তাজুল ইসলাম নয়ন॥ কসবা-আখাউড়ার উন্নয়ন সূর্য উদীত হয়েছিল সেদিন যেদিন বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনা ফোন দিয়ে আমাদের গর্বের ধন আনিছুল হক শ্যানন ভাইকে মনোনয়ন দিয়েছিল এবং পুর্বাভাস দিয়েছিলেন আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়ার ব্যাপারে। সেদিন কসবা-আখাউড়ার ভাগ্য ও উন্নয়ন কারীঘর নির্বাচিত হয়েছিল যা আজ জনতার দৃষ্টিঘোচর হচ্ছে। জনাব আনিছুল হক ফোন করেছিলেন মরহুম এবি ছিদ্দিক সাহেবকে। আমি তখন এবি ছিদ্দিক সাহেবের সঙ্গে নির্বাচনী কথায় ব্যস্ত। ঠিক সেই সময়ে জনাব হক সাহেব ফোন দিয়ে বলে ভাইসাব আমি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম তুলতে যাচ্ছি, আপনি আর ফরম তুইলেন না। আমার নেত্রী আমাকে আভাস দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়ার। জনাব ছিদ্দিক সাহেব তখন খুশী হয়ে বললেন ঠিক আছে ভাই আমি আছি তোমার সাথে। আমি তোমার সাথে যাব। ফোন রেখে সেই মানুষটি আনন্দ ও উৎফুল্লচিত্তে আমাকে বলল আনিছুল হক সাহেবের জন্য প্রস্তুতি নেও। যা যা লাগে সবকিছু দিয়ে কাজে নেমে পড়। উনি আমার দাদা, টিপ্পনি কেটে বলে তোমার নানার বাড়ির লোক তাই তোমার এবং আমার ডাবল দায়িত্ব।
যাক সেই কথা কিন্তু সেই যে খুশীমাখা মানুষটি আজ শান্তিতে ঘুমাচ্ছে তারও একটি অন্যতম কারন এই আনিছুল হক। ছিদ্দিক সাহেব আওয়ামী লীগের কান্ডারী কিন্তু সাবেক সংসদ ছোট ভাই শাহ-আলম সবদিক থেকে ছিদ্দিক সাহেবকে বঞ্চিত করেছিল। তাঁর নিজের কলেজটির সভাপতি পদটিও অন্যকে দিয়ে এমনকি নির্বাচনে জয়ী হয়েও চক্রান্ত করে পরাজিত করা। সব মিলিয়ে ঐ মানুষটিকে জীবিত অবস্থায় মেরে ফেলেছিল। সেই মৃত মানুষটিকে প্রাণের সঞ্চার ঘটিয়েছিল এই আনিছুল হক। মরহুম আলহাজ্জ¦ এ বি সিদ্দিক সাহেবের সকল হারানো ঐতিহ্য, সম্মান, হারানো নিজ অধিকার সবই ফিরিয়ে দিয়ে আগামী দিনের উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনয়নের ঘোষনা দিয়ে বলেছিল আপনি কাজ করুন আমি আপনার পাশে থেকে সকল কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাব। এই যে পাওয়ার খুশি তা কিন্তু বেশীক্ষণ স্থায়ী হয়নি। যেদিন মারা যাবে সেদিন সকালে ওনার বাড়ী যাওয়ার কথা এবং সেই মত এলাকার নেতা-কর্মীরাও সমবেত হয়েছিল এবং জনাব আনিছুল হক এমপি সাহেবকে সম্বর্ধনা দেয়ার কথা ছিল। রাতের বেলায় ৯-১১টার মধ্যে ওনার সঙ্গে আমার বিস্তারিত কথা হয় এবং ওনি (এ বি সিদ্দিক দাদা) বিস্তারিত বলে সকালে ওনার সঙ্গে কসবায় রওয়ানা হওয়ার কথা বলে। আমিও বলি ঠিক আছে সকালে আমি গাড়ি নিয়ে সড়াসড়া চলে যাব। দেখা হবে অনুষ্ঠানে। কতযে খুশি ছিলেন ঐ মানুষটি তা ভাষায় বোঝানোর কোন ভাষা আমার জানা নেই।
