বৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্তদের নিয়েই জি.ও জারি হচ্ছে

তাজুল ইসলাম হানিফ॥ বিতর্কটা শুরু হয়েছিল গত বছরের মাঝামাঝিতে, “বৈধভাবে বিবাহিত কোনো দম্পতি যদি সন্তানলাভে ব্যর্থ হন তাতে তাদের বিবাহ কি অবৈধ হয়ে যায়”? মন্তব্যটি করেছিলেন শিক্ষা- মন্ত্রনালয়ের একজন সম্মানিত অতিরিক্ত সচিব। সুতরাং বৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্তরা অবৈধ হবেন কেন ? প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ হলে বৈধভাবে নিয়োগ- প্রাপ্ত সকলেই জাতীয়করণের আওতায় আসবেন, তাই স্বাভাবিক। এমপিও/ননএমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান যখন সরকারী হয় তখন বৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্তরা সকলেই সরকারীকরণের আওতায় আসছেন। বিষয়টি আরও পরিষ্কার হয়ে গেল যখন মহামান্য হাইকোর্ট রায় দিলেন যে, কোনো বেসরকারি কলেজ জাতীয়করণ করা হলে উক্ত প্রতিষ্ঠানের শুধু সে সকল কর্মরত শিক্ষকগণকে সরকারী চাকরিতে আত্মীকরণ করা হবে যাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বি সি এস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারে নিযুক্তির জন্য নির্ধারিত শিক্ষাগত যোগ্যতার অনুরূপ। আত্মীকরণের জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে প্রথমে এডহক ভিত্তিতে নিয়োগ করা হবে এবং পরবর্তীতে সরকারী কর্ম-কমিশন কর্তৃক তার উপযুক্ততা যাচাইয়ের পর কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে নিয়মিত নিয়োগদান করা হবে।
বৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত সকলেই জাতীয়করণের আওতায় আসছেন। সদ্য-জাতীয়করণ হওয়া সরকারি ভোলা চরফ্যাশন কলেজে ২০১৩ খ্রিস্টাব্দের ১১ই অক্টোবর থেকে ১৫ জন শিক্ষক, খুলনার রূপসা উপজেলার সদ্য-জাতীয়করণ হওয়া সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজে ২০১৩ খ্রিস্টাব্দের ১৪ই মে থেকে কলেজটির ১৪ জন শিক্ষক, একইভাবে খালিশপুর উপজেলার সদ্য-জাতীয়করণ হওয়া সরকারি হাজী মুহম্মদ মহসিন কলেজে একই জাতীয়করণের তারিখ অনুযায়ী কলেজটির মোট ১০জন শিক্ষককে প্রভাষক পদে এডহক ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হয়। তাঁরা প্রত্যেকেই অনার্সের শিক্ষক।
আসা যাক, প্রত্যেক উপজেলায় একটি কলেজ ও একটি স্কুল ( যে সমস্ত উপজেলায় সরকারী স্কুল/কলেজ নেই) জাতীয়করণ প্রসংগে, ইতিমধ্যে কলেজ জাতীয়করণের লক্ষ্যে ডিড অব গিফট বা দানপত্রের দলিলের কাজ শেষ পর্যায়ে। খুব শীঘ্রই সরকারের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ সরকারি কলেজ হিসাবে পরিচালিত হবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি পাওয়া কলেজগুলো। যার সুফল ভোগ করবে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষক-কর্মচারীগণ কিংবা বলা যায় পুরো সমাজ।
সম্প্রতি গুলশানের কালাচাঁদপুর স্কুল এন্ড কলেজ জাতীয়করণ সংক্রান্ত ” ওয়াকিল উদ্দিন ও অন্যান্য বনাম রাষ্ট্র” মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়ে, বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি এ কে এম শহিদুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের এ দ্বৈতবেঞ্চ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের আওতায় আনার ক্ষেত্রে ৮ দফা নির্দেশনা প্রদান করেছেন ইংরেজিতে ২০ পৃষ্ঠার ঐ রায়ে “শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ নীতিমালা” শিরোনামের অংশটি বাংলায় লেখা হয়। ওই রায়ে বলা হয়, “ভবিষ্যতে কোন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণ করতে হলে নিন্মোক্ত নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে।
১। কোনো বেসরকারি কলেজ জাতীয়করণ করা হলে উক্ত প্রতিষ্ঠানের শুধু সে সকল কর্মরত শিক্ষকগণকে সরকারী চাকরিতে আত্মীকরণ করা হবে যাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বি সি এস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারে নিযুক্তির জন্য নির্ধারিত শিক্ষাগত যোগ্যতার অনুরূপ। আত্মীকরণের জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে প্রথমে এডহক ভিত্তিতে নিয়োগ করা হবে এবং পরবর্তীতে সরকারী কর্ম-কমিশন কর্তৃক তার উপযুক্ততা যাচাইয়ের পর কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে নিয়মিত নিয়োগদান করা হবে।
২। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও যে সকল কর্মরত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের শিক্ষাগত যোগতা বিধি অনুসারে সরকারি বিদ্যালয়ে নিযুক্তির জন্য নির্ধারিত শিক্ষাগত যোগ্যতার অনুরূপ, শুধু তাদেরকেই উপযুক্ততা যাচাইয়ের পর আত্মীকরণ করা হবে। তদানুযায়ী আত্মীকরণ বিধিমালা সংশোধন করা হবে।
৩। নীতিমালায় বলা হয়, কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যদি অন্তত: দশ বৎসর নিয়মিত স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত না হয়ে থাকে সে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের জন্য বিবেচিত হইবে না।
