তাজুল ইসলাম (হানিফ):- কিছু জুনিয়র কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাই যেন সরকারের সুনাম ক্ষুন্ন করার কাজে ব্যতিব্যস্ত। কেননা, বাংলাদেশের আমজনতা যখন প্রত্যক্ষ করছে বিশ্বব্যাংক কে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে বাংলাদেশ তাঁর স্বঅর্থায়নে বঙ্গবন্ধুর তনয়া, সফল প্রধানমন্ত্রী, যিনি ইতিমধ্যেই বিশ্বে সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসাবে সুপরিচিতি লাভ করেছেন জননেত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়তায় পদ্মা সেতুর মত মেগা প্রজেক্টের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে, স্বপ্নের উড়াল সেতুর সুবিধাভোগীগণ ঢাকাবাসীকে তুলনা করে বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রের সাথে, সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে যখন এনেছেন আমুল পরিবর্তন ও সংস্কার, যুদ্ধঅপরাধী, রাষ্ট্রবিরোধী কিংবা মানবতাবিরোধীদের বিরুদ্ধে চরম সাহসিকতা ও দৃঢ়তায় বিচারকার্জ ও বাস্তবায়নে এগিয়ে চলেছেন দুর্বার গতিতে, সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন ভাতা প্রায় ১২৩ শতাংশের মত বাড়ীয়ে অর্থনীতির সক্ষমতার কথা জানান দিলেন।
অভূতপুর্ব শিক্ষাক্ষেত্রে ভূয়সী প্রশংসা কুড়িয়েছেন যোগ্য পিতার যোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা নিজেও। তাঁর পিতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেখানে স্বাধীনতার পর পরই ১৯৭৩ সালে একসঙ্গে ৩৬ হাজার ১৬৫টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেছিলেন। তখন এক লাখ ৫৫ হাজার ২৩ জন শিক্ষক সরকারি হন।
আর জননেত্রী শেখ হাসিনা ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সরকারীকরন করেছেন এবং একই সাথে প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে কলেজ ও একটি করে উচ্চবিদ্যালয়কে (যে সব উপজেলায় সরকারী কলেজ ও সরকারী উচ্চবিদ্যালয় নেই ) সরকারীকরনের মাধ্যমে জাতির শিক্ষাকে সহজলভ্য করার ধারপ্রান্তে আর ঠিক সেই মুহূর্তেই পরিকল্পিতভাবে কিছু জুনিয়র কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাই নানা ছলচাতুরীর মাধ্যমে কাজটিকে ডিলেমি ও অসৎ উদ্যেশে লিপ্ত। তারা যখন দেখছেন প্রায় ২৭৬টি কলেজের সরকারী যাচাই বাছাই ও হিসাব নিকাশ শেষ।
জি. ও. জারির মাধ্যমে সরকার জানান দেবে যে আজ থেকে ২৭৬টি বেসরকারি কলেজকে সরকারীকরন করা হল এবং বাকীগুলো ও প্রকিয়াধীন আর ঠিক সেই মুহূর্তেই কিছু অসাধুরা সরকারকে পথ দেখাচ্ছেন ২০১৬/১৭ বর্ষে ১০০ কলেজ , ২০১৭/১৮ বর্ষে ১০০ কলেজ ও ২০১৮/১৯ বর্ষে বাকী কলেজগুলোকে সরকারীকরন করা যেতে পারে বলে শিক্ষামন্ত্রনালয়কে আবার একটি চিঠি পাঠায়। যদিও, অর্থমন্ত্রানালয় ১৫ ই ফেব্রুয়ারী, ২০১৭ শিক্ষামন্ত্রানালয় কে একটি চিঠির মাধ্যমে জানান যে, ২৭৫ টি বেসরকারি কলেজকে জাতীয়করণে অর্থ ছাড়ে সম্মত হয়েছে। চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয় যে, জাতীয়করণের প্রক্রিয়াধীন থাকা এসব কলেজে এমপিওভুক্ত ১২ হাজার ৪৫৩ জন শিক্ষক-কর্মচারীর বিপরীতে বছরে অতিরিক্ত খরচ হবে ৪শ ৫২ কোটি ২৮ লাখ ৯৮ হাজার ৭৮৬ টাকা। আর এমপিওবহির্ভূত শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন ৪ হাজার ৪৬৫ জন। এদের জন্য খরচ হবে ১৭৪ কোটি ৬৪ লাখ ৬৩ হাজার ৮৬২ টাকা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয়করণের লক্ষ্যে সম্মতি দিয়ে এ পর্যন্ত ২৯৩টি বেসরকারি কলেজের তালিকা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন। এর মধ্যে ২৭৬টি কলেজে বছরে অতিরিক্ত খরচের হিসাব বের করতে পেরেছে মন্ত্রণালয়। বর্তমানে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের সরকার শুধু বেতন দেয়। জাতীয়করণ করা হলে তারা নতুন হিসেবে বেতন-ভাতা, বাড়ীভাড়া ও অন্যান্য সুবিধা পাবেন। আর ননএমপিওদের এখন সরকার কোনো বেতন দেয় না। তাদের চাকরি সরকারি হলে তারাও বেতন-ভাতা পাবেন।
এত কিছুর পরও কিছু অসাধু জুনিয়র কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা লিপ্ত অন্য খেলায়। তাঁরা ঐ খেলার মাধ্যমে হাতিয়ে নিতে চাই লক্ষ লক্ষ টাকা এবং অভিযোগ উঠছে যে বানিজ্যের পাঁয়তারা করছেন কিছু ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের কতৃপ্রক্ষের সাথে যে, কোন কোন প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারীকরন আগে হবে কিংবা কোনগুলো পরে হবে এই নিয়ে দরকষাকষি চক্রান্তে লিপ্ত। যার মাধ্যমে শিক্ষক সমাজে অসন্তোষ ছড়িয়ে দিতে চাই।
অন্যদিকে, চরম উৎকণ্ঠায় দিনযাপন করছেন ছাত্রছাত্রীরা, কবে তাদের কাঙ্খিত ফল অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানটি সরকারীকরন করা হবে, একই সাথে অনেক শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একাংশ চলে যাবে অবসরে, তাঁদের উৎকণ্ঠা তাঁরা কি তাহলে পেশা জীবনের চরমপ্রাপ্তিটা “সরকারীকরনের সুযোগটি” পাবে না !
বিষয়টি অতীব মানবিক ও গুরুত্ত্বের সহিদ বিবেচনার দাবী রাখে যথাযথ কতৃপ্রক্ষের।
পরিশেষে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষাসচিব মহোদয়, মাউশির মহাপরিচালক মহোদয় সহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রতি আকুল আবেদন ও বিশেষ অনুরোধ ঐ অসাধুদের অসৎ উদ্দেশ্যকে দূরে ঠেলে দিয়ে সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার দৃঢ়তায় একসাথেই প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে কলেজ সরকারীকরনের জি. ও. জারি করা হওক বলে প্রায় ৬ লক্ষাদিক ছাত্রছাত্রী, প্রায় ১৭ হাজার শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং সর্বোপারি ১৬ কোটি মানুষের প্রানের দাবী।