মোহাম্মদ শাহাদাত॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ইসলাম ধর্মের নামে মানুষ মেরে, নিজে মরে জান্নাতে যাওয়া যায় না। ইসলাম ধর্ম শান্তির কথা বলে, ভ্রাতৃত্বে কথা বলে, উন্নয়নের কথা বলে। গত বৃহস্পতিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সৌদি সরকারের উদ্যোগে আয়োজিত সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ বিরোধী ওলামা সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসলাম ধর্ম জঙ্গিবাদকে সমর্থন দেয় না। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিটি মানুষকে সজাগ থাকতে হবে। এজন্য প্রত্যেক মসজিদের ইমাম, ধর্মীয় শিক্ষক, সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকবৃন্দকে সজাগ থাকতে হবে। বাবা-মাকে নিজের সন্তানের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে যাতে কেউ জঙ্গিবাদে না জড়াতে পারে। তিনি বলেন, ইসলাম সব সময় অত্যন্ত মানবতাবাদে বিশ্বাস করে, শান্তিকে বিশ্বাস করে। এ ধর্ম উন্নতির পথে এগিয়ে যাওয়ার ধর্ম। ইসলাম শিক্ষা দেয় অন্যের প্রতি সাহায্য করতে, এতিমদের সাহায্য করতে।
জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদ বর্তমান সারাবিশ্বের সমস্যা। আমাদের সরকার জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কার্যকরি পদক্ষেপ নিয়েছে, শক্তভাবে সন্ত্রাসবাদ দমন করছে।
প্রধানমন্ত্রী সৌদি বাদশাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ সব সময় জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ছিল এখনো আছে। সারাবিশ্বের সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সৌদি বাদশার মুসলমানদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ তৈরির যে উদ্যোগ নিয়েছেন, আমি তাকে সাধুবাদ জানাই। তিনি জঙ্গিবাদ দমনে সৌদির সাথে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার করেন। তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদে লাভবান হয় অস্ত্র ব্যবসায়ীরা। মুসলমানেরা মরছে আর অন্যরা লাভবান হচ্ছে। এ পথে বিশ্বে শান্তি ফিরে আসবে না। শান্তির বাণী প্রচার করা প্রত্যেকটি মানুষের দায়িত।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার ইমাম মুয়াজ্জিনদের জন্য কল্যান ট্রাস্ট গঠন করেছে। যাতে করে তাঁরা আর্থিক সুবিধা পেতে পারেন। এই কল্যাণ ট্রাস্ট থেতে বিনামূল্যে ঋণ দেয়া হচ্ছে। ১ লক্ষ ৭৫ হাজার আলেমকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। মসজিদগুলোতে পাঠাগার স্থাপনের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে ২৮৭৪২টি মসজিদে পাঠাগার স্থাপন করা হয়েছে। কোরআন শরীফকে ডিজিটাল করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূলে ৫ লক্ষ ১৫ হাজার কোরআন শরীফ বিতরণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, পৃথিবীর নানা দেশে মুসলমানদের নানা বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হচ্ছে। আজ মুসলমানদের নামের সাথে জঙ্গিবাদ শব্দ জুড়ে দিয়েছে, যা কাম্য নয়। কয়েকজন মানুষের জন্য ধর্মপ্রাণ মানুষকে হেয় করা যাবে না। অনুষ্ঠানে মসজিদুল হারাম ও মসজিদুল নববীর ইমাম উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।