বারেক রহমান॥ বিশ্বব্যাংক ঘটা করে বিশ হাজার কোটি টাকার পদ্মাসেতু থেকে সরে দাঁড়ালো, সব দাতা সংস্থাকে নিয়ে ম্যানিলায় মিটিং করে আকারে ইঙ্গিতে অন্য প্রকল্প থেকেও সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানালো। জাইকা কি করছে জানেন? সরে যাওয়া তো দূরের কথা, উল্টা বাইশ হাজার কোটি টাকার মেট্রোরেল প্রকল্পে এগিয়ে আসলো, যা পদ্মাসেতু প্রকল্পের চেয়েও দুই হাজার কোটি টাকা বেশি এবং আমার জানামতে টাকার অংকে বাংলাদেশে এ যাবত কালে যে কোন দাতা সংস্থা কর্তৃক গৃহীত সর্ববৃহৎ প্রকল্প।
হলি আর্টিজানে নিহত জাপানী নাগরিকরা সেই মেট্রোরেল প্রকল্পের সহায়ক কর্মকর্তা ছিলেন। পরের দিন সম্ভবতঃ মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনও ছিল। আমি মেট্রোরেল প্রকল্প এবং গুলশান হামলার মধ্যে কোনও যোগসূত্র খুঁজছি না! অন্যান্য দেশ যখন গুলশান হামলার পর বাংলাদেশে তাদের ব্যবসা ও কার্যক্রম সীমীত করার পাঁয়তারা করছিল এবং এ নিয়ে আমরা যখন হতবিহ্বল, ঠিক তখন সেই জাপান পেছন থেকে চুপটি করে আবার আমাদের কাঁধে হাত রাখল… ডোন্ট অরি, আমরা আছি।
জাপানে নিহতদের সৎকারে পৌঁছার আগে মনে মনে ভয়ে ছিলেন আমাদের রাষ্ট্রদূত। নিহতদের স্বজনদের আক্রোশে পড়াটা অস্বাভাবিক নয়। না, প্রথম সারির অতিথি হিসেবে বিনম্র আতিথেয়তা পেলেন তিনি। দূতাবাসে একটা ভারী খাম খুলতে গিয়ে আবারও ভয় পাচ্ছিলেন তিনি, বিস্ফোরক কিছু নয়তো? না, গুলশান হামলায় নিহত ও আহত বাংলাদেশিদের সহায়তায় নাম না-জানা এক জাপানী নাগরিকের অনুদান, এক মিলিয়ন ইয়েন।
তাই সবকিছু বিবেচনায়, একজন বাংলাদেশী হিসেবে একটি পত্রিকার এই প্রস্তাবে মন থেকে সমর্থন রইলো… “অকালে জীবন দেওয়া এই সাতজন ও গুরুতর আহত একজন জাপানির নামে কি আমরা মেট্রোরেলের আটটি স্টেশনের নামকরণ করে তাদের প্রতি আমাদের ঋণ দায় কমাতে পারি না?”