তাজুল ইসলাম নয়ন॥ এই চার রকমের মধ্যে একটা মিল রয়েছে; এই মিল হল অন্যায়ের পতাকা শক্তিশালীকরণ। অন্যায়কারীকে ক্ষমাতায়ন, অন্যায়ের মধ্যে জাতিকে নিমজ্জ্বিত করে রাখা। কারণ সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে সৃষ্টিকর্তা মহান রাব্বুল আল-আমীন। তিনি খোদা কাউকে ভোজল হিসেবে পৃথিবীতে পাঠাননি। তিনি পাঠিয়েছেন তাঁরই ছিফতে, তাঁরই মত করে পবিত্রাবস্থায়। কিন্তু আমরা নিজেরা ভেজালে, মাদকাসক্ত, সন্ত্রাসী এবং জঙ্গীবাদে রুপদান করেছি নিজেদেরকে। যা সম্পূর্ণ খোদার ইচ্ছার পরিপন্থি। পাপ এবং পবিত্রের মধ্যে পার্থক্য হলো এই যে পাপী সব সময় খোদার কাছ থেকে দুরে সরে যায় আর পূন্যবান যিনি খোদার আদেশ পালন করেন তিনি সব সময় খোদার কাছে থাকেন। কারণ পুন্যবান খোদার সান্নিধ্যে থেকে থেকে তাঁরই মতে হয়ে উঠে। যাতে মানুষ এই মানুষটিকে দেখে খোদাকে আরো বেশী করে জানার এবং খোদার ইচ্ছানুযায়ী চলার আগ্রহ বাস্তবে প্রকাশ করে থাকেন।
খোদা তায়ালা আমাদেরকে বলেছেন কোন মানুষকে যেন আমরা হত্যা না করি; কিন্ত কেন বলেছেন? বলেছেন এই কারণে তিনি আমাদোর (মানুষের) অন্তরে বসবাস করেন। অন্য কোন পশু পাখি বা জীব-জন্তুর নয় বরং মানুষের। কারণ তিনি মানুষকে তাঁরই মত করে সৃষ্টি করেছেন। রুহানীক ছুরুতে। যার কারনে রূহ নশ্বর( যা দেখা ও ধরা-ছোয়া যায় না) । আসে আল্লাহর কাছ থেকে আর ফিরেও যায় আল্লাহর কাছে। এই কারণে তিনি বলেছেন যদি কেহ আমার সৃষ্টি আশরাফুল মাকলুকাতকে খুন করে; তাহলে সে আমাকেই খুন করলো।
এখন কি হচ্ছে চারিদিকে; শুধুই ক্ষমতার দ্বন্ধ, অর্থ লোভ, জাগতিক মোহ, নারী লোভসহ যাবতীয় অপকর্ম বা পাপই হচ্ছে ভেজালের কারণে। আল্লাহর কালামে মানুষের সৃষ্টি বাক্য যুক্ত করে কালাম হিসেবে ব্যবহারের কারণে। তৎকালীন এবং বর্তমান সময়ে আমাদের মধ্যে দুই ধরনের জ্ঞানী মানুষ বাস করে। একজন হলো সদ্দুকি টাইপের (যারা নিজেদের প্রয়োজনে খোদার কালামের সঙ্গে কিছু যুক্ত করে)। আরেক প্রকৃতি হলো ফরীসি (যারা নিজেদের প্রয়োজনে খোদার কালাম থেকে কিছু অংশ বাদ দেয়)। এই ফরীসি এবং সদ্দুকীর সংমিশ্রনে এখন আমাদের সমাজে, রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে এহেন খোদা বিরোধী কাজ হচ্চে। এখনই সময় এই ফরিসী এবং সদ্দুকী অবস্থা থেকে বের হয়ে আসার।
মাদক হল একটি বিশাল বর্ণনাত্বক রসালো এবং টলানোতে আকৃষ্ট বায়বীয় বস্তু। এই মাদক এখন সমাজের রন্দ্রে রন্দ্রে ছোবল মারছে। এই ধ্বংসাত্মক কাজটুকুও করছেন ঐ ভেজাল শ্রেণীর মানুষ জন। যাদের খোদার সঙ্গে আত্মিক বা রুহানীক কোন সম্পর্ক নেই। তারা মাদককে নিয়ন্ত্রন করে অর্থ, সম্পদ এবং মানুষের মনের উর্বর জায়গাটুকু দখল করে নেয়ার জন্য। যাতে করে ঐ দুষ্টশ্রেণী নিজেদেরকে কিং অব কিং বানাতে পারে। আসলে সকল কিংদেরই একদিন খালিহাতে ফিরে যেতে হবে রাজাদের রাজা এবং বাদশাদের বাদশাহের কাছে। আর তখনই দেখযাবে রাজত্ব ও বাদশাহীর করুন পরিণতি। সবাইতো জানে ফেরাউন (বাদশাহ) এর করুন পরিণতির কথা। ঠিক একই হবে আমাদের ক্ষেত্রেও। মহান