বাআ॥ বাংলাদেশে বিদ্যুৎ ও তৈরি পোশাক খাতের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আগ্রহ প্রকাশ করেছে শীর্ষ দুই সুইডিশ কোম্পানি। গত শুক্রবার স্টকহোমের গ্রান্ড হোটেলে তার সঙ্গে সুইডেনের শত বছরের পুরনো শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী ‘ইনভেস্টর’ ও প্রযুক্তি খাতের শীর্ষ কোম্পানি ‘এবিবি সুইডেনের’ প্রধান কর্তারা এই আগ্রহ দেখান বলে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান। এর আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সুইডিশ পোশাক ব্র্যান্ড এইচঅ্যান্ডএমের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কার্ল-জোহান পারসোন।
পরে সাংবাদিকদের সামনে তিন কোম্পানির শীর্ষ কর্তাদের সাক্ষাতের বিষয়ে তুলে ধরেন ইহসানুল করিম। তিনি বলেন, ইনভেস্টরের প্রেসিডেন্ট জ্যাকব ওয়ালেনবার্গ ও ভাইস প্রেসিডেন্ট মারকাস ওয়ালেনবার্গ এবং এবিবি সুইডেনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জন সোডারস্টর্ম শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে দেশের সমৃদ্ধি ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করেছেন। এসময় প্রধানমন্ত্রীও দেশের উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের ব্যাপারে তাদের অবহিত করেন।
কার্ল জোহান পারসনের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী দেশের তৈরি পোশাক খাতের উন্নয়নে তার সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। প্রেস সচিব বলেন, “প্রধানমন্ত্রী তৈরি পোশাক পণ্যের মূল্য বাড়ানোর জন্য ক্রেতাদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, প্রকৃতপক্ষে এতে শ্রমিকরাই লাভবান হবে।”
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব সুরাইয়া বেগম, পররাষ্ট্রসচিব এম শহিদুল হক, সুইডেনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম সারোয়ার এবং বাংলাদেশে সুইডেনের রাষ্ট্রদূত যোহান ফ্রিসেল, এফবিসিসিআই সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন এবং বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার স্থানীয় সময় রাতে স্টকহোমে আসেন শেখ হাসিনা। মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতিদাতা অন্যতম এই দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্তেফান লোফভেনের আমন্ত্রণে বাংলাদেশের কোনো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার এই সরকারি সফর।
বৃহস্পতিবার সকালে সুইডিশ পার্লামেন্ট সফর করেন শেখ হাসিনা। এরপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সুইডেনের রাজপ্রাসাদে। সেখানে রাজা কার্ল ষষ্ঠদশ গুস্তাভ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। সুইডিশ রাজার সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য বৈঠক হয়। রাজার সঙ্গে সাক্ষাতের পর দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় ও একান্ত বৈঠক হয়। দুই দেশ যৌথ বিবৃতিও প্রকাশ করে। এরপর সুইডিশ প্রধানমন্ত্রীর দেয়া মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন শেখ হাসিনা।
সুইডেনের উপ প্রধানমন্ত্রী এবং বিচার ও অভিবাসন মন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। সন্ধ্যায় প্রবাসী বাংলাদেশীদের এক সংবর্ধনায় যোগ দেন। শুক্রবার দুপুরে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন শেখ হাসিনা। লন্ডন হয়ে শনিবার তার ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে।