ইসরাত জাহান লাকী॥ শান্তিতে নোবেল বিজয়ী এবং শিশু অধিকার কর্মী কৈলাস সত্যার্থী লিঙ্গ অসমতা দূর করে নারী ও শিশুদের উন্নয়নের পদক্ষেপের জন্য বাংলাদেশ সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আগে একটি সাধারণ ধারণা প্রচলিত ছিল যে, এনজিওগুলো শুধু শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন ও শিশুদের নিয়ে কাজ করে। কিন্তু, বর্তমানে বাংলাদেশে এই ধারণা বদলেছে।’ তিনি সোমবার সন্ধ্যায় গণভবনে প্রধানমসন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এ কথা বলেন। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান, কৈলাস বলেছেন, ‘বাংলাদেশই দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে লিঙ্গ অসমতা দূরীকরণে সবচেয়ে ভালো সাফল্য প্রদর্শন করেছে।’
প্রেস সচিব বলেন, কৈলাস সত্যার্থী বাংলাদেশের শিশু পাচার রোধে পদক্ষেপসমূহেও সন্তোষ প্রকাশ করে এ প্রসংগে একটি ঘটনার উল্লেখ করেন, যেখানে পাচারের শিকার মুসলিম পরিবারের সন্তান নূর মোহাম্মদ ভারতে পাচারের পর পাঁচবার হাত বদল হয়। পরে রাজকুমার নামের এক পুলিশ কর্মকর্তা তাকে উদ্ধার করেন। কৈলাস সত্যার্থী প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন লেখনি ও নিবন্ধ বিশেষ করে শিশু ও পথশিশুদের নিয়ে লেখার প্রশংসা করেন। তিনি এ সময় বেসরকারি টিভি চ্যানেল চ্যানেল-আই’র ‘স্বর্ণ কিশোরী’ অনুষ্ঠানটিরও প্রশংসা করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষাকে বাংলাদেশে বাধ্যতামূলক করার অগ্রপথিক ছিলেন। আমরা কেবল তাঁর পদাঙ্কই অনুসরণ করছি। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা খাতের অগ্রগতি এবং ঝরেপড়া রোধসহ শতভাগ বিদ্যালয়ে গমন নিশ্চিত করতে তাঁর সরকারের গৃহীত পদক্ষেপসমূহের উল্লেখযোগ্য দিক তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী এ সময় তাঁর সরকারের উদ্যোগে বছরের প্রথম দিন প্রাইমারী থেকে মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণের তথ্যও তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় প্রাইমারী স্কুল পর্যায়ের শিক্ষক পদে নারীদের জন্য কোটা রাখায় দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শতকরা ৬০ ভাগই নারী শিক্ষক উল্লেখ করে ‘মায়ের হাসি’ নামক প্রকল্পের সাহায্যে মাসের শুরুতেই ১ কোটি ৩০ লাখ শিক্ষার্থীর মায়ের মোবাইল ফোনের সাহায্যে টাকা পৌঁছে দেয়ার কথাও উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার বিশ্বাস করে দারিদ্র্য বিমোচন এবং উন্নয়নের জন্য শিক্ষাই মূল চালিকাশক্তি।
প্রধানমন্ত্রী উগ্র চরমপন্থা এবং মাদকাসক্তি প্রতিরোধে তাঁর সরকারের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে এই সামাজিক ব্যাধির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম এবং প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন উপস্থিত ছিলেন।