ফাহাদ বিন হাফিজ॥ কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে নির্বাচনে অধিকাংশ কেন্দ্রে ক্ষমতাসীনদের ‘সন্ত্রাস-অনিয়ম’ রোধে নির্বাচন কমিশন কার্যকর উদ্যোগ রাখতে ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বলেছেন, এই নির্বাচনে কমিশনের কোনো কর্তৃত্ব দেখতে পাইনি। নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ হয়েছে।’ কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে ভোটগ্রহণ শেষে বৃহস্পতিবার বিকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন। নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে ধরে রিজভী বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও তার নেতৃত্বে কমিশনাররা নির্বাচনে সন্ত্রাস মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছেন। কমিশনের যে কর্তৃত্ব রাষ্ট্রের আইন দ্বারা স্বীকৃত রয়েছে আমাদের মনিটরিংয়ে তাদের সেই উদ্যোগী ভূমিকা আমরা লক্ষ্য করিনি। নিশ্চয় কমিশন তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে যে ভূমিকা রাখা উচিত ছিল, তা রাখতেও ব্যর্থ হয়েছে এই কমিশন।’
রিজভী বলেন, ‘সকাল থেকে আওয়ামী ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিএনপির নেতাকর্মী ও এজেন্টদের মারধর করে অধিকাংশ কেন্দ্র থেকে বের করে দেয় এবং দুপুরের পর থেকে ককটেল ফাটিয়ে বেপরোয়াভাবে কেন্দ্র দখল করে জালভোটে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে।’
ভোটের ফলাফল মেনে নেবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে রিজভী বলেন, ‘নির্বাচনসংক্রান্ত আরও যেসব বক্তব্য তা আমরা পরে বলব। এখন তাৎক্ষণিক নির্বাচনে যেসব তথ্য পেয়েছি, তা জানালাম।’ সংবাদ সম্মেলনে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন কেন্দ্রের অনিয়ম, কেন্দ্র দখল, ক্ষমতাসীন দলের বহিরাগতদের কেন্দ্রে অনুপ্রবেশ করে জাল ভোট দেয়ার নানা তথ্য-প্রমাণাদি ও আলোকচিত্র তুলে ধরেন রিজভী।
বহিরাগতদের অনুপ্রবেশে স্থানীয় প্রশাসনের ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বলা হয়েছে সিটি করপোরেশনের যারা নাগরিক নন, তারা ২৮ তারিখ চলে যাবেন। আমাদের যেসব নেতা ধানের শীষের প্রার্থীর পক্ষে প্রচার চালাতে গেছেন তারা চলে এসেছেন। তাহলে আজকে কী করে বহিরাগতরা সিটি করপোরেশন এলাকায় ঢুকতে পারলো, নির্বাচনী কেন্দ্রগুলোতে সন্ত্রাস করলো, জালভোট করলো। নিশ্চয় নির্বাচন কমিশন তাদের যে অর্পিত দায়িত্ব, তা পালনে ব্যর্থ হয়েছে।’
রিজভী বলেন, ‘সন্ত্রাসনির্ভর নির্বাচন ও রাজনীতি নিশ্চিত করতে তারা (ক্ষমতাসীন) রক্তাক্ত পন্থা অবলম্বন করে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিচ্ছে। ভোটারদের ভয় পাইয়ে দিচ্ছে যেন তারা ভোট দিতে না যায়। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে জনগণকে সাথে নিয়ে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সবার অংশগ্রহণমূলক সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। যার দাবি আমরা বারবার করে আসছি। অন্যথায় হাসিনামার্কা নির্বাচন দিয়ে ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে না।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে আবদুস সালাম, খায়রুল কবির খোকন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। আপনরাই বলুন সাংবাদিকদের কি কোন প্রয়োজন আর নিজউ বা সমালোচনা করার। জাতির বিবেক এখন বিচার করুন আগামী দিনের জন্য।