এ্যাড. মোঃ হারুনুর রশিদ খান
১। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা হলো জনগনের সরাসরি অংশ গ্রহণে কল্যাণমূলক শাসন পদ্ধতি। জনগনের
বাক-স্বাধীনতা, মৌলিক অধিকার ভোগে জীবন মান উন্নয়ন নিশ্চিতকণ সমৃদ্ধ রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা।
২। ব্রিটিশ উপনিবেশিক কর্তৃত্ববাদী এক নায়কতান্ত্রিক শাসনে অধিকার বঞ্চিত জনজীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠে।
নিরুপায় হয়ে জনগন জেল জুলুম হত্যা-নির্যাতন মাথায় নিয়ে অপশাসনের বিরুদ্ধে অপ্রতিরোধ্য সংগ্রাম গড়ে তুললে ব্রিটিশরা ভারত ছাড়তে বাধ্য হয় এবং ১৯৪৭ সালে ১৪ আগষ্ট পূর্ব ও পশ্চিম অংশকে নিয়ে পাকিস্তান রাষ্ট্র ঘোষনা করে। অপরদিকে ১৯৪৭ সালের ১৫ আগষ্ট ভারত স্বাধীনতা লাভ করে। মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে ভারতে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠাকল্পে জনগণের জীবন-মান উন্নয়নে সচেষ্ট হন।
৩। পশ্চিম পাকিস্তানের রাজনীতিবিদগণ কৌশলে পাকিস্তান রাষ্ট্রের শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয় এবং এক
নায়কতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা চালু করতঃ পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের উপর শাসনের নামে শোষন ও বঞ্চনার রীতিনীতি প্রয়োগ করে। তাদের অপনীতির প্রতিবাদ করে বহু জীবন বিসর্জন ও জেল জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়। তখন-ই স্বায়ত্বশাসন প্রতিষ্ঠার দাবীতে দেশ প্রেমিক রাজনীতিবিদদের নেতৃত্বে সংগ্রাম তীব্রতর হয়। নিরুপায় হয়ে স্বৈর শাসক গোষ্ঠি ১৯৭০ সালের ৭ই ডিসেম্বর জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচন দেয়। নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। স্বৈরশাসক গোষ্ঠি গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে জোর পূর্বক এক নায়কতান্ত্রিক শাসন চালাতে থাকে। বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান এর আহ্বানে ১৯৭১ সালে জনগন শোষক গোষ্ঠির সু-সজ্জিত সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণে ৩০ লক্ষ লোক শহীদ হন, তিন লক্ষ মা-বোন ইজ্জত বিসর্জন দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করে। জনগণের চাহিদা পূরণে উন্নত জীবন ব্যবস্থা গড়তে জাতির পিতা শেখ মজিবুর রহমান গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। স্বাধীনতার পর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বারবার বিপর্যয় নেমে আসে। গণতন্ত্রের পরিচর্যা না থাকায় গুনগত মান আশানুরূপ পর্যায়ে উপনীত হয়নি।
৪। পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট, যুক্তরাজ্য, ব্রাজিল, তুরস্ক, পশ্চিমা মিত্রদেশগুলো বিশ্বে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠায়
দূর্বল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোর উন্নয়নে সাহায্য সহযোগীতায় তৎপরতা বিশেষভাবে লক্ষনীয়। ফলে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার সুফল জনগন ভোগ করতে শুরু করে। গণতান্ত্রিক পদ্ধতি বিশ্বে জনহিতকর শাসন ব্যবস্থা এগুতে থাকে।
দুঃখের বিষয় পরবর্তীতে গণতান্ত্রিক পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও তার মিত্রদেশগুলো বিশ্বে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা মূলক কার্যক্রম হতে দূরে সরে পড়ে। ফলে দূর্বল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোর রাজনৈতিক অর্থনৈতিক সামাজিক অবকাঠামো উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হয় এবং জীবন মান উন্নয়নে ব্যর্থ হয়।
