কেএমএ হাসনাত॥ সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পে-কমিশনের বিকল্প চিন্তা করছে সরকার। সেটা স্থায়ী পে-কমিশনও হতে পারে। তবে বিষয়টি চুড়ান্ত করতে আগামী ১২ মার্চ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমদ, পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামালসহ জাতীয় শুদ্ধাচার উপদেষ্টা পরিষদের নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন বলে সূত্র জানিয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা বাজারের সমতুল্য করতে পাঁচবছর অন্তর পে-কমিশন গঠন করা হয়। কমিশন বিভিন্ন দিক বিবেচনায় নিয়ে পে-স্কেল নির্ধারন করে। সর্বশেষ বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্ণর ড. ফরাস উদ্দিনের নেতৃত্বে অষ্টম পে-কমিশন গঠন করা হয়েছিল। ওই কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে সরকার অষ্টম পে-স্কেল বাস্তবয়ন করে। ইতোপূর্বে যেসব পে-কমিশন গঠন করা হয়েছিল তার প্রতিটি বিভিন্নভাবে সমালোচিত হয়েছে। এসব সমালোচনা এবং জটিলতা দূর করতে একটি স্থায়ী পে-কমিশন বা অন্য কোন ব্যবস্থা প্রবর্তনের চিন্তা করা হয়। এরই আলোকে একটি সম্মিলিত সিদ্ধান্ত নিতে অর্থমন্ত্রীর পরামর্শ চাওয়া হয়। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে একটি সার-সংক্ষেপ পাঠানো হয়।
উপস্থাপিত সার-সংক্ষেপে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এবারের বেতন ভাতা নির্ধারনে আমাদের লক্ষ্য ছিল যে এখন থেকে বেতন ভাতা বাজারের সমতুল্য হবে। সেজন্য ভবিষ্যতে পাঁচ বছর পর পর আর কমিশন নিয়োগ করতে হবে না। আমরা এখন থেকে একজন সিনিয়র কর্মকর্তাকে বেতন ভাতার বিষয়ে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব দেব। তিনি যে সব অসঙ্গতি দেখা যায় সেগুলো দেখবেন এবং এই বিষয়ে যে মন্ত্রিসভা কমিটি আছে তার সদস্য সচিব হবেন। তিনি দেশের বাজারের অতি মূল্যস্ফীতি ইত্যাদি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকবেন এবং বছর শেষে এই বিষয়ে প্রতিবেদন দেবেন।’ তিনি বলেন, ‘কমিটির প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে বেতন-ভাতার কোন পরিবর্তন করতে হলে তা যথাসময়ে করা যেতে পারে। বিষয়টি হবে একটি বড় পরিবর্তনের ব্যাপার। তাই এ বিষয়ে আমাদের নিজেদের মধ্যে একটি বিস্তৃত আলোচনার প্রয়োজন। আমরা এই আলোচনা এ বছরই করে ডিসেম্বরের মধ্যে ভবিষ্যতের বেতন-ভাতা নির্ধারণ ও পরিবর্তনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারি।’
সূত্র জানায়, অষ্টম পে-কমিশননের সুপারিশ নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার কারণে পে-স্কেল বাস্তবায়নে দীর্ঘ সূত্রিতার সৃষ্টি হয়। এছাড়া সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যেও অসন্তোষ সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। সে সময়ই অর্থমন্ত্রী একটি স্থায়ী পে-কমিশন গঠনের তাগিদ অনুভব করেন। জাতীয় শুদ্ধাচার উপদেষ্টা পরিষদের নির্বাহী কমিটির বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হবে চলমান পদ্ধতিতে চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা নির্ধারণ হবে নাকি নতুন ব্যবস্থা প্রবর্তন হবে।