টিআই্এন॥ চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া প্রশ্ন তোলায় এসএসসি পরীক্ষার্থী, তাদের অভিভাবক এবং সাধারণ জনগণ হতবাক হয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। এসময় এসএসসি পরীক্ষায় পাসের জন্য শিক্ষক, অভিভাবক এবং ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে তাদেরকে অভিনন্দন জানানোর জন্য বিএনপি চেয়াপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানান তিনি। এর আগে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপ-পরিষদের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ড. হাছান বলেন, খালেদা জিয়ার অভিযোগে আমরা হতবাক হইনি। তার প্রতি সম্মান রেখেই বলতে চাই- তিনি (খালেদা জিয়া) এসএসসি পরীক্ষার বৈতরণী পার হতে পারেননি তাই এখন হয়তো তার মনোবেদনা। এ কারণে তিনি পাসের হার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ২০১৭ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফলাফল প্রকাশের পর তা নিয়ে ‘নেতিবাচক প্রশ্নের’ পরিপ্রেক্ষিতে বেগম জিয়ার এসএসসি’র মার্কশিটের ফটোকপি প্রকাশ করে নানা প্রসঙ্গ তুলে ধরেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
গত সোমবার (১৫ মে) বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির সভাশেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি মার্কশিটের ফটোকপি গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে তুলে ধরেন। হাছান মাহমুদ বিএনপি চেয়ারপারসনের মার্কশিটের ফটোকপি হাতে তুলে ধরে বলেন, খালেদা জিয়া এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছেন বিধায় ইর্ষান্বিত হয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। এতে পরীক্ষার্থী, অবিভাবকবৃন্দ ও দেশবাসী হতবাক হয়েছেন। যেখানে কঠোর অধ্যাবসায়ের কারণে পরীক্ষার্থীরা ব্যাপকভাবে পাশ করেছেন। কোথায় তাদেরকে তিনি অভিনন্দন জানাবেন। ধন্যবাদ জানাবেন ছাত্রছাত্রীদের, শিক্ষকদের তাদের অবিভাবকদের। সেটা না জানিয়ে তারা কেন এত বেশি পাশ করলো সেটা নিয়ে বেগম খালেদা জিয়া প্রশ্ন তুলেছেন।
তিনি বলেন, এটি জাতিকে হতবাক করেছে, তবে এতে আমরা হতবাক হয়নি। কারণ বিএনপি চেয়ারপারসন ম্যাট্রিক পরীক্ষায় পাশ করতে পারেননি। তিনি যেহেতু পরীক্ষায় পাশ করতে পারেননি, সে কারণে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় এত শিক্ষার্থী কেন পাশ করলো এটি তার মনোকষ্টের কারণ। সে কারণেই তিনি বেশি পাশের হার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
বেগম খালেদা জিয়ার এসএসসি’র মূল নম্বরপত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে হাছান বলেন, ইংরেজি প্রথম পত্রে তিনি (খালেদা জিয়া ) পেয়েছেন ২৬ মার্ক অর্থাৎ ফেল। ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রে পেয়েছেন ১৫ মার্ক। তাও ফেল। তিনি বাংলা প্রথম পত্রে পেয়েছেন ৩৮ মার্ক, অর্থাৎ কোনো রকমে পাশ করেছেন। সেখানে পাশের মার্কস ছিল ৩৩। দ্বিতীয় পত্রে পেয়েছেন ৩৭ পেয়েছেন, সেটিও কোনো রকমে পাশ করছেন। গণিতে তিনি ৫০ মার্ক পেয়েছেন। কারণ দেশের অর্থ চুরি করতে হলে যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ জানতে হয়। তিনি অংকে পাশ করেছিলেন। ইতিহাসে তিনি ১০ পেয়েছিলেন, ভূগোলে তিনি ২০ পেয়েছিলেন উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, তবে উর্দুতে তিনি ৪২ মার্ক পেয়েছিলেন খালেদা জিয়া । অর্থাৎ বাংলার চেয়ে উর্দুতে তিনি তখন থেকে পারদর্শি ছিলেন। আর তিনি ঐচ্ছিক বিষয়ে পেয়েছিলেন ১০ এবং ফলাফল অকৃতকার্য।
আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির সভায় আগামী ১৭ মে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস ও ২০ মে জেলা নেতাদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক উপলক্ষে বিভিন্ন ক্রোড়পত্র প্রচার ও প্রকাশনার বিষয়েও আলাচনা হয় বলে জানান আওয়ামী লীগের এই নেতা।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার এসএসসি পরীক্ষার নম্বরপত্র থেকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রাপ্ত নম্বর সাংবাদিকদের সামনে এভাবেই তুলে ধরেন আওয়ামী লীগের এই নেতা। হাছান বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যাবসায়ের কারণে, পিতামাতা, শিক্ষকদের পরিশ্রমের কারণে তারা পাস করেছে। এসময় এসএসসি পরীক্ষায় পাসের জন্য শিক্ষক, অভিভাবক এবং ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে তাদেরকে অভিনন্দন জানানোর জন্য বিএনপি চেয়াপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য গোলাম রব্বানী চিনু প্রমুখ।