নিয়তির নির্মম পরিহাস সকাল বেলা প্রথমে আমার মায়ের ফোনে ঘুম ভাঙ্গে এবং জানতে পারি দাদা আর নেই… তারপর আমু দাদার ফোন… সবই যেন কেমন এলোমেলো লাগছিল। কারন এত পরিকল্পনা এবং আমেজ নিয়ে কয়েক ঘন্টা আগেওতো কথা হয়েছিল ঐ মানুষটির সঙ্গে। আর সকালে যাব চির বিদায় জানাতে তা কি করে হয়। কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাস মেনে নিয়ে সেই মত ফিরে গেলাম ঐ পাশাপাশি বাসায় এবং শেষ বিদায় জানানোর সকল আয়োজনে শরীক হয়ে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে দাফন সম্পন্ন করে ফিরলাম। তবে শান্তি, আনন্দ এবং জনাব এবি ছিদ্দিক সাহেবের আকাঙ্খা পূরণের দায়িত্ব নিয়েছিলেন বর্তমান আইন মন্ত্রী এডভোকেট আনিছুল হক শ্যানন সাহেব। তিনি কথা রেখেছেন এবং বিশ্বস্ততার সহিত সৈয়দাবাদের অভিবাকত্ব নিয়েছেন। জনাব এবি ছিদ্দিক সাহেব যেমন সকলকে আকঁড়ে রেখেছিলেন তেমনি তিনিও রেখেছেন সমতার ভিত্তিতে।
তিনি প্রথমেই যে কাজটি করেছেন তা হল সৈয়দাবাদ আদর্শ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজকে সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে রূপদান। শত বাধা-বিপত্তি অতিক্রান্ত করে তিনি তাঁর কথা রেখেছেন। সৈয়দাবাদ গ্রামের প্রতিটি রাস্তার প্রাণ ফিরিয়ে দিয়েছেন। সংস্কার করেছেন গ্রামের দলাদলী ও মনোমলন্যের। পুরোনো জঞ্জাল ঘুচিয়ে দিয়েছেন। দীর্ঘদিনের হারানো ঐতিহ্য গ্রামের চ্যায়ারম্যান পদটি ফিরিয়ে দিয়েছেন। এই বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বলতেই হয় কারণ গ্রামের দলাদলীর কারণে দীর্ঘদিন যাবত চেয়ারম্যান পদটি হারিয়েছিল যা আর কোনদিন ফিরে আসার কোন শুভ লক্ষণ ছিল না। কিন্তু জনাব আনিছুল হক তার ইচ্ছাশক্তি ও গুরুদায়িত্বের ভার হালকা করার লক্ষ্যে এই সম্মানের কাজটি করেছেন। সৈয়দাবাদ গ্রাম ফিরে পেয়েছে তাদের হারানো ঐতিহ্য চেয়ারম্যান। স্কুল, মাদ্রাসা-মসজিদ এর সংস্কার ও উন্নয়ন কল্পেও রয়েছে তার বিশাল ভুমিকা। যা স্মরণকালের সকল ইতিহাস চাপাদিয়ে স্বর্ণজ্জোল হয়ে থাকবে।
সর্বশেষ যে কাজটি তিনি নিরবে করে যাচ্ছেন তা হলো জরাজির্ণ হাসপাতালটির পুনঃসংস্কার কাজ। এই হাসপাতালটিরও হাল ধরেছেন জনাব হক সাহেব। এই না হলেকি হয়। দায়িত্ব দায়িত্বই এবং বড় ভাইয়ের কাঁধ থেকে দায়িত্ব ছোটভাই নিয়েছেন এবং তা পালন করে আমাদেরকে শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন। এটাই হলো মহৎ, সৎ, যোগ্য এবং পরোপকারী মানুষের কাজ। এই কাজটুকু তিনি নিজেই নিরবে করে যাচ্ছেন। ঠিক এমনিভাবে কসবা আখাউড়ার প্রতিটি গ্রামের উন্নয়ন করে যাচ্ছেন। শুধু যে কসবা-আখাউড়া তা নয় সমগ্র দেশের মানুষের কল্যাণের তরে এই নিলোর্ভ নিরহংকার মানুষটি কাজ করে যাচ্ছেন।
