টিআইএন॥ বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জ্বালানী চাহিদা মোকাবেলায় ইন্দোনেশিয়া তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহের প্রস্তাব দিয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত আইবান বিরানতানা আতমাজা জাতীয় সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎকালে এই প্রস্তাব দেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
বৈঠকে ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী এবং বলিষ্ঠ নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক খাতে বিস্ময়কর সাফল্য অর্জন করেছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ৭ শতাংশেরও বেশি হারে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন বাংলাদেশের উন্নয়ন জোরদারেরই লক্ষণ।
তিনি বলেন, ৭ শতাংশের বেশি হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করায় জাতিসংঘ ঘোষণা অনুযায়ী বাংলাদেশ এখন আর স্বল্পোন্নত দেশ নয়। বাংলাদেশী বিভিন্ন পণ্যের মানের প্রশংসা করে রাষ্ট্রদূত বলেন, এগুলো খুবই উচ্চমানের এবং এসব পণ্য যেকোন দেশের পণ্যের সাথে প্রতিযোগিতা করার সামর্থ্য রাখে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশ উভয়েরই শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ বাজার রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিপুল উন্নয়ন কর্মকান্ড দেখে এ দেশ সম্পর্কে তার প্রাথমিক ধারণা বদলে গেছে। ইন্দোনেশিয়ার দূত ঢাকায় তার মেয়াদকালে দায়িত্ব পালনে সহযোগিতার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ব্যাপক সাফল্যের উল্লেখ করে বলেন, তাঁর সরকার দ্রুতগতিতে দেশের উন্নয়নে গত ৮ বছরে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, তাঁর ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদের ইতোপূর্বেকার সরকার জনগণের কল্যাণে অনেকগুলো ভাল পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘কিন্তু পরবর্তী বিএনপি-জামায়াত সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশতঃ আওয়ামী লীগ সরকারের গৃহীত সবগুলো ভাল প্রকল্প বাতিল করে দেয়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশও আসিয়ান দেশসমূহে বিরাট বাজার রয়েছে এবং এসব বাজার উদঘাটনের ওপর তিনি জোর দেন।’ শেখ হাসিনা দেশে কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ প্লান্ট নির্মাণের কথা উল্লেখ করে বলেন, এই বিদ্যুৎ প্লান্ট চালানোর জন্য অন্যান্য দেশের পাশাপাশি ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা আমদানি করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাঁর সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করে বলেন, এসব পদক্ষেপের কারণেই বাংলাদেশ খাদ্য ঘাটতির দেশ থেকে একটি খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে পরিণত হয়েছে।
পটুয়াখালীতে পায়রা বন্দর নির্মাণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেখানে শিপইয়ার্ডও নির্মাণ করা হবে। বিবিআইএন ও বিসিআইএম-ইসি জোট গঠনের উদ্যোগ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই দু’টি ফোরাম কার্যকর হলে বিপুল অর্থনৈতিক কার্যক্রম শুরু হবে।
শেখ হাসিনা দু’দেশের মধ্যে বিরাজমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশ সবসময় তার ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ককে মূল্য দেয়। প্রধানমন্ত্রী দু’দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূতের প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানান। এসময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।