গণতন্ত্রের অধঃপতন বিষয়ে মার্কিন থিংক ট্যাংক ব্রুকিংস ইনষ্টিটিউশনের রবার্ট কেগানের লেখা একটি প্রবন্ধে শিরোনাম ছিল “গণতন্ত্র কি নিভে যেতে চলছে?” তিনি বলতে চাচ্ছেন গণতন্ত্র
একটি নাজুক ফুল। সদা পরিচর্যা দরকার। বাগানে শক্ত বেড়া না হলে আগাছা পরিস্কার না করলে জঙ্গল ও আগাছা তার জায়গা দখল করবেই। দীর্ঘকাল দেশের ভিতরে ও বাইরে গণতন্ত্রের পরিচর্যা নেই। ফলে যেসব ভুখন্ডে গণতন্ত্রের ফুল ফুটেছিল সেখানে আগাছা জন্মেছে জঙ্গল এসে ফুলের বাগানে ঢুকে পড়েছে। তাই অভ্যন্তরীন ও আন্তর্জাতিক দুই দিক থেকে গণতন্ত্র চাপের মধ্যে পড়েছে।
ব্রাজিল, ভারত, আফ্রিকার দেশগুলো অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌছতে পারেনি। আঞ্চলিক দৃষ্টিকোন ও সংকীর্ণতায় আটকিয়ে যায়। অপরদিকে গণতান্ত্রিক পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য এবং তাদের মিত্র রাষ্ট্রগুলো স্বার্থনির্ভর হিসাব-নিকাশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে যে ভূমিকা পালন করেছে তাতে শতভাগ সততা ছিল না।
৫। রাশিয়ার সাথে তুরস্কের অত্যন্ত খারাপ সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল। তুরস্কের অভ্যূত্থান হতে প্রেসিডেন্ট
এরদোগান বেঁচে যাওয়ার পর রাশিয়া ও তুরস্কের মধ্যে সু-সম্পর্ক গড়ে উঠে। পশ্চিমা গণতান্ত্রিক দেশগুলোর সহিত তুরস্কের সম্পর্কের ভাটা পড়ে। প্রকৃত অর্থে পশ্চিমা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে তুরস্ক ও রাশিয়া মধ্যে কর্তৃত্ববাদী ঐক্যের সৃস্টি হয়।
বেক্সিটের পর চীনের সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদ পত্র পিপলস ডেইলীর মন্তব্য হচ্ছে এটা পশ্চিমা গণতন্ত্রের মৌলিক ভুলের ফসল। পরাশক্তি আমেরিকায় গণতান্ত্রিক শাসনে বর্ণবাদ ও অসহিষ্ণুতা, সামাজিক জটিল সমস্যা নিরসনে ব্যর্থ। “দি গ্লোবাল টাইমস” লিখেছে পশ্চিমের সন্ত্রাসী হামলাগুলো আসলে গণতন্ত্র ধসে পড়ার ইঙ্গিত।
ক্লেয়ারমন্ট ম্যাককোনা কলেজের রাজনীতির অধ্যাপক মিনঝিন পেহ এক প্রবন্ধে লিখছেন চীনে কোন পরিবর্তন দরকার নেই, কারন সরকার কয়েক দশক ধরে জনগণের উন্নত জীবন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারছে।
রবার্ট কেগান লিখছেন মানব সত্যতার শাসনের ইতিহাসে গণতান্ত্রিক শাসনের চেয়ে কর্তৃত্ব পরায়ন শাসনের ইতিহাস-ই দীর্ঘ। রবার্ট কেগান অবশ্য গণতন্ত্রের ভবিষ্যত সম্ভাবনাময় উদার বিশ্ব ব্যবস্থাপনার জন্য গণতান্ত্রিক পরাশক্তি ও অন্যান্য মিত্র গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র সমূহ সমর্থনে বিশ্বে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ভূমিকাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন। তবে গণতান্ত্রিক পরাশক্তি রাষ্ট্রগুলো অতীতের সকল দোষ ত্রুটি ধুয়ে মুছে অগ্রসর হতে হবে। কেননা গণতান্ত্রিক পরাশক্তি গুলো-ই সন্ত্রাস, আই.এস, আল কায়েদা বা জঙ্গি সংগঠনগুলো বিশ্বজুড়ে উপহার দিয়েছে। ফলে দুর্বল বহু গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র জঙ্গি সন্ত্রাসী আই.এস আল কায়েদা ও অন্যান্য অশুভ শক্তির আক্রমন হতে বাঁচতে বা মাদক চোরাচালন ঠেকাতে কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্রগুলোর সাহায্যের দিকে এগোচ্ছে।
