্মি করে ফেলেছে। ফেনী মুক্ত দিবসে শপথ নিতে হবে ফেনী মুক্ত নয়, দেশ মুক্ত নয়, ফেনীর মানুষকে মুক্ত করতে হবে। ৭১ বছর বয়সে এই মুক্তিযোদ্ধা যদি মরেও যায় তাতে কিছু যায় আসে না। তিনি বলেন, আলাউদ্দিন নাসিম টুঙ্গিপাড়ায় বলেছে, ফেনীর রাজনীতিতে নাক গলাবে না। ২০০৫ সালেও সে আমাকে তাই বলেছিল। কিন্তু এখন তিনি আরো বেশি নাক গলাচ্ছেন।
জয়নাল হাজারী বলেন, স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবস এই দুটি দিবস জাতীয়ভাবে পালনের জন্য প্রশাসনকে বলা হয়। সেখানে জেলার মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেয়া হয়। কিন্তু জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবার ফেনী মুক্ত দিবসের আয়োজন করা হলো। মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনার আয়োজন করা হলেও মুক্তিযোদ্ধাদের স্বরণে যে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে সেখানে কেউ একটি ফুলও দেয়নি। এ থেকেই বুঝা যায় এবার প্রশাসন কোনো একটি বিশেষ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্যই ফেনী মুক্ত দিবস পালন করেছে।
হাজারী বলেন, ৫০জন মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা দেবার উদ্যোগ নেয়া হয় যা প্রশংসার দাবি রাখে। সেখানে আমার নামও ছিল। কিন্তু ক্রেস্ট দেয়ার সময় সবার নাম উচ্চারণ করা হলেও আমার নাম উচ্চারিত হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের একটি অনুষ্ঠানকে কিভাবে দলীয় করণ ও ন্যাক্কারজনকভাবে করা হয়েছে। হাজারী আরো বলেন, অনুষ্ঠানে জাফর ইমামকে প্রধান অতিথি করা হয়েছে। একজন খেতাপপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাকে প্রধান অতিথি করা যেতেই পারে। আর জেলার সব সাংসদকে অতিথি করা হলেও রহিমকে করা হয়নি। এই অনিয়ম করা হলো কেন?
তিনি বলেন, অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় প্রধান অতিথি করা হয়েছে আলাউদ্দিন নাসিমকে। এখানেই আমার প্রশ্ন। আলাউদ্দিন নাসিম কে? তিনি কোনো জাতীয় পর্যায়ের নেতা বা উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি না। কিন্তু কেন প্রশাসন তাকে দ্বিতীয় অতিথি করেছে। সাংসদ নিজাম হাজারীর হাইকোর্টের রায় প্রসঙ্গে জয়নাল হাজারী বলেন, তার বিষয়ে রায় দ্বিধাবিভক্ত হবে তা আগেই বলেছিলাম। এখন এখানে হিসাব মিলাতে হয় যে, এই রায়ের ফলে নিজাম হাজারী ও সাখাওয়াতের জয় হয়েছে। এখানে স্পষ্ট করে বলতে চাই সাখাওয়াত উপকৃত হয়েছে।
তিনি বলেন, হাইকোর্ট বেঞ্চের সিনিয়র বিচারপতি নিজাম হাজারীর সংসদ সদস্য পদ না থাকার পক্ষে রায় দিয়েছেন। কিন্তু জুনিয়র বিচারপতি তাতে দ্বিমত পোষণ করেছেন। এখন আপিল করার পর যে বেঞ্চ শুনানি হবে সেখানে সাধারণত সিনিয়র বিচারপতির আদেশকে মূল্যায়ন করে থাকে। এটি নিজামির জন্য মোটেও সুখকর খবর নয়।