ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার নিমবাড়ি গ্রামে দুপক্ষের সংঘর্ষে রহিজ মিয়া নামক এক ব্যক্তি নিহত হওয়ার ওই গ্রামটি এখন পুরুষশুন্য। দিবারাত টহল দিচ্ছে পুলিশ। সুদন গ্রুপের লাঠিয়ালরা সুযোগ পেলেই পুলিশের চোখ ফাকি দিয়ে সর্বস্ব লুটে নিচ্ছে জামসেদ গ্রুপের লোকজনের বাড়িঘর। গ্রামের স্কুল-মাদরাসা মক্তব সবকিছু বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
গত সোমবার ১০ এপ্রিল নিমবাড়ি গ্রামে গোষ্ঠিগত আধিপত্য নিয়ে সংঘর্ষে গত সোমবার সকালে রহিজ মিয়া (৫৭) নামক এক ব্যক্তি খুন ও ৭ জন মারাত্মক জখম হলে এলাকার পরিস্থিতি ভয়ানক অবনতি ঘটে। গ্রামের লোকজন ও কসবা থানা সূত্রে জানা যায় গত ইউপি নির্বাচনের পর থেকে গ্রামের সুধন হাজী ও জামসেদ হাজীর গোষ্ঠির মধ্যে মতবিরোধকে কেন্দ্র করে এই দুই গোষ্ঠির মধ্যে এ যাবত কয়েকবার মারামারি হয়েছে। গত ২০ মার্চ সুদন হাজীর লোকেরা জামসেদ মিয়ার লোকজনের বাড়ি ঘর ভাংচুর করে। এতে দুপক্ষের মামলা হয়েছিলো। কসবা থানা ওসি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট মো.আনিসুল হক ভূইয়া জানান, মাত্র ২০/২৫ দিন পূর্বে কসবা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট দুপক্ষ কথা দিয়েছিলো যে তারা আর কখনো সংঘর্ষে লিপ্ত হবে না। কিন্তু গত সোমবার (১০ এপ্রিল) পূর্বের ঘটনার জের ধরে উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হলে কসবা থানা পুলিশ তাদের নিবৃত করার চেষ্টা করে। এ সময় উভয় পক্ষের লোকজন পুলিশের উপর হামলা চালায়। এতে এস.আই আশরাফ কামাল সহ ৩ পুলিশ আহত হয়। কর্তব্যরত পুলিশ নিজেদের জানমাল ও সরকারী সম্পত্তি রক্ষা করতে গিয়ে ২৫ রাউন্ড শর্টগানের কার্তুজ ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
ঘটনাস্থল থেকে মারাত্মক জখমী রহিজ (৫৭) কে ব্রাহ্মণবাড়িয়া হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে সে মারা যায়। এ ব্যাপারে তার স্ত্রী নার্গীছ বেগম (৩২) ১৭ জন কে আসামী করে কসবা থানায় গত সোমবার রাতে মামলা দায়ের করেছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ উভয় পক্ষের ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে। এদের মধ্যে সাইমুন (২৫) নামক এক যুবক হত্যা মামলার আসামী। পুলিশের পক্ষ থেকেও উপ-পরিদর্শক আশরাফ কামাল বাদী হয়ে নির্দিষ্ট ৪৯ জন সহ প্রায় ৩০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে মামলা রুজু করেন। সর্বশেষ খবরে জানা যায় বর্তমানে নিমবাড়ি গ্রাম পুরুষশুন্য অবস্থায় আছে। গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।