৬। বিশ্বে গণতন্ত্রের অবস্থা, পারিপাশ্বিকতা, প্রকৃতিগত বিষয়ে পর্যবেক্ষনে প্রতি বৎসরই যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রীডম
হাউস প্রতিবেদন পেশ করে। ২০১৫ সালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায় ১০ বৎসরে গণতন্ত্রের
উন্নতির কোন খবর নেই, বরং বহু দেশে গণতন্ত্রের খারাপ দিক উঠে আসে। গণতন্ত্রের মান কমেছে, এতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ তুরস্ক, হাঙ্গেরী, বুরন্ডির মত দেশ ও রয়েছে। সেই সুযোগে কর্তৃত্ববাদী এক নায়কতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলো, দুর্বল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোতে প্রভাব প্রতিপত্তি সৃষ্টি করতে সচেষ্ট হয়।
৭। পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য রাষ্ট্রগুলোতে রাজনীতিবিদগণ রাজনৈতিকভাবে ধর্ম-বর্ণ ও অহিষ্ণুতা
সামাজিক জটিল সমস্যা নিরসনে ব্যর্থ জনগন তাত্ত্বিক অবস্থানের দিকে অগ্রসর হয়। বিগত ০৮/১১/১৬ইং সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিলারী ক্লিনটন তার প্রতিদ্ধন্ধি ডোনাল্ড ট্রাম্প হতে প্রায় ২৬ লক্ষ বেশি ভোট পায়, প্রচলিত রীতি মোতাবেক আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে ৫৩৮টি ইলেকট্টোরাল ভোট আছে। যিনি ২৭০টি ভোট পাবেন তিনি-ই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হন। সেই সুবাধে ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তাহলে আমেরিকায় ২৬ লক্ষ ভোটারের বাক-স্বাধীনতা প্রয়োগে ভোটদান মূল্যহীন।
নির্বাচনে কর্তৃত্ববাদী রাশিয়া ডেমোক্রেটিক পার্টির নির্বাচনী তথ্য হ্যাক করে হিলারী ক্লিনটনকে পরাজিত করতে এবং রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বিজয়ী করতে বিশেষ ভূমিকার কথা, ডেমোক্রেটিক পার্টিও গোয়েন্দা রিপোর্টে তথ্য আছে বলে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশ। তা প্রমান হলে এটা গণতন্ত্রের জন্য হবে দুঃসংবাদ।
স্পেনের পত্রিকা এল পাইসকে সাক্ষাৎকারে রোমান ক্যাথলিক খিষ্টানদের ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস বিশ্বের লোকরঞ্জন বাদ বা পপুলিজম উত্থানের বিষয়ে হুঁশিয়ারী দিয়ে বলেছেন জনসাধারণের আবেগ অনুভূতিকে পুঁজি করে গড়ে উঠা সরকার বা রাজনীতি সমর্থনের মধ্যে হিটলারের মতো স্বৈরচারীর উত্থানের ঝুঁকি থাকে। পোপ এমন সময় এই কথা বললেন যখন পপুলিষ্ট নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে সদ্যই শপথ নিয়েছেন।
৮। গণতান্ত্রিক পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলো ছোট খাটো দোষ ত্রুটি প্রতিনিয়ত হোয়াইট
হাউস থেকে ফলাও করে প্রতিবেদন প্রকাশে সরকারগুলোকে নাজুক অবস্থায় ফেলে তবে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের বাস্তব অবস্থানগত দিক প্রতিবেদনে প্রকাশ হউক যাহা বিশ্ববাসী আশা করে।
গণতন্ত্রের সুখবর আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের দুইবার নির্বাচিত বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আটলান্টিক ম্যাগাজিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্বীকার করেন যে, তিনি প্রেসিডেন্ট থাকাকালে তাঁর প্রশাসন সিরিয়ায় চলমান সহিংসতায় অভিযুক্ত। যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ববর্তী প্রেসিডেন্টগণ ইরাক, আফগানিস্থান, লিবিয়াতে আগ্রাসী হামলায় লক্ষ লক্ষ লোকের প্রাণ হানি, বিপুল সম্পদ ধ্বংস হয় এবং বারাক ওবামার শাসনামলে লিবিয়ায় নেতা গাদ্দাফিকে ক্ষমতাচ্যুত করা তাঁর সরকারের বড় ভুল ছিল, এতে লিবিয়ায় বিশৃঙ্খলা চলছে।
