আফসানা হক অরীন॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাকালে অতিরিক্ত ১২.৯ মিলিয়ন লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টির পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে উন্নত দেশের মর্যাদায় উন্নীত করতে হলে যে খাতগুলোর ওপর অত্যাধিক গুরুত্ব দিতে হবে তা সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’ গত বুধবার সংসদে নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে স্বতন্ত্র সদস্য রুস্তম আলী ফরাজীর এক প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা সময়ে বার্ষিক গড়ে প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭.৪ শতাংশ হারে। চরম দারিদ্র্যের হার ২০১৫ সালের মধ্যে ১২.৯ শতাংশ থেকে ২০২০ সাল নাগাদ ৮.৯ শতাংশ হারে কমিয়ে আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে মাথা গুণতি দারিদ্র্যের হার ২০১৫ সালের ২৪.৮ শতাংশ থেকে ২০১৯-২০ সাল নাগাদ ১৮.৬ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিল্পখাতের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ২০১৬ সালের ১০.১০ শতাংশ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ১১.৯ শতাংশে উন্নীত করা, রফতানি ২০১৬ সালের ৩৪.৮ বিলিয়ন ডলার থেকে ২০২০ সালে ৫৪.১ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০১৬ সালের ৩২ বিলিয়ন থেকে ২০২০ সালের ৪৯.৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। একই সময়ে আমদানি ৫৪.৪ বিলিয়ন ডলার থেকে ৭২.৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ২০২০ সালের মধ্যে ২৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা অর্জন এবং ওই সময়ের মধ্যে বিদ্যুতায়নের বিস্ততি ৯৬ শতাংশে উন্নীত করা হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য ১শ’টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। সম্প্রতি এর ১০টি অঞ্চল বাস্তবায়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়েছে। এছাড়া ১০টি অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প ফার্স্টট্রেকভুক্ত করা হয়েছে। যেমন- পদ্মা সেতু নির্মাণ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রামপাল কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ, গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ, ঢাকা মাস র্যাপিড ট্রানজিট, এলএনজি ফ্লটিং, স্টোরেজ এন্ড রেগ্যাসিফিকেশন ইউনিট নির্মাণ, মাতারবাড়ি ১ হাজার ২শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর স্থাপন, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ এবং চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেল লাইন স্থাপন প্রকল্প।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আওতায় ২০১৫-১৬ অর্থবছরের অর্থমূল্যে মোট বিনিয়োগ প্রাক্কলন করা হয়েছে ৩১.৯ ট্রিলিয়ন টাকা। গণখাতে বিনিয়োগ প্রাক্কলন করা হয়েছে ৭.২৫ ট্রিলিয়ন টাকা, যা মোট বিনিয়োগের ২২.৭ শতাংশ। মোট বিনিয়োগের প্রায় ৭৭.৩ শতাংশ ব্যক্তি খাত থেকে এবং যার অধিকাংশই অভ্যন্তরীণ ব্যক্তিখাত থেকে অর্থায়ন হওয়ার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। অপরদিকে বৈদেশিক উৎস থেকে অর্থায়ন প্রাক্কলন করা হয়েছে ৩.০৫ ট্রিলিয়ন টাকা, যা মোট বিনিয়োগের ৯.৬ শতাংশ। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ২৮.৮ ট্রিলিয়ন টাকা (মোট বিনিয়োগের ৯০.৪ শতাংশ) অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহের মাধ্যমে সংগ্রহের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। পরিকল্পনায় ২০২০ সাল নাগাদ রাজস্ব ও জিডিপি’র অনুপাত ১০.৮ শতাংশ থেকে ১৬.১ শতাংশে উন্নীত করার প্রক্ষেপণ করা হয়েছে। বাসস