বহুল আলোচিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এর একটি হল ফেস বুক। এটি একটি যুগান্তকারী মাধ্যমে পরিণত হয়েছে। এই ফেসবুক হুবই দরকার ছিল বর্তমানের জন্য। একটি ঘটনা খুব অল্প সময়েই পৌঁছে যায় পৃথিবীর এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত পর্যন্ত। যাকে জানানো প্রয়োজন সে সময়, মেধা, শ্রম এমনকি না জানার ইচ্ছা থাকলেও জেনে যাচ্ছে ঐ খবরটি। কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যমটির নেতিবাচক দিকগুলো এখন কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে আমাদের এই পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে। কি করে এই নেতিবাচক বহুমাত্রীক ব্যবহার থেকে ইতিবাচক ব্যবহারে পরিণত করা যায় সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশ ফেসবুকল ফ্রেন্ডস্ সোসাইটি কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি দিনদিন যেভাবে এর ব্যবহার বেড়ে যাচ্ছে সেই তুলনায় আমাদের ইতিবাচক মনোভাবের পরিবর্তন আনয়নকল্পে কাজ-কর্ম খুব কমই হচ্ছে। তাই সরকারকে বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই বাংলাদেশ ফেসবুক ফ্রেন্ডস্ সোসাইটির সঙ্গে মিল রেখে ফেসবুক এডমিন সচল করতে হবে যাতে নেতিবাচক প্রচারণা এবং উচ্ছুঙ্খলপনা ছবি বা খবর প্রচার করতে না পারার বেরিকেড বা চেক পয়েন্ট তৈরী করে লোক বসাতে হবে। যা আমরা চেষ্টা করছি আমাদের সোসাইটির মাধ্যমে।
এইতো ফেসবুকে পরিণয়, মেলামেশা, খুন-খারাবি, সন্ত্রাসসহ বহুমাত্রিক অনৈতিক এবং অপরাধমুলক কর্মকান্ড। যেমন প্রেম, বিয়ে ও বিচ্ছেদ, একজনের সঙ্গে মা-মেয়ের সম্পর্ক। চুড়ান্ত পরিণতি মৃত্যু। এই ঘটনা অহরহ ঘটেছে এবং মৃত্যুই এর সমাধান হয়ে দাড়িয়েছে। ফেসবুকের মাধ্যমে যুবসমাজের অবক্ষয় রোধ করার এখনই সময়। এই সময় মা-বা এমনকি স্কুল-কলেজে সর্বোপরি বিশ্ববিদ্যালয়েও নৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয় শিক্ষায় এই বিষয়ের আলোকপাত করে ধীরে ধীরে এগুতে হবে। সাবধানের মার নেই তাই আগামী প্রজন্মকে যোগ্য করে তোলার জন্য এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে।
সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করার একটি উত্তম পন্থা হলো এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যামগুলি। তারমধ্যে ফেসবুকও রয়েছে। বাংলাদেশে যখন জঙ্গি উত্থান হয় তখন এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নেতিবাচক ভূমিকা ছিল প্রখড়। কিন্তু যখনই সরকার এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলি বন্ধ করে দিয়েছিল ঠিক তখনই এর প্রসার কমানোর একটি উর্বর সুযোগ আসে। আমার প্রশ্ন এই সুন্দর মাধ্যমগুলোকে নেতিবাচক মনোভাব নিয়ে ব্যবহার না করে বরং ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে ব্যবহার করার মানসিকতা এবং পরিবেশ এখনই তৈরী করতে হবে।
