একটি ভাল কাজের প্রারম্ভে যে কাজটি করতে হয় তা হলো সিদ্ধান্ত নেয়া। এই সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজন মতামত গ্রহণ এবং তিন মাথার মানুযজনদের সাহায্য ও পরামর্শ নেয়া, তারপরেই দরকার সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে সমন্বয় সাধনের জন্য সামষ্টিক এবং খুব গনিষ্ঠভাবে যোগাযোগ। এই নিবির যোগাযোগসহ সার্বিক পর্যবেক্ষণেই সিদ্ধান্ত গ্রহণের সিদ্ধান্তে পৌঁছা সম্ভব। সিদ্ধান্তে পৌঁছার প্রাক্কালেই এর বাস্তবায়নের জন্য পদক্ষেপ গ্রহন ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সকলের ঐক্য ও সমন্বয় প্রয়োজন। আর সেই ঐক্য ও সমন্বয়ের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সম্ভব এবং ফলপ্রসুতা দৃশ্যমান হওয়া বা প্রত্যক্ষ করা যায়।
কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে ঘটে এর বিপরীত। আর এই বিপরীত বাস্তবতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে গিয়ে যত ভাল সিদ্ধান্তই হোক না কেন তা বাস্তবে আলোর মুখ দেখে না। বরং হাসির পাত্র বা সমালোচনার মুখে পড়া ছাড়া আর কি? এইতো গণপরিবহনের একটি বিরাট সমস্যা যা সিটিং সার্ভিস বলে নিরীহ নিরুপায় জনতার সাথে চিটিংই করে যাচ্ছিল। আমি সহজে গণ পরিবহণে যাতায়ত করি না শুধু লোখমুখে শুনে এর বাস্তবতা অনুধাবন করার জন্য সারা ঢাকার সকল গণ-পরিবহনে বিচরণ করেছি এবং প্রকৃত সত্য উপলব্দি করেই জোড় দিয়ে বলছি সরকার একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপই নিয়েছিল কিন্তু সেই পদক্ষেপে জনতার সাড়াও ছিল। কিন্তু পথিমধ্যে এর যবনীকাপাত ঘটা বড়ই দু:খের। এর পিছনের কারন উদঘাটনে মনে হয় যোগাযোগ ও সমন্বয়ের অভাব ছিল। সেই কারণেই আলোর মুখ দেখা যোগোপযোগী সিদ্ধান্ত মুখ থুবরে পড়েছে। এখনও সময় আছে নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করে সরকারী বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে সার্বিক কর্মসূচী নিয়ে এগুলে কামিয়াবী হাছিল হবে। তড়িঘরি করে সিদ্ধান্ত না নিয়ে বরং সময় নিয়ে সকলের ঐক্যমতে এগিয়ে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
এখানে সিদ্ধান্তহীনতা ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যে দৈন্যতা দেখা দেয় তার ফলে ভাবমূর্তীসহ দলীয় ঐক্যের সমন্বয়ের ঘাটতিই বেশী প্রতিফলিত হয়। পাশাপাশি ক্ষমতা ব্যবহারে বেশী-কম ক্ষমতার দ্বন্ধের লক্ষণও প্রতিয়মান হয়। এই বর্ষীয়ান নেতা শ্রদ্ধেয় ওবায়দুল কাদের সাহেব মাফ বা ক্ষমা চাওয়ার যে সংস্কৃতি চালু করতে চাইছেন তা ভাল কিন্তু ওনার মত পর্যায়ের নেতাদের মুখে তা শোভা পায় না। কেন আমরা মন্দলোকের ফাঁদে পা দিব এবং তাদের উচ্চারিত উপাধি নিজেরা ব্যবহার করে আরো হাস্যরতাত্মক কথার অবতারণা করব। বরং ঐসকল ঘুণেধরা মানুষদের কথার জন্য জ্ঞান ও গরীমার পাশাপাশি সুশৃঙ্খল মার্জিত ভাষার চর্চার প্রয়োগ ঘটিয়ে সকলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে প্রয়াস চালানোর মত পদক্ষেপ নেয়ায় শ্রেয়। একদিকে কাদের সাহেবের হম্বি-তম্বি, অন্যদিকে শ্রদ্ধেয় ফারুক সাহেবের প্রথিতযথা কথামলার ফুলঝুড়ি বরং দলীয় কোন্দল বা অশ্রদ্ধার প্রতিলক্ষণই প্রতিয়মান হয়।