তিনি ইরাক, আফগানিস্থান, লিবিয়ায় হামলায় ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের সমালোচনা করেন। বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা স্বীকার করেন যে, ইরাক, আফগানিস্থান, লিবিয়ায় আগ্রাসী হামলায়, আই.এস, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসীর উত্থান। যাহা ভুল আগ্রাসন নীতির কারন। যা ভাবতেও পারেননি। দেরিতে হলেও সত্য বিষয় প্রকাশের জন্য বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে জানাই কৃতজ্ঞতা।
৯। কর্তৃত্ববাদী এক নায়কতান্ত্রিক শক্তির প্রভাব প্রতিপত্তি বিশ্বে যতই এগুচ্ছে এতে আধুনিক অস্ত্র সস্ত্র
প্রস্তুতকরন ও বিক্রির প্রতিযোগীতার বৃদ্ধি পাচ্ছে। কর্তৃত্ববাদী পরাশক্তিগুলো অর্থনৈতিক উন্নতি এবং সামরিক শক্তির দৃঢ় অবস্থান সৃষ্টি করতে যাচ্ছে, এতে বর্ণ ধর্ম ও শ্রেণী বৈষম্য দিন দিন বৃদ্ধি পাবে। যে কোন সময় কর্তৃত্ব বাদী শক্তিগুলো বিভক্ত হয়ে একক কর্তৃত্ববাদী ক্ষমতাধর পরাশক্তি হিসেবে জানান দিতে প্রযুক্তিগত সামরিক শক্তি প্রয়োগে যুদ্ধের আশংকা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। যেখানে সততা মানবতা জীবনবোধ মূল্যহীন হতে বাধ্য।
১০। মানব সমাজকে ভবিষ্যৎ চরম বিপর্যয় হতে রক্ষা করতে গণতান্ত্রিক পরাশক্তি ও তার মিত্র
গণতান্ত্রিক দেশগুলোর মধ্যে মৌলিক ঐক্যের সৃষ্টি করা জরুরী এবং অতীতের স্বার্থ নির্ভরতা ছুঁড়ে ফেলে, গণতন্ত্রের পরিচর্যায় কর্মসূচী গ্রহণ ও বাস্তবায়নে বিশেষ ভূমিকায় অবতীর্ন হতে হবে। তবে-ই বিশ্বে সৃষ্ট ধর্ম বর্ণ বৈষম্য দূরীকরণে সন্ত্রাস, জঙ্গি আল কায়েদা, আই.এস এর অবসান প্রক্রিয়ায় এগিয়ে যাওয়া সম্ভব।
বহুকাল মিয়ানমারে গণতন্ত্রের চর্চা না থাকায় ধর্ম, বর্ণ, শ্রেণী বৈষম্য অবসানে শান্তিপূর্ণ সহবাস্থান গড়ে উঠেনি। বর্তমানে মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা চলমান অবস্থায় সেনাবাহিনী পূর্বের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কু-উদ্দেশ্যে জাতির নিরাপত্তার ভিত্তিহীন অজুহাতে সেনাবাহিনী অন্যান্য বাহিনীর সদস্যদের ও একদল ধর্মান্ধ শ্রেণীকে নিয়ে একটি ক্ষুদ্র মুসলিম জনগোষ্ঠিকে নিধনে উল্লাস করতে দ্বিধা করেনি। যা নিয়ে জাতিসংঘ অন্যান্য সংস্থা ও সচেতন বিশ্ববাসী হতাশ এবং তার আশু শান্তিপূর্ণ সমাধানে অপেক্ষায়।
ধন্যবাদান্তে বলতে হয়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২২/০৯/১৬ইং তারিখ জাতিসংঘের ভাষনে আইনাল কুর্দি বয়স (৩) নিস্পাপ শিশুকে কেন সাগরে ডুবে মরতে হবে, এই বক্তব্য বিশ্বের সচেতন বিবেকে নাড়া দেয় এবং জনগন গুরুত্বের সাথে উপলব্ধি করে। যুদ্ধ বিগ্রহ অবসানে প্রানহানি রোধে সুখী-সমৃদ্ধশালী জীবন ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য বিশ্ববাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
স্বার্থ নির্ভর হিসাব-নিকাশ ত্যাগ করে গণতান্ত্রিক পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও তাদের মিত্রদের নিয়ে দেশের ভিতরে ও বাহিরে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় এবং পরিচর্যায়, ধর্ম, বর্ণ বৈষম্য নিরসন ও আগ্রাসনী রীতি পরিত্যাগ করতঃ বিশ্বে সৃষ্ট জঙ্গি, আলকায়দা, আই.এস সহ সকল অশুভ শক্তির অবসানে সততা, মানবতাভিত্তিক উন্নত জীবন ব্যবস্থা গড়ে তোলার সেই অপেক্ষায় সচেতন বিশ্ববাসী। জয় হউক গণতন্ত্রের, জয় হউক বিশ্ব জনতার।