ডিজিটাল যুগে কোনো ভাল উদ্যোগ বা পদক্ষেপ নিলে সমালোচনা ও বিরোধীতা বেশী হয়। এই বিষয়টিও চলে আসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। শিশু-আবোঝ থেকে জ্ঞানী (জ্ঞানপাপী) – গুণীজনও ঐ একই কাজ (নেতিবাচক) করে থাকেন। কিন্তু আমাদের মস্তিষ্কের কি একটু সুস্থিরতা বা উন্নতি এখনো ঘটেনি। যে শিশুটি আজ বাড়ন্ত মন, দেহ ও চিন্তা নিয়ে এগুচ্ছে সে কি শিখবে আমাদের অনুর্ভর মস্তির্ষ্ক থেকে। আসুন আমরা সকলে সচেতন হই এবং অন্যকে সচেতন হতে নিজেদের জীবনের বাস্তব দৃষ্টান্ত তুলে ধরি। চিন্তা এবং কাজের সমন্বয় ঘটাই। আগে নিজে করে অন্যকে করতে উৎসাহিত করি। মুখে শিক্ষা দিয়ে নিজে প্রয়োগ না করে আর সময় নষ্ট না করি।
অগ্নিঝরা মার্চ মাসের কথা যদি বলতে হয় তাহলে বলতে হবে সেযুগে ফেসবুক ছিলনা কিন্তু ছিল মানুষের তৈরী নূন্যতম যোগাযোগ আর সেই যোগাযোগের মাধ্যমেই বঙ্গবন্ধু ৭কোটি বাঙ্গালীর হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছিলেন এবং ৭ কোটি মানুষের হৃদয়ের সিংহাসনে বসে সমস্ত সফল পরিকল্পনা করে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করেছেন। বঙ্গবন্ধুর সময় সোসাল মিডিয়ার এই অপপ্রচার এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়া ছিল না। তখন ইতিবাচক সংবাদ পরিবেশনই বেশী হত এমনকি সত্য ও ন্যায়পরায়তার আলোকে মিডিয়া কাজ করত। হিং¯্র পশু সরকারের আজ্ঞাবহ কিছু সংবাদপত্র বা মিডিয়া ছাড়া বাকী সবগুলোই কাজ করেছে মানবতার কল্যাণে। কিন্তু আজ তার উল্টো মিডিয়াই বেশীরভাগ নেতিবাচক সংবাদই জনতার খোরাক মনে করে নিলর্জভাবে প্রচার করা হয়। বাড়ন্ত জাতিকে নিলর্জ্জ মিথ্যার শপথে বলিয়ান হতে সহায়তা করে যাচ্ছে। আমাদের এই মার্চেই সেই বঙ্গবন্ধুর বিশ্ববিখ্যাত্য পরিকল্পিত ভাষন এবং ১০টি আদেশের/ নির্দেশের আলোকে তৈরী হতে হবে। প্রতিটি ঘরে ঘরে সোসাল মিডিয়ার ইতিবাচক দিক তুলে ধরে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। প্রতিটি ঘটনার গভিরে গিয়ে মুলোৎপাটন করে ইতিবাচকভাবে মানব কল্যাণের তরে পৌঁছে দিতে হবে। বঙ্গবন্ধুর আদেশ যেভাবে পালিত হয়েছিল এবং সারা বাংলায় যেভাবে জোয়ার উঠেছিল ঠিক সেইভাবেই আমাদেরকে কাজ করতে হবে বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনার নির্দেশে।
বাংলার আনাচে-কানাচে এখনও যে মিডিয়ার কুফল এবং দেশদুশমনদের মুখরোচক মিথ্যাচারের কুফল রয়েছে সেগুলো সত্যের আলোকে বাস্তবতার নিরিখে সোসাল মিডিয়ার ইতিবাচক ইতিহাস ও যুক্তিনির্ভর প্রচারণার মাধ্যমে ভুল ধারণার অবসান ঘটাতে হবে। সোসাল মিডিয়ার যে বাহন বা প্রাণ ইন্টারনেট; এই ইন্টারনেটের কল্যানেই আজ ঘরে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে পৃথিবীর সকল ইতি/নেতিবাচক খবর। কিন্তু এই ইন্টারনেট এর খরচ এবং যোগান যারা দিয়েছে তাদের কথাও মাথায় রেখে অগ্রসরমান উন্নতিকে আরো শক্তিশালী মজবুত বৃত্তির উপর দাঁড় করাতে এখন আমাদের সকলকেই সজাগ থেকে কাজ করতে হবে। কোন নেতিবাচক সংবাদে কান না দিয়ে বরং ইতিবাচক সংবাদে কান দিয়ে মাথা খাটিয়ে চিন্তা ও কাজের সমন্বয় একসাথে ঘটালেই অভিষ্ট লক্ষে পৌঁছা যাবে।