মনের ভিতর ক্ষোভ থাকবে এবং সেই ক্ষোভের প্রশমনের জন্য ঐকান্তে বা নির্ভৃতে বসে ঝামেলা শেষ করব এটাইতো রাজনীতির শিষ্টাচার হওয়ার কথা। কিন্তু ইদানিং দেখি মিডিয়ার মাধ্যমে রাগ, হুঙ্কার, কথার পিঠে কথা ভেসে আসে আম জনতার কানে। কিন্তু মানুষতো আপনাদেরকে অনুসরণ করে। আর তাই আদর্শ ও শিষ্টাচার ঐক্যবিনষ্টকারী আচার-ব্যবহার ও কথন বন্ধ করা জরুরী। পাশাপশি যদি নিজস্ব উদ্যোগে সমস্যার সমাধান না হয় তাহলে অভিভাবক আমাদের সকলের এবং নিজ যোগ্যতায় বিশ্ব নের্তৃত্বের উচ্চাসনে অধিষ্ঠিত বঙ্গবন্ধুর যোগ্য উত্তরসূরী মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মরণাপন্ন হউন এবং দিক্ষা নিয়ে ঐক্য এবং ঐক্যের বলয়ে এগিয়ে যান, কথা বলুন, আচার-আচারনে প্রকাশ করুন। মনে রাখবেন এখন ডিজিটাল কল্যাণে সবই প্রকাশিত এবং জনগণের সামনে চুলছেড়া বিশ্লেষণে আগামীর করণীয় হবে বিশেষ সুবিধা ও অসুবিধার দোলনচলে প্রনিধানযোগ্য। আমাদের মিনতি আপনারা নিজস্ব গন্ডি থেকে বেড় হউন এবং বৃহত্তর স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থেকে আপনাদের নয় আমাদের জন্য এগিয়ে যান।
আগামীর সোনালী সুর্য্যকে বহমান রাখার দায়িত্ব সকলের এবং এই লক্ষ্যে সকলকে নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। মনের ভিন্নতা এবং স্বার্থের জলাঞ্জলি দিয়ে সামনে এগুতে হবে বৃহত্তর কল্যানের স্বার্থে। দলের নেতা-কর্মী থেকে সাধারন সমর্থক পর্যন্ত যেন সম মর্যাদায় ও একটি পরিবার হয়ে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা নিয়ে এগিয়ে যেতে পারে সেই প্রয়াস চালানোর এখনি মোক্ষম সময়। মিডিয়ার সামনে কথা বলায় আরো সচেতন এবং মার্জিত হলে সার্বিক মঙ্গল এবং আগামীর ইতিবাচক দৃষ্টান্ত বহন করবে। নতুবা শাসন করা তারই সাজে সোহাগ করে যে, ছোটবেলার সেই বুলি আজও আমাদের সকলেরই কানে বাজে, হৃদয়ে দোলা দেয়। কিন্তু সোহাগ ব্যতিত শাসন করাই যেন এখন আমাদের স্বভাবে চেপে বসেছে। অনেক হুমকি ও ধমকি এবং ফাকা আওয়াজে আজ কান যখন প্রায় বন্ধ হয়ে আসছে ঠিক সেই সময়ে আবার নতুন রুপে রাজনীতিতে শাসন শব্দটি স্থান করে নিতে চাইছে। কিন্তু এই ডিজিটাল যুগে যে শাসন প্রত্যাশা সেই শাসনের অভাব পরিলক্ষিত হয় সর্বত্রই। তবে আশার কথা হলো আমাদের এই সময়ে নতুন কিছু করার প্রত্যয়ে যে কাজ চলছে সেখানে প্রতিযোগীতা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে নিয়োজিত থাকা উচিত। আর ফলপ্রসুতা পেতে হলে ধৈয্য এবং বিনিয়োগ অব্যাহত রাখা সময়ের দাবি। হয়তো আমার যারা এই কাজটুকু করছি তারা কেউ ই এর সুফল পাবো না কিন্তু যারা এর বাইরের বা নবাগত হিসেবে আভির্ভূত হবে তারাই এর সুফল ভোগ করবে।
সুতরাং নিজেকে উজার করার মহৎ দৃষ্টান্ততো রয়েছে আমাদের মূলে। সেই মূল থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যান তাহলেই সফলতা চিরস্থায়ীভাবে ভোগ করতে পারবেন। বঙ্গবন্ধুর লিখা জীবনীতো আমাদের সকলেরই মাঝে বিরাজমান, বহমান এবং গতিশীল হয়ে সমৃদ্ধ আগামীর হাতছানি দিচ্ছে। কারাগারের সেই রোজনামচা বা সেই দিনগুলি তিনি যেভাবে আমাদের জন্য রেখে গেছেন এবং বাস্তবে এখন আমরা যা দিয়ে আগামী দিনের ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি সেখানে আমাদের নতুন করে শিখতে, ভাবতে, পড়তে ও লিখতে হবে। যাতে নতুন প্রজন্মের জন্য নব দিগন্ত উন্মোচিত করতে পারি। আমি আমাদের নেতা-নেত্রী, কর্মী-সমর্থকসহ অরাজনৈতিক ও মানুষ গড়ার কারিগরদের বিনীতভাবে সবিনয় অনুরোধ রাখতে চাই যেন সকলের মনোভাব ভিন্ন হলেও দেশের কল্যাণের তরে উন্নয়নের ছন্দময় গতিশীলতা ধাবমান রাখার লক্ষ্যে সাবিক ও সার্বজনীন কল্যাণের নিমিত্তে এক ও অভিন্ন লক্ষ্যে একযোগ সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছাতে এগিয়ে আসুন। আমাদের বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মানে তাঁরই তনয়া শেখ হাসিনার সাহস ও দৃঢ়চেতা সুধুরপ্রসারী পরিকল্পনায় নিজেকে সম্পৃক্ত করুন। আগামীর স্বপ্নের সোনার বাংলা গঠনে একজন গর্বীত অংশীদার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করুন। ২০৪১ এর আগেই লক্ষ্য অতিক্রমে পাশে থাকুন। এই মনোভাবে ভাল ও সুন্দর আগামীর পরিকল্পনার সমন্বয় ঘটিয়ে বাস্তবায়নার্থে নিয়োজিত থেকে অন্যকে কাছে টানুন। এগিয়ে নিয়ে যান সকলকে ঐক্যবদ্য প্রচেষ্টার বৃহৎ ও সামষ্টিক কল্যাণের তরে।