নয়ন॥ পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সততার শক্তি ছিল বলেই বিশ্ব ব্যাংকের ওই অভিযোগকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পেরেছিলেন তিনি। দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে চুক্তি করেও বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো প্রকল্প পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন স্থগিত এবং পরে তা বাতিল করেছিল বিশ্ব ব্যাংক। পরে তাদের বাদ দিয়েই নিজস্ব অর্থায়নে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে বিশ্ব ব্যাংকের ওই অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে কানাডার একটি আদালত। এ ঘটনায় কানাডীয় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিনের দুই কর্মকর্তাসহ তিনজন আসামিকে খালাস দিয়ে রায়ে বিচারক বলেছেন, এই মামলায় কোনো প্রমাণ হাজির করা হয়নি। প্রমাণ হিসেবে যেগুলো উপস্থাপন করা হয়েছে সেগুলো ‘অনুমানভিত্তিক, গাল-গল্প ও গুজবের বেশি কিছু নয়’। এই রায় প্রকাশের দুদিনের মাথায় রোববার এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এতকাল পরে আজকে তারা স্বীকার করেছে, কোর্ট বলে দিয়েছে; এখানে তো কোনো দুর্নীতি হয়ই নাই বরং ওয়ার্ল্ড ব্যাংক যে অভিযোগ করেছে, তা ভুয়া, মিথ্যা ও আষাঢ়ে গল্প।”
এই ঘটনার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের মানুষের ‘মান-মর্যাদা’ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশের মানুষের মান-সম্মান ক্ষুন্ন করতে পারে এমন কোনো কাজ শেখ মুজিবের পরিবার করবে না বলেও মন্তব্য করেন তার মেয়ে শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “আমি এতটুকু বলতে পারি, আমাদের কারণে বাংলাদেশের মানুষ এতটুকু লজ্জায় পড়তে পারে বা বাংলাদেশের মানুষের কোনো রকম মান- সম্মান ক্ষুন্ন হবে অন্তত সেই কাজ আমাদের পরিবার, শেখ মুজিবের পরিবার এটা কোনো দিনও করবে না। “কারণ আমরা দেশকে ভালোবাসি, দেশের মানুষকে ভালোবাসি আর মানুষের জন্য রাজনীতি করি, দেশের মানুষকে ভালো রাখার নিয়ত নিয়ে রাজনীতি করি।”
এভাবে যাতে চলতে পারি সেজন্য সকলের কাছে ‘দোয়া’ চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আপনাদের দোয়া চাই, মান-সম্মান নিয়ে যেন চলতে পারি। একটা কথা সব সময় বিশ্বাস করি- সততার সেই শক্তি ছিল বলেই চ্যালেঞ্জ নিতে পেরেছিলাম।” নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করে বাংলাদেশের মানুষ ‘অসাধ্য সাধনের’ সক্ষমতা বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।