কোন নেতিবাচক খবরের বিষবাষ্প যেন আমাদের উদীয়মান সমাজে আর ছোবল না মারে সেইদিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখতে হবে। আমরা বাঙ্গালী আমরা পেরেছি, পারি ও পারবো। আমাদেরকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। তবে চিলে কান নিয়েছে শুনে কানে হাত না দিয়ে চিলের পিছনে ছুটলে আমাদের আর চলবে না। এখন থেকে কানে হাত দিতে হবে, দেখতে হবে অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ; তারপর ধৈর্য্যশীল হয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপের মাধ্যমে কাজ করতে হবে। ঠিক তখনই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার সহযাত্রী হিসেবে আমাদেরকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে পারবো। ঐতিহাসিক সেই ৭ মার্চের ভাষনের পর বঙ্গবন্ধুর আহবানে সাড়া দিয়ে যখন মানুষ যার যা ছিল তাই নিয়ে ঝাপিয়ে পড়েছিল… তখন কিন্তু ব্যক্তিগত কোন চাহিদা বা লোভ কাজ করেনি, করেছিল সামষ্টিক এক দাবি স্বাধীন বাংলাদেশ। এই দাবি একক নয় বরং সাড়ে সাত কোটি বাংগালির। সেই দাবির সঙ্গে সৃষ্টিকর্তার আশির্বাদও জড়িয়ে ছিল। সৃষ্টিকর্তাও চাই একক নয় সামগ্রীক কল্যানের তরে যেন আমরা কাজ করি। এখন বিষয় একটি ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে যার যার অবস্থান থেকে কাজ করা এবং শেখ হাসিনার নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা।
ইতিবাচক মনোভাব এবং সোসাল মিডিয়ার কল্যানে যে ভাল কাজ হয় তারও দৃষ্টান্ত আছে হাজারো। ট্যাক্সেস বার এসোসিয়েশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিশাল জয় এবং বিএনপির ভরাডুবি। একজন বিজীত প্রাথী নিজের মনের ইচ্ছা প্রকাশ করে বলেছেন তিনি জানেন না তিনি দাড়িয়েছেন এবং তিনি কোন প্রচারনাও চালায় নি কিন্তু পাস। তিনি বলেন এই সবই হয়ে মিডিয়ার কল্যানে এবং ইতিবাচক মনোভাবের ফলে। দলীয় ঐক্যে কোনে নেতিবাচক মনোভাব ছিল না তাই এই বিজীত ফলাফল।
গতকাল ৭মার্চ এবং বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর ভাষণ নিয়ে আলোচনায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যথার্থই বলেছেন আগামী প্রজন্মের ভাবনা কি? এই বিষয়টি সঠিক এবং যথার্থ এবং তা সকলকে জানাতে হলে এই সোসাল মিডিয়ার মাধ্যমে ইতিবাচক মনোভাব নিয়েই এগিয়ে আসতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে অনেক অজানা বাস্তব সত্য আমরা জেনেছি । যা পূর্বে অনুমান নির্ভর এবং বিশ্লেষণাত্মক ছিল কিন্তু এখন তা বাস্তব সত্য হয়ে মানুষের সামনে এসেছে বঙ্গবন্ধু তনয়ার মাধ্যমে। সাধুবাদ জানাই ওনার মূল্যবান ঐতিহাসিক বক্তব্যের জন্য। এই বক্তব্যই ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে আগামী প্রজ¤েœর জন্য। এখনই সময় সোসাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে সত্যকে জানিয়ে দেয়ার। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর সন্ত্রাস বিরোধী আহবানও জানিয়ে দেয়ার উপযুক্ত সময়। আমরা আশা করি সামুদ্রিক সহযোগিতাসহ সকল ক্ষেত্রেই সোসাল মিডিয়ার সহযোগীতা অব্যাহত থাকবে। সোসাল মিডিয়া হউক “সকলের তরে সকলে আমরা; প্রত্যেকে আমরা পরের তরে”।