আন্তর্জঅতিক ডেক্স : টিপিপি থেকে বেরিয়ে গেল যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিপিপি) বাণিজ্য চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। এর আগে ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন হোয়াইট হাউসের প্রথম দিনে তিনি ওই চুক্তি বাতিল করবেন। টিপিপি চুক্তি স্বাক্ষরের সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন বারাক ওবামা। তবে তিনি চুক্তিতে স্বাক্ষর করলেও কংগ্রেসে সেটি অনুমোদন করা হয়নি। ফলে খুব দ্রুত এ চুক্তি থেকে বেরিয়ে যেতে পারলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
সোমবার ওই চুক্তি বাতিলের নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষরের পর বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা ও কর্মীদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন ট্রাম্প। এ ছাড়া তিনি ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করেন। যুক্তরাষ্ট্রসহ এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ১২টি দেশ বহুল বিতর্কিত টিপিপি চুক্তি স্বাক্ষর করে। চুক্তিতে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিনা শুল্ক সুবিধার কথা উল্লেখ রয়েছে। দীর্ঘ আলোচনার পর ২০১৫ সালে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। তবে তা অনুসমর্থন করা হয়নি। চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী অন্য দেশগুলো হল অস্ট্রেলিয়া, জাপান, ব্রুনাই, কানাডা, চিলি, মালয়েশিয়া, মেক্সিকো, নিউজিল্যান্ড, পেরু, সিঙ্গাপুর ও ভিয়েতনাম।
দেশগুলো বর্তমান বিশ্ব বাণিজ্যের ৪০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। টিপিপি চুক্তির লক্ষ্য অর্থনৈতিক বন্ধন সুদঢ় করা এবং প্রবৃদ্ধি সমৃদ্ধ করা। যদিও টিপিপির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে বড় ধরনের বিরোধিতা রয়েছে। এই চুক্তির যারা বিরোধিতা করেন তাদের মতে, এই চুক্তি থেকে বহুজাতিক বড় বড় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানই লাভবান হবে। এতে বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের কর্পোরেট কোম্পানিগুলোর ব্যবসা ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত হবে। তারা আরও বলেন, এ চুক্তিটির সমঝোতা চালানো হয়েছে গোপনে। এটা করা হয়েছে বড় বড় কর্পোরেশনের পক্ষে।
টিপিপি চুক্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অস্বস্তি ছিল বাংলাদেশের। তৈরি পোশাকের বাজার হারানোর শঙ্কায় ২০১৫ সালে ওয়াশিংটনে টিকফা বৈঠকে এ ব্যাপারে উদ্বেগ জানায় বাংলাদেশ। কারণ এই চুক্তি অনুযায়ী, ভিয়েতনাম যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বিনা শুল্কে তৈরি পোশাক রফতানি করতে পারবে। সেখানে বাংলাদেশকে একই পণ্যের জন্য প্রায় ১৬ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের টিপিপি বাতিলের ঘোষণায় লাভবান হবে বাংলাদেশ।