আমার দেখা সৈয়দাবাদ গ্রামে মানুষজন যখন তাঁর কাছে যায় তখন তিনি সেই ছিদ্ধিক সাহেবের দায়িত্ব্টুকুই পালন করেন। এখন আমাদেরও কিছু কতৃব্য রয়েছে। যার নূন খায় তাঁর গুণও গাইতে হয়। তাই সামনে সুযোগ আসছে সেই গুন গাওয়ার। বেঈমান ও প্রতারকের ভুমিকায় না থেকে দল মত নির্বিশেষে এই মানুষটির পাশে দাঁড়ালে হয়ত আগামী দিনে আরো বেশী সেবার প্রত্যাশা করা যায়। ব্যক্তিগত পাওয়ার চেয়ে সামষ্টিক পাওনা এবং জনকল্যাণের কাজগুলোকে প্রাধান্য দিয়ে জনাব আনিছুল হক সাহেব কে সম্মানীত এবং শক্তিশালী করুন। সকল বাছ বিচারের মাপকাঠি যেন হয় আনিছুল হক এবং তাঁর কাজ ও আন্তরিকতা। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ এবং এর অঙ্গসংগঠনসমুহের কোন নেতার অপব্যবহার ও অপকর্মের জন্য যেন দলীয় অর্জন তথা মন্ত্রীমহোদয়ের অর্জন ম্লান না হয়। বরং মন্ত্রীমহোদয়ের অর্জনের সমাদর ও সফল প্রচার এবং আগামীর বিজয় নিশ্চীত হয় সেইদিকে লক্ষ্যরেখে কাজ করুন।
নূশীন তাহসীন আরীব ও আনিছুল হকের যোগসুত্র। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও মন্ত্রীমহোদয়ের কাজ দেখে সন্তুষ্ট প্রকাশ করে বলেছেন…. মন্ত্রী মহোদয়ের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার ঘাটতি রয়েছে এবং আরো কতিপয় দিকনির্দেশনামুলক আলোচনা হয়েছে। এই ছোট্ট শিশুটি প্রতিবছর একবার মন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে সাক্ষাত করে কিছু কথা বলেন। এবারের সাক্ষাতের সময়ও দেখলাম ওনার সেবা এবং জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা। চাকুরী প্রত্যাশীদের বিনয়ের সঙ্গে নিশ্চয়তা দিয়ে বাড়িতে পাঠানো। হতাশাগ্রস্তদের শান্তনা এবং নিশ্চয়তামূলক দিকনির্দেশনা এমনকি বিভিন্ন জামেলায় জড়িতদের ঝামেলামুক্ত করে শান্তিপূর্ণভাবে বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করেন।
লেখনিরও কালি শেষ হয়ে যায় এই মানুষটির গুনাগুন লিখতে লিখতে। পত্রিকার পাতায় গত দুইবছরের খতিয়ান দেখলে আগামী দুই বছর পর্যন্ত পড়ে সময় ব্যায় করতে হবে। এই লেখনির এবং উন্নয়নের নতুন ইতিহাসের শেষ যেন না হয়। আগামী দিনের প্রজন্মকে নতুন উদ্ধিপনা এবং উৎসাহ ও পথদর্শন দেখিয়ে যাচ্ছে। আমরা এই জয় এবং চলমান গতিশীলতা অব্যাহত থাকুক এই কামনাই করি।