ইসরাত জাহান লাকী॥ কৃমি একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা। সাধারণত শিশুদের এই সমস্যা বেশি দেখা দেয় তবে বড়দেরও হতে পারে। আর ছোটদের কৃমির জন্য বড়রাই অনেকাংশে দায়ী। কৃমি এক ধরণের পরজীবি যা অন্ত্রে বাস করে। কিছু কৃমি খাবারের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে। আবার কিছু লার্ভা হিসেবে ত্বকের মাধ্যমে প্রবেশ করে। কৃমি অনেক সময়ে মানুষের যকৃত এবং অন্য অঙ্গেও আক্রমণ করতে পারে। কৃমি নানা রকমের হয়ে থাকে। কুচো কৃমির পাশাপাশি ২-৩ ইঞ্চি লম্বা কৃমিও হয়। এছাড়াও কোনও কোনও কৃমি ২-৩ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
কৃমির জীবাণু মূলত ছড়ায় দূষিত খাবার এবং জলের মাধ্যমে। কৃমিতে আক্রান্ত ব্যক্তি বা পশুর মলের মাধ্যমেও সংক্রমণ হতে পারে। মাটি থেকে শরীরের চামড়ার মাধ্যমে সরাসরি শরীরে প্রবেশ করে। কৃমি শরীরের নানা রকম মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। পুষ্টিহীনতা ও তার থেকে শরীরে রক্তশূণ্যতা কৃমিতে আক্রমণের খুব স্বাভাবিক লক্ষণ। এর ফলে বাচ্চাদের শরীরের বৃদ্ধি কমে যায়, পেট ফুলে যায়। অনেক সময়ে তীব্র পেট ব্যথা অনুভব করে। অনেক ক্ষেত্রে ফিতা কৃমি শরীরের ভিতরে অন্যান্য নাড়ির সঙ্গে জড়িয়ে যাওয়ার ভয় থাকে।
কৃমি নিয়ে তাই অভিভাবকদের সচেতনতা একান্ত জরুরি। প্রতি ৬ মাস অন্তর শিশুদের কৃমি-নাশক ওষুধ খাওয়ানো উচিত। এবং সেটা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে। কারণ, কৃমির ওষুধের ক্ষেত্রে একটি কোর্স পূর্ণ করতে হয়। মনে রাখা দরকার, যে শিশুর কৃমির চিকিৎসা করা হচ্ছে তার পরিবারের সকলেরই কৃমির ওষুধ খাওয়া উচিত নিয়ম মেনে। বিশেষ করে বাবা-মায়ের তা না হলে শিশুর চিকিৎসা সম্পূর্ণ হয় না। বড়িতে কোনও গৃহপালিত পশু থাকলে তাকেও ওষুধ খাওয়ানো দরকার।
চিকিৎসকদের বক্তব্য, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শিশুকে ওষুধ খাওয়ালেও বাড়ির বাকি সদস্যরা তা এড়িয়ে যান। আর নিজের শিশুর ক্ষতি করেন। কৃমি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আরও দু’টি বিষয়ে নজর রাখা উচিত। এক, প্রতিবার খাওয়ার শেষে ভাল করে হাত ধোওয়া। এবং দুই, খালি পায়ে মাঠে বা রাস্তায় না হাঁটা।