টিআইএন॥ গত বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) বিকালে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘২০১৭ সালের বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ’ বিষয়ে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন। দুর্নীতি ও ইসলামিক সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ এবং সুষ্ঠু ও কার্যকর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা বর্তমান বিশ্বের অন্যতম তিনটি চ্যালেঞ্জ।
‘একটি দেশের জন্য শুধু উন্নয়ন নয়, সুষ্ঠু এবং কার্যকর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করাও জরুরি। অনেকে মনে করেন এবং বলেও থাকেন, দ্রুত উন্নয়নের অভীষ্ঠ লক্ষ্যে পৌঁছানোর শর্টকাট রাস্তা আছে। এই পন্থায় কয়েক বছর পরপর নির্বাচন হবে, কিন্তু কেউ জবাবদিহিতা নিয়ে মাথা ঘামাবে না এবং আইনের শাসন নিয়ে কথা বলবে না। অথচ এসব বিষয় গণতন্ত্রের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।’
বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে সুষ্ঠু এবং কার্যকর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা নিয়ে আলোচনা ও বিতর্ক হওয়া উচিত । ‘কেউ কেউ মনে করেন, স্বৈরাচারী পথে পরিচালনা করে হলেও দেশের উন্নয়ন ভালো। কিন্তু এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। কার্যকর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় শুধু নির্বাচনই জরুরি নয়, এর সঙ্গে আইনের শাসন, মানবাধিকার, নাগরিক অধিকার ও বিচারের সুযোগ থাকার বিষয়গুলো জরুরি। এগুলো না থাকলে অপশাসন ব্যবস্থা তৈরি হয় যা ব্যবসায়ীদের জন্য নেতিবাচক।’
দুর্নীতি প্রসঙ্গে সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, পৃথিবীর সব দেশেই দুর্নীতি আছে। সুতরাং সব রাজনীতিবিদ যেন দেশ ও মানুষের জন্য কাজ করে এবং নিজেদের স্বার্থসিদ্ধিতে মনোযোগী না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। অনেকে মনে করেন, অল্পবিস্তার দুর্নীতি গ্রহণযোগ্য। কিন্তু এ ধারণা ভুল। এটি এমন এক ক্যানসার, যা রাজনৈতিক ব্যবস্থার ওপর বিশ্বাস নষ্ট করে দেয়।’
ইসলামিক সন্ত্রাসবাদকে সারাবিশ্বে এখন তৃতীয় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেছেন ডেভিড ক্যামেরন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যসহ সব দেশ জঙ্গিবাদের শিকার। সবাই মিলে এটি মোকাবিলা করতে হবে আমাদের। অনেকে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধকে দুটি সভ্যতার হিসেবে ধরে নেন। কিন্তু বিষয়টি আদতে তা নয়।’
জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িতরা মুসলিমদের মধ্যে একটি ক্ষুদ্র অংশ এবং তারা ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী বৃহৎ অংশের বিরোধীতা করে থাকে। তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার জন্য সামরিক শক্তি প্রদর্শনের প্রয়োজন আছে, কিন্তু এটি ছাড়াও অন্য একটি যুদ্ধ আমাদের করতে হচ্ছে। আর তা হলো চেতনার যুদ্ধ। যারা জঙ্গিবাদের চেতনায় বিশ্বাস করে তারা ভাবে খ্রিস্টান, মুসলিম, হিন্দু, ইহুদিরা একসঙ্গে থাকতে পারে না।’