আবদুল আখের॥ এখন থেকে ইসলামী ব্যাংকের যাকাতের অর্থ সরাসরি বণ্টন না করে তা প্রধানমন্ত্রীর ফান্ডের মাধ্যমে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ব্যাংকটির নতুন পরিচালনা পরিষদ মনে করছে ব্যাংকটির করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর), যাকাত এবং ইফতার খাতে ব্যয়ের সিংহভাগ অর্থ যাচ্ছে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির লালনে। প্রতি বছর ইফতারের অধিকাংশও তাদের কাছে চলে যাচ্ছিল। এমন পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকের নতুন পরিচালনা পর্ষদ। গতকাল শনিবার বিকালে ব্যাংকের বোর্ড সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ বলেন, জামায়াতপন্থিদের নিয়ন্ত্রণে চলছে ইসলামী ব্যাংক। তারা পরিচালনা পর্ষদের কোনো কথাই আমলে নিচ্ছেন না। ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের ও মধ্যম সারির কিছু কর্মকর্তা অসহযোগিতা করছেন বলে তিনি অভিযোগ করছেন। তিনি জানান, এরই মধ্যে ব্যাংকটির অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা নাজুক হয়ে পড়েছে, রীতিমত হুমকি দেওয়া হচ্ছে পর্ষদ সদস্যদেরও। তিনি বলেন, এসব অপশক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে পরিচালনা পর্ষদ থেকে সরে যেতে তাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
ভাইস-চেয়ারম্যান জানান, যাকাত এবং ইফতার খাতে ব্যয়ের সিংহভাগ অর্থ যাচ্ছে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির লালনে। ইফতারের খরচের অধিকাংশই যেত স্বাধীনতাবিরোধী গোষ্ঠীদের কাছে। তিনি বলেন, এবারের ইফতারের জন্য নির্ধারিত ১৩ কোটি টাকা কোথায় এবং কোন দলের কাছে যায় তা বিশেষ নজর রাখা হবে। পর্ষদ সভায় শিক্ষাবৃত্তিতে ব্যয় ১৯ কোটি টাকা কাদেরকে দেওয়া হয়েছে তা খতিয়ে দেখার ব্যাপারে পর্ষদ সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে।
জানুয়ারিতে পরিচালনা পর্ষদে বড় ধরনের পরিবর্তনের পরও এখনো জামাতপন্থিরাই ব্যাংক চালাচ্ছে এবং কোনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না বলে মনে করেন প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম। তিনি সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের উদ্বেগ ব্যক্ত করেন। এমনকি ব্যাংক থেকে সরে যেতে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। আর এ অবস্থা চলতে থাকলে তিনি পদত্যাগও করতে পারেন বলে জানান। তবে গতকাল শনিবার ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে ব্যাংকের যে দু’জন পরিচালককে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছে, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সহযোগিতা চাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফলে পরিচালনা পর্ষদ থেকে আপাতত পদত্যাগ করছেন না বলে আহসানুল আলম জানিয়েছেন।