ড. আবুল বারকাত॥ কোন পথে বাংলাদেশ? যদি বলি, বাংলাদেশ ভুল পথে তাহলে কি আমার ভুল হবে? বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতা আছে কি নেই এই বিতর্কের চেয়ে বড় প্রশ্নÑ এদেশে যদি সাম্প্রদায়িকতা না থাকত তাহলে সাম্প্রদায়িক হামলাগুলো হয় কি করে? কে করে, কারা করে, কী উদ্দেশ্য এই হামলাগুলো করে? এখানে সাম্প্রদায়িকতা নিজেই একটা বড় সমস্যা। আবার আছে উগ্রপন্থি। কেন আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি, কেন এই দেশটিকে স্বাধীন করেছিলাম? এই সমাজকে বৈষম্যমুক্ত করব বলে। এখানে একটি অসাম্প্রদায়িক সমাজ হবে এই প্রত্যাশায় আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম। এখানে হয়েছে অসাম্প্রদায়িক সমাজ? বৈষম্যমুক্ত সমাজ এখানে এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি। হয়নি অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠনের ইচ্ছে পূরণও।
এদেশের অর্থনীতির পুরোটাই দুর্বৃত্তায়িত। রাষ্ট্রীয় মালিকানা বলে এখন কিছু নেই এখানে। কোনোকিছু করা হলেই এখানে প্রাইভেটাইজেশন করার জন্য উঠেপড়ে লেগে যাওয়া হয়। বাংলাদেশ এখন ভুল পথে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ এখন আর নেই। আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে আওয়ামী লীগ অসাম্প্রদায়িক হওয়ার চেষ্টা করেছিল। আওয়ামী লীগ কি এখন সেই পথে আছে?
পাঠ্যপুস্তকে আমরা এখন কি দেখি? ভুল, অশুদ্ধ, সাম্প্রদায়িকতা। পাঠ্যপুস্তক থেকে সাম্প্রদায়িকতা দূর করতে হলে, প্রতিরোধ করতে হলে গণজাগরণ মঞ্চসহ সকল ছাত্রসংগঠনের আন্দোলনে নামা উচিত। কারণ এই সাম্প্রদায়িকতা থাকলে পাঁচবছর পর আমরা শিশুদের মুক্তিযুদ্ধের কথা বলতে পারব না। বৈষম্যমুক্ত, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের পক্ষে আমাদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সবাইকে জেগে উঠতে হবে।