খোদা তায়ালা বলেছেন তোমরা তোমাদের দেহকে পবিত্র রাখিও; কোন রকম মাদকে আসক্ত হয়ো না, মাদকের কাছে নিজেকে সারেন্ডার করো না; কারন আমি তোমার দেহেই বসবাস করি। মসজিদ, মন্দির ও গির্জায় নয়। তোমার দেহেই আমার বসবাস। সুতরাং তোমার দেহকে অপবিত্র করো না। বর্তমান সময়ে আমরা কি করছি এইসকল মাদকে নিজেকে সমর্পন করে খোদার সান্নিধ্য বঞ্চিত হচ্ছি এবং সপে দিচ্ছি পাপের কাছে। যাতে করে পাপ পুর্ণ করার জন্য সকল খারাপ কাজ আমাদের দ্বারা করিয়ে থাকে এবং শেষ পরিণতি হয় করুন মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে। খোদা তার কালামে বলেছেন, “তোমাদের দিলের কামনাই তোমাদেরকে ফাঁদে ফেলে; আর কামনা পূর্ণ হলে পাপের জন্ম হয়; পাপের পূর্ণ হলে তোমাদের মৃত্যু হয়।” আসুন সতর্ক হই এবং কামনা, লোভ, ফাঁদ, পাপ এই সকল থেকে সময় থাকতে পালাই।
ক্ষমতার মোহে অন্ধ হয়েই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদে লিপ্ত হয় আমাদের সমাজের এমনকি বিশ্বের প্রতিটি রাষ্ট্রের নির্বোধ শ্রেণী। যারা বলিদান হয় বা বিসর্জিত হয় তারাতো শিশুর চেয়েও অবুঝ কারণ তাদের বোধশক্তি বা বিবেক বিসর্জিত হয়েছে ভেজাল এবং মাদক নামক পাপের কাছে। তারা সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্য থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে শয়তানের প্ররোচনায় এইসকল ঘৃণিত ক্ষমার অযোগ্য কাজ করে যাচ্ছে। নিজের পরিবার-পরিজনকে বিপেদে ঠেলে দিয়ে নিজে পাপের গহ¦বরে নিমজ্জিত হচ্ছে। পৃথিবীতে শয়তানকে কেউ কোনদিন দেখেনি কিন্ত মুখরোচক বিভিন্ন গল্পের আভির্ভাব ঘটেছে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো ঐ শয়তানরূপী মানুষগুলি তাদের পাপের শলাকলা পূর্ণ করতে বিভিন্ন কৌশল এটে সমস্ত পৃথিবীকে অশান্তির রাজ্যে পরিণত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। সারা পৃথিবীতেই ঘটেছে জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। এর পেছনে কি কারণ? কারণ একটি ক্ষমতা। কিন্তু ক্ষমতাই কি শেষ? না এই মিথ্যার নেশাখুরী ক্ষমতার বাহাদুরি শেষ হয় মৃত্যুর মধ্যেদিয়ে। এখন কথা হলো সচেতনতা কি পারে এইসকল নৈরাজ্য ও ঘৃনিত কাজ থেকে মানুষকে বিরত রাখতে। হ্যা পারে কিন্তু এর জন্য পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র একযোগে কাজ করতে হবে। কোন একটিতে দুর্বলতা থাকলে সমস্যার বেড়াজাল থেকে বের হওয়া যাবে না। সাময়িকভাবে গেলেও তা বেশীদিন স্থায়ী হবে না। আল্লাহ আমাদেরকে জ্ঞান দিয়েছে এবং এই জ্ঞান ব্যবহারের সুযোগও দিয়েছে। এখন সময় সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সকলের সমন্বয়ে একযোগে কাজ করে যাওয়া। আমাদের দেশের জনগন ও সরকার একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমন্বয়ের আভাব রয়েছে। যেমন শুরুটা করতে হবে পরিবার থেকে, তারপর সমাজ, তারপরে সরকারের সঙ্গে। তাহলে আরেকটু ফলপ্রসু হবে বলে মনে হয়। সরকার চাইলেইতো হবে না কারণ পরিবার এবং সমাজের সহযোগীতা অব্যাহত রাখতে হবে।
যারা দুষ্ট চরিত্র, দেশের, দশের, জনগণের এমনকি আপনার এবং আমার সকলের শত্রু । তাদেরকে চিহ্নিত করে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে যাতে ঐসকল লোকদের আর বেচেঁ থাকার কোন সুযোগ না থাকে। যদিও কেউ বাঁচতে চাই, তাহলে সে যেন দেশ ছেড়ে সন্ত্রাস, দুর্ণিতি, মাদক, ভেজাল যেখানে বিরাজমান সেখানে বসবাস শুরু করে। বাংলাদেশ শান্তিপ্রীয় সহবস্থানের দেশ এবং এই দেশে শান্তি এবং সহাবস্থান বিরাজিত থাকবে। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, ভেজাল, দুর্নীতি, মাদক এর পিছনে এই দেশে যারাই কাজ করুক না কেন তা থেকে বের হওয়ার জন্য জনসচেতনতা একেবারে পরিবার থেকেই বৃদ্ধি করতে হবে। প্রশাসনিক সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করতে হবে। বেতন বেড়েছে কিন্তু মন, ইমান ও নৈতিকতা বাড়েনি বা পরিবর্তন হয়নি। তাই সকলেই সজাগ থেকে কাজ করতে হবে, যার যার অধিকার আদায় করণার্থে যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি এখানেও আমরা সফল হবো। রক্ত ঝড়ছে, মানুষ মরছে কিন্তু এর শেষ হুবই কাছে।
যারা এই বিপথ গামীতার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এবং যারা যুক্ত করছে তারা সবাই অপরাধি তাই যুক্ত হওয়া লোকদের যে পরিণতি হয়েছে এবং হবে ঠিক এই পরিণতি যদি যুক্ত কারীকে করা হয় এমনকি উভয়ের আত্মীয়স্বজনকেও শাস্তির আওতায় এসে কঠিন বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। আমি বলতে চাই জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদক, ভোজাল ও দুর্নিতীর সঙ্গে যুক্ত কারা, দেশীয় পরিক্রমায় সম্পুর্ণ াজনৈতিক এজেন্ডা নিয়েই ওরা এই সকল কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বিএনপি-জামাত জোটের মাধ্যমে এইসকল কাজ সম্পন্ন হচ্ছে। পাশাপাশি যুক্ত হচ্ছে বুদ্ধিজীবি নামে খ্যাত সুশিল সমাজের বুদ্ধি বেশ্যা বা সুশিল বেশ্যারা। তারা তাদের অসং উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্যই এই সকল কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। মাদক, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, ভোজাল একই সুত্রে গাঁথা এবং একই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে। তাদের এখনই সময় ঐসকল নেতাদের বুঝিয়ে শুনিয়ে ভয়ঙ্কর বিপথগামীতা থেকে ফিরিয়ে আনার। যদি কেহ এখনও ফিরে না আসে তাহলে বিপথগামীদের তালিকায় নাম উঠিয়ে চীরতরে শেষ করে দিতে হবে। আর যেন একটি তাজা প্রাণও অল্প বয়সে শেষ না হয় সেদিকে এখন থেকে পরিবার সমাজ এবং রাষ্ট্রের একযোগে কাজ করতে হবে।
আমরা আশা করি আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও উন্নয়নে ভরপুর রাষ্ট্রের জন্য উন্নত বিশ্বের আদলে কাজ করে যেতে হবে। আমারে বাংলাদেশ ফেসবুক ফ্রেন্ডস্ সোসাইটির কর্মসুচী বাস্তবায়নার্থে একযোগে কাজ করে যাওয়া এখন সময়ের দাবী। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ চীরজিবী হউক।