আবদুল আখের॥ ‘২০১৮ সালের ডিসেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন’ অনুষ্ঠানের টার্গেট নিয়ে প্রস্তুত হচ্ছে কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নবগঠিত নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছরের নভেম্বরের প্রথমে তফসিল ঘোষণা করে ডিসেম্বরের শেষভাগে নির্বাচন হতে পারে বলে মনে করছে ইসি। সেই অনুযায়ী সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা তৈরির জোর প্রস্তুতি চলছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসি সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, সংবিধান অনুযায়ী দশম সংসদের মেয়াদ শেষের ৯০ দিন আগে নির্বাচন করতে হবে। সেই হিসাবে আগামী বছরের ডিসেম্বর মাসকে টার্গেট করে নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে পুনরায় সরকার গঠনের সুযোগ পায়। নির্বাচিত সংসদের মেয়াদ হয় সংসদ সদস্যরা শপথ নেয়ার দিন থেকে পরবর্তী ৫ বছর। ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি সরকার গঠন করা হয়। সেই হিসাবে বর্তমান সংসদের মেয়াদ পূর্ণ হবে ২০১৯ সালের ১১ জানুয়ারি। সেক্ষেত্রে ২০১৯ সালের ১১ জানুয়ারির পূর্বের ৯০ দিনের মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা আছে। সংবিধানের ১২৩(৩) অনুচ্ছেদ অনুসারে মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে সংসদ ভেঙে যাওয়ার পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিধান রয়েছে।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, আগামী সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের মাঠ কর্মকর্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির কাজও হাতে নেয়া হচ্ছে। দফায় দফায় নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে কর্মকর্তাদের। সব উপজেলায় নিয়োগ দেয়া হচ্ছে নির্বাচন অফিসার। সেই সঙ্গে কর্মকর্তাদের মনোবল ধরে রাখতে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া ২০১৮ সালের জানুয়ারির মধ্যে যাদের বয়স ১৮ বছর হবে তাদেরও ভোটার করার জন্য আগাম তথ্য সংগ্রহ করেছে ইসি। এ ক্ষেত্রে ভোটার তালিকার কাজও অনেকটা এগিয়ে থাকছে।
ইসির তথ্য মতে, চলতি মার্চে তৈরি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী দুই বছর ধরে প্রস্তুতি নেবে কমিশন। প্রস্তাবিত রোডম্যাপে রাজনৈতিক দল, মিডিয়া সবার সঙ্গেই সংলাপের প্রস্তাবনা থাকবে। ইসির কর্মপরিকল্পনার মধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদ, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থার নিবন্ধন, সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাস, চূড়ান্ত ভোটার তালিকা মুদ্রণ, ডিজিটাল ভোটিং মেশিনে (ডিভিএম) ভোট গ্রহণ, বিভিন্ন আইন-কানুন সংশোধন ও আলোচনার জন্য সম্ভাব্য সূচি থাকবে। সেই সঙ্গে সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় নির্ধারণ করে কাজ শেষ করার বিষয়টি রোডম্যাপে অগ্রাধিকার পাবে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রয়োজনীয় বিষয়ে রাজনৈতিক দলসহ সবার মতামত নেওয়ার পক্ষে এ মাসের শেষদিকে কমিশনের কাছে প্রস্তাব রাখবে ইসি সচিবালয়।