গল্প নয় সত্য

এ, টি, এম আবু আসাদ
পরিচালক
বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস, ঢাকা।

এ রকম বৈচিত্রময় অসংখ্য ঘটনার স্বাক্ষী আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিস যার বর্ণনা দিতে গেলে এ লেখাটি পুস্তিকায় পরিনত হবে। কোন গাড়ী চালক যতই দক্ষ হোক না কেন, পথচারী বা অন্য গাড়ী চালকের ভুলে ধর্ঘটনা ঘটতেই পারে। তদ্রুপ “পাসপোর্ট নাগরিক অধিকার, নি:স্বার্থ সেবাই অঙ্গীকার” এ মন্ত্রে যতই আমরা উজ্জীবিত হয়ে কাজ করি না কেন ফাহমিদা-নাজমার মত আবেদনকারীদের পাসপোর্ট পাওয়ার ভোগান্তি থেকে রক্ষা করতে পারবো না যতদিন না তারা নিজেরাই সচেতন হন।
তথ্য পরিবর্তন কিংবা মিথ্যা তথ্য দিয়ে পাসপোর্ট তৈরীর ফলে বিদেশী দূতাবাসগুলোর নিকট বাংলাদেশ পাসপোর্টের উপর ক্রমান্বয়ে আস্তাহীনতা ও সন্দেহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে রাষ্ট্রের সম্মানিত ব্যক্তিরাও অনেক সময় বিদেশ ভ্রমনে গিয়ে অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়েন। বাংলাদেশ পাসপোর্টে বর্ণিত তথ্যে  আস্থা রাখতে না পেরে অনেক বিদেশী দূতাবাস ভিসা দেয়ার পূর্বে বাংলাদেশী পরিবারের সদস্যদের ডি,এন,এ, টেষ্ট করে রক্তের সম্পর্ক নির্ণয় পূর্বক ভিসা দিচ্ছেন। যা আমাদের জন্য অবমাননাকরও বটে! ২০/০২/২০১৭ খ্রি: তারিখের “দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন’ পত্রিকায়  “তীব্র ভিসা ভোগান্তিতে বাংলাদেশ” শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদদাতা জনাব জুলকার নাইন গুরুত্বপূর্ণ ও তথ্য ভিত্তিক দীর্ঘ প্রতিবেদনে ‘বিশ্বের সর্বাধিক ট্যুরিষ্টের দেশে নিষিদ্ধ বাংলাদেশ,’ ‘অন- অ্যারাইভালের দেশগুলোতে বাংলাদেশী পাসপোর্ট দেখলেই ভোগান্তি’ এবং ‘এক ডজনের বেশী দেশে বন্ধ ওয়ার্ক ভিসা’ বিষয়গুলো বিশেষভাবে উল্লেখ করেন।
দৃশ্যত: আমাদের পাসপোর্টের রং লাল, নীল, সবুজ হলেও ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সদস্য হিসেবে আমাদের কাছে সব “বাংলাদেশ পাসপোর্ট” এর অন্তর্নিহিত রঙ “রক্ত লাল” যা আমরা অর্জন করেছি লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে। এ অমূল্য সম্পদের মর্যাদা রক্ষায় আমরা প্রত্যয়, আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। প্রয়োজন সকলের সচেতনতা ও সহযোগীতা।
আমার এ লেখার প্রথমাংশে পাসপোর্টে তথ্য গরমিল হলে অর্থাৎ একেক সময় একেক তথ্যে পাসপোর্ট করে বিদেশ ভ্রমনেচ্ছুদের বিড়ম্বনার কথা এবং এর মাধ্যমে বাংলাদেশ পাসপোর্ট এর মর্যাদাহানির কথা প্রকারান্তরে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের মর্যাদাহানীর কথাটি বুঝানোর চেষ্টা করেছি। আর শেষে বিদেশে যাওয়ার অদম্য বাসনায় এদেশের কিছু অসচেতন নাগরিকের অপকৌশল ও তাতে সৃষ্ট বিড়ম্বনার কথাটিই বুঝানোর চেষ্টা করেছি।
এ লেখার উদ্দেশ্য কাউকে হেয় করা নয়; সজাগ ও সচেতন করাই মূল লক্ষ্য। দেশবাসী যেমন সত্য ও সঠিক তথ্যের পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশ যান, বিদেশে দেশের মর্যাদা সমুন্নত রাখেন এবং মার্তৃভূমি বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.