রাইসলাম॥ একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসাবে নিয়োগ দেয়াতে ধন্যবাদ জানাই আবারও মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে। নতুন দ্বায়িত্ব বুঝে নেবার পর নতুন সিইসি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে তার উপর অর্পিত সাংবিধানিক দায়িত্ব যথাযথ ভাবেই সম্পাদন করতে সক্ষম হবেন এবং ২০১৯ সালের জাতীয় নির্বাচনটি সবার কাছে গ্রহণযোগ্যভাবে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নিজের উজ্জ্বল ভাবমূর্তি গড়ে তুলবেন। এটাই আমাদের কামনা। জনাব হুদা বলেছেনও তাই। তিনি বলেছেন তাঁর উপর অর্পিত দায়িত্ব তিনি সততা ও বিশ্বস্ততার সহিত পালন করবেন। তিনি নিরপেক্ষ থেকে একটি স্বচ্ছ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন এবং এর জন্য সকলের সহযোগীতা কামনা করেন।
এক নজরে সিইসির পুর্ব ইতিহাস: ১৯৭৩ ব্যাচের কর্মকর্তা ৬৯ বছর বয়সী নূরুল হুদা। ১৯৪৮ সালে পটুয়াখালী জেলার বাউফলে জন্ম গ্রহন করেন। এক যুগ আগে চাকরি থেকে অবসরে যাওয়া নূরুল হুদা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিসংখ্যান বিভাগে সম্মান ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করে যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটি ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে তিনি উচ্চতর ডিগ্রি নেন। নূরুল হুদা ১৯৭২-৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হল আবাসিক ছাত্র সংসদে সাংস্কৃতিক সম্পাদক ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যান বিভাগে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়ার সময়ই বরিশাল অঞ্চলে মেজর জলিলের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন নূরুল হুদা। মুক্তিযোদ্ধের সময় ৯ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধে অংশ নিয়ে ৯ ডিসেম্বর পটুয়াখালী জেলা পাক হানাদার মুক্ত করতে গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা রেখেছিলেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধের পরে আবার তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরেন এবং ১৯৭৩ সালে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে সরকারি কর্মকমিশনের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ওই বছরের ৩০ জুলাই প্রশাসন ক্যাডারে যোগ দেন।
চাকরিজীবনে তিনি ফরিদপুর ও কুমিল্লার জেলা প্রশাসক ছাড়াও কিছু মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। কুমিল্লার জেলা প্রশাসক থাকার সময়ে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি এবং ১২ জুলাই নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন নূরুল হুদা। এছাড়া তিনি এরশাদ সরকারের আমলে ১৯৮৫ সালে উপজেলা নির্বাচন এবং ১৯৮৬ সালের সংসদ নির্বাচনেও নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করেন।
২০০১ সালের ২৪ জুলাই বিএনপি ক্ষমতায় এসে কিছু কর্মকর্তার সঙ্গে নূরুল হুদাকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়। সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে বিএনপি সরকারের ওই আদেশ তখন বেআইনি ঘোষণা হলে নুরুল হুদা ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি পেয়ে সচিব হন এবং সব ধরনের আর্থিক সুযোগ সুবিধা লাভ করেন।
সরকারি চাকরি শেষে ২০১০ সালে যোগ দেন বাংলাদেশ মিউনিসিপাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (বিএমডিএফ) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে। ওই পদে তিনি ৫ বছর কর্মরত ছিলেন। নুরুল হুদা বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন।