ড. লুৎফর রহমান॥ হৃদপিন্ডে সাধারণত ৪টি ভাল্ব থাকে ২টি উপরের চেম্বারে এবং ২টি নিচের চেম্বারে। হৃদপিন্ডের ভাল্ব এর সমস্যা অনেক কারনেই হতে পারে যেমন, জন্মগত ত্রুটি, , Rheumatic Fever বা বাতজ্বর, করোনারি আর্টারি ডিজিজ বা হৃদযন্ত্রের রক্তনালীতে ব্লক, বার্ধক্য জনিত জটিলতা ইত্যাদি। জম্নগত ত্রুটি এর মধ্যে রয়েছে ভাল্ব সরু হওয়া, ছিদ্র থাকা ইত্যাদি। তবে ভয়ের কিছু নাই কেননা জন্মগত ভাল্ব এর ত্রুটি শতভাগ সফলতার সাথে চিকিৎসা করা হয় আমাদের দেশে। জন্মগত ত্রুটির কারনে ভাল্ব সরু হলে বেলুনিং করে এবং ছিদ্র থাকলে তা রিপেয়ারের মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়। জন্মগত ভাল্ব এর সমস্যায় ভাল্ব প্রতিস্থাপন এর কোন সুযোগ নেই কারন ভাল্ব প্রতিস্থাপন শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে করা যায় । Rheumatic Fever বা বাতজ্বর ভাল্ব এর সমস্যার অন্যতম কারন এবং এতে ভাল্ব এর সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়, যেমন ভাল্ব সরু বা মোটা হতে পারে, একই সাথে সরু ও মোটা হতে পারে, ছিদ্র হতে পারে ইত্যাদি। বাতজ্বর জনিত কারনে ভাল্ব এর সমস্যা হলে ভাল্ব প্রতিস্থাপন করা ছাড়া অন্যকোন চিকিৎসায় ভালো ফল পাওয়া যায়না। উন্নত স্বাস্থ্যব্যবস্থা, উন্নত চিকিৎসা, আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও সচেতনতার কারনে বাতজ্বর এখন তেমন দেখা যায়না। করোনারি আর্টারি ডিজিজ বা হৃদযন্ত্রের রক্তনালীতে ব্লকের কারনে অনেক সময় হার্ট অ্যাটাক হলে ভাল্বেরও ক্ষতি হয়। এইসব রোগীদের বাইপাস সার্জারির সময় আমরা ভাল্ব রিপেয়ার বা রিপ্লেস করে দেই। ভাল্ব রিপ্লেস বা প্রতিস্থাপনের জন্য সাধারণত দুই ধরনের ভাল্ব ব্যাবহার করা হয় একটি হল যান্ত্রিক ভাল্ব এবং অপরটি হল টিস্যু ভাল্ব। যান্ত্রিক ভাল্ব প্রতিস্থাপিত রোগীদের দীর্ঘ সময় রক্ত তরল এর ওষুধ সেবন করতে হয় তবে টিস্যু ভাল্ব প্রতিস্থাপিত করলে ৩-৬ মাসের বেশি রক্ত তরল এর ওষুধ সেবন করার প্রয়োজন হয়না। ৬০ বছরের নিচে যাদের বয়স তাদের জন্য যান্ত্রিক ভাল্ব ভালো আর যাদের বয়স ৬০ এর উপরে তাদের জন্য টিস্যু ভাল্ব উত্তম। যাদের করোনারি আর্টারি ডিজিজ আছে তাদের ক্ষেত্রে টিস্যু ভাল্ব এর কোন বিকল্প নাই। ভাল্ব এর সমস্যার লক্ষনের মধ্যে রয়েছে বুক ধড়পড় করা, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি। Color Doppler Echocardiography করে বোঝা যায় হার্টের ভাল্বে কোন সমস্যা আছে কিনা।
Share on Facebook
Follow on Facebook
Add to Google+
Connect on Linked in
Subscribe by Email
Print This Post