তাইসলাম॥ মুক্তির সংগ্রামে যারা অংশ নিয়েছিলেন, তাঁরা একে একে সবাই চলে যাচ্ছেন। নতুন যাঁরা আছেন, তাঁরা এঁদের অনুসরণ করে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে দেশকে এগিয়ে নেবেন। আমাদের সময় হলে চলে যেতে হবে। কিন্তু দেশ নিয়ে কেউ যাতে ছিনিমিনি খেলতে না পারে, নতুনদের মধ্যে সে চেষ্টা থাকতে হবে। মানুষ চলে যায়। কিন্তু তাঁর কীর্তি ও কথা থেকে যায়। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সে রকমই একজন। অনেক কঠিন কথাকে হাস্যরস দিয়ে সহজ করে তুলে ধরা, মানুষকে আকর্ষণ করার অসাধারণ ক্ষমতা তাঁর মধ্যে ছিল।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আজীবন প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিশ্বাস করেছেন। রাজনৈতিক জীবনে অনেক জেল-জুলুম সহ্য করতে হয়েছে তাকে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় সুরঞ্জিত সেনগুপ্তসহ বর্তমানে এখানে থাকা অনেক মন্ত্রী-নেতাও আহত হন।
অনেক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আজ একটা পর্যায়ে এসেছে, জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত করেছি। আমরা পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করেছি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে জাগ্রত করেছি। সেই সংগ্রাম ও সামগ্রিক কাজে আমাদের অন্যতম সঙ্গী ছিলেন বাবু সুরঞ্জিত।
জনগণকে আকর্ষণ করার এক চমৎকার গুণ ছিল তার মাঝে। গণপরিষদে সংবিধান রচনার সময় অনেক তর্ক-বিতর্ক হয়েছে। তখন বিরোধীদলের সদস্য হিসেবে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ভূমিকা ছিল ‘একাই একশ’। বঙ্গবন্ধু তাকে সবসময়ই উৎসাহ দিতেন, বারবার বলতে বলতে, উৎসাহ দিতে দিতেই বঙ্গবন্ধু মনে হয় সুরঞ্জিতকে সৃষ্টি করে গেছেন। জাতীয় সংসদের ১৪তম অধিবেশনে সদ্য প্রয়াত সংসদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ওপর আনা শোক প্রস্তাবের আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।