নজরুল ইসলাম॥ আজ থেকে ঠিক ৪ বছর আগে ২০১৩ সালের ১১ই এপ্রিল ফটিকছড়ির ভুজপুরে অর্শতাধিক মানুষ হতাহত হয়েছিল শুধুমাত্র জয় বাংলার আদর্শে বিশ্বাসী হবার অপরাধে। ধর্মান্ধ মৌলবাদী পাকিস্তানপন্থী শিবিরের জঙ্গীরা অর্তকিতে হামলা চালিয়ে পিটিয়ে-কুপিয়ে আহত ও নিহত করেছিল নিরপরাধ নিরস্ত্র মানুষগুলোকে। পাওয়া গিয়েছিল স্রেফ রুবেল, ফারুক ইকবাল, ফোরকানের লাশ। অসংখ্য মানুষ নিখোঁজ ছিল, তাদের লাশ আজো খুঁজে পাওয়া যায়নি। আহত হয়েছিলো অসংখ্য নেতাকর্মী। অদ্ভুত হলেও সত্য, এই রোমহর্ষক ঘটনাটি এবং নিখোঁজদের ব্যাপারে পুরোপুরি চেপে গিয়েছিল মিডিয়া এবং স্থানীয় প্রশাসন। অবশ্য পাকিস্তানী শুয়োর রাজাকার সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরীর ঘাঁটি ফটিকছড়ির মিনি পাকিস্তানে এমনই হবার কথা!
সেদিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ওয়ার্ডের বেডগুলোর পাশাপাশি ফ্লোর-বারান্দা ছিলো আহত রোগীতে ভরপুর। যুদ্ধাপরাধী জামাত-শিবির-রাজাকার ও তাদের দোসর হেফাজতে ইসলাম নামক জঙ্গীদের অযৌক্তিক হরতাল-তান্ডব-নৈরাজ্যের প্রতিবাদে যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বেরিয়েছিল হরতালবিরোধী মিছিল করতে।
নানুপুর-বখতপুর-ধর্মপুর-জাফতনগর ইউনিয়নের প্রায় হাজার খানেক ছাত্র-যুবক-জনতা ৩ শতাধিক মোটর সাইকেল এবং বেশ কয়েকটি কার-মাইক্রো-বাস নিয়ে তাদের নিজ এলাকা থেকে শুরু করে জামাত-শিবির-হেফাজত বিরোধী প্রতিবাদের স্লোগানগুলো পৌছে দিতে চেয়েছিল সারা ফটিকছড়ি জুড়ে।
শান্তিপূর্ন সুশৃঙ্খল হরতালবিরোধী মিছিলটি ভুজপুর কাজীরহাট বাজারে ঢুকতেই জামাত শিবির ও তার দোসর হেফাজতের জঙ্গীরা মাদ্রাসা-মসজিদের মাইকে ‘সন্ত্রাসীরা মাদ্রাসায় হামলা করছে’ বলে মিথ্যাচার করে, গুজব ছড়ায়।
বিভ্রান্ত এলাকাবাসীদের সাথে হেফাজত-জামাত-বিএনপি জঙ্গীরা সম্পূর্ন পরিকল্পিতভাবে মোটরসাইকেল, পিকআপ ও গাড়ীবহরে চতুর্দিক থেকে অতর্কিতে হামলা করে। আল্লাহু আকবর স্লোগান দিয়ে কোপাতে থাকে নির্বিচারে, আশেপাশে পালিয়েও সেদিন বাঁচতে পারেনি কেউ। একটা স্কুল ঘরের ভেতর আশ্রয় নিয়েছিল কয়েকজন, তাদের কুপিয়ে আর জবাই করে ফালাফালা করেছিল শিবিরের রক্তপিপাসু নরপিশাচেরা। সম্পূর্ন নিরস্ত্র ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মীরা পিছিয়ে যেতে পারেনি বাজারের আগের ব্রিজের প্লেটগুলো তুলে ফেলার কারনে। নির্মম-নৃশংস ভাবে চারদিক থেকে দা, ছুরি, লাঠি, রাম দা সহ বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে-পিটিয়ে-জখম করে ছাত্র-যুবক ভাইদের। জীবন বাঁচানোর জন্য এদিক-সেদিক পালিয়ে / কারো ঘরে গিয়েও কেউ রক্ষা পায় নাই, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহতদের দ্বিতীয় দফায় আবারো ধারালো দা-বটি দিয়ে আঘাত করে মহিলারা, জীবন বাঁচাতে স্কুলে আশ্রয় নেয়া বিপুল, ফোরকান, ফারুক কে পিটিয়ে হত্যা করে অমানবিক ভাবে।
জঙ্গীরা জ্বালিয়ে দিয়েছে প্রায় ২৪৭টা মটর সাইকেল, মাইক্রো, হাইস, জিপ, কারসহ ২০টিরও বেশি গাড়ি। আগুন নেভানোর জন্য আসা ফায়ার সার্ভিসের গাড়ীও রক্ষা পায় নাই এই হামলা থেকে …ফটিকছড়িতে আজকের এই দিনে জামাত শিবিরের জঙ্গীদের হামলায় নিহত এবং যুগে যুগে আওয়ামী লীগের জন্য প্রাণ দেয়া সকল নেতা কর্মীদের জানাই গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।