৪। নীতিমালায় আরো বলা হয়েছে, জাতীয়করণের জন্য এলাকার প্রাধিকার নির্ধারণ, জনসংখ্যা ও তথায় বিদ্যমান শিক্ষর সুযোগ পর্যালোচনার ভিত্তিতে করতে হবে। জাতীয়করণের জন্য প্রস্তাবিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে পূর্ববর্তী পাঁচ বৎসরের পাবলিক পরীক্ষায় উৎকৃষ্ট ফলাফল অর্জনকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণের জন্য বিবেচনা করা হবে।
৫। নীতিমালায় রয়েছে, যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র/ছাত্রী পূর্ববর্তী পাঁচ বৎসরের মধ্যে পরীক্ষায় দূর্নীতির জন্য বহিস্কৃত হয়েছে সে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের জন্য বিবেচিত হবে না।
৬। আরো বলা হয়েছে, জাতীয়করণ করা হলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ন্যূনতম ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
৭। জাতীয়করণের পর কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আত্মীকৃত শিক্ষক/ শিক্ষিকাগণ ন্যূনতম ৫ (পাঁচ) বৎসর উক্ত প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করতে বাধ্য থাকবেন।
৮। নীতিমালায় রয়েছে, মাধ্যমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে সুযোগ বৃদ্ধি ও গুণগত উৎকর্ষতা অর্জনের লক্ষ্যে দেশের প্রতিটি উপজেলায় অন্তত: একটি করে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা সরকারি নীতি হিসেবে গ্রহণ করা যেতে পারে। বর্তমানে যে সকল উপজেলায় সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় নেই, শুধু সে সকল উপজেলার বিদ্যালয় কোনো বেসরকারি বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ অথবা নতুন স্কুল স্থাপনের মাধ্যমে এ নীতি বাস্তবায়ন করা যেতে পারে। উপজেলার এ সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়টিকে একটি মডেল বিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ, শিক্ষা উপকরণ সরবরাহ, যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষক/শিক্ষিকা নিয়োগ ইত্যাদির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এর ফলশ্রুতিতে উপজেলায় অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনুপ্রেরণা লাভ করবে এবং এদের মধ্যে প্রতিযোগিতার মনোভাব সৃষ্টি করবে। সরকারি সম্পদের সীমাবদ্ধতার পরিপ্রেক্ষিতে দশ বৎসর মেয়াদের সময়সীমা নির্ধারণ করে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যেতে পারে।
সরকার মহামান্য সুপ্রীমকোর্টের রায়ের প্রতি সম্মান, আইনগত ও মানবিক দিক বিবেচনা করেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কমিটমেন্ট অনুযায়ী খুব শীঘ্রই ২৮৫টি কলেজের জি.ও জারীর মাধ্যমে সরকারীকরণের জানান দেবে। আজ একটি বিষয় খুব জোর দিয়েই বলতে চাই একজন অনার্স/মাস্টার্স শ্রেনীর শিক্ষক তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সবোর্চ্চ ডিগ্রী নিয়ে শিক্ষামন্ত্রনালয়ধীন নিবন্ধন পাশ করে বিধি মোতাবেক ও যথাযথ প্রকিয়ায় নিয়োগ পান। এই উচ্চশিক্ষার শিক্ষকের প্রতি বেতনভাতা নিয়ে যে ইনজাস্টিস করা হয় পৃথিবীর ইতিহাসে কোন শিক্ষকের প্রতি করা হয় কী-না সন্দেহ !
উল্লেখ করা যায় যে, দেশের মোট উচ্চশিক্ষার ৭০% জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ন্ত্রণ করে। সেখানে বেসরকারি কলেজে বর্তমানে অনার্স-মাস্টার্স শ্রেণিতে প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষাধিক ছাত্র/ছাত্রীর পাঠদানে-রত প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষক নির্মমভাবে বঞ্চিত। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ নীতিমালায় এসব শিক্ষকের বেতন এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতনের সমপরিমাণে শতভাগ প্রদানের কথা বলা থাকলেও এর যথাযথ পর্যবেক্ষণ নেই।
দেশের উচ্চশিক্ষায় অবদান রাখা এসব শিক্ষকের বেতন-ভাতা কলেজ কর্তৃপক্ষের হাতে ছেড়ে দেয়ার ফলে কলেজকর্তৃক বেতনবিহীন/নামমাত্র বেতন/আংশিক বেতন (৩ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকার মধ্যে) প্রদান করা হয়। যা কোন কোন কলেজে প্রদান করা হয়-ও-না। যা দিয়ে একজন সাধারণ মানুষের পক্ষেও জীবিকা নির্বাহ করা সম্ভব নয়। একজন শ্রমিকের সর্বনিম্ন বেতন যেখানে ৮ হাজার টাকা নির্ধারিত সেখানে একজন উচ্চ-শ্রেণির শিক্ষকের নামমাত্র বেতন ও মানবেতর জীবন-যাত্রা পরিহাস ছাড়া কি হতে পারে ?
শিক্ষকরা হয়তো লজ্জায় প্রকাশ করতে পারে না। কিন্তু এই লজ্জা কি শুধু একাই শিক্ষকের ? এসব শিক্ষকের যথাযথ বেতনের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট কলেজ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অথবা সরকার কেউই গ্রহণ করছে না। একি কলেজে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের তুলনায় তাদের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়।
সদ্য জাতীয়করন হতে যাওয়া মাগুরার মুহম্মদপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা আছাদুজ্জামান কলেজ ননএমপিওভুক্ত, সিরাজগঞ্জের তাড়াশের কলেজটিও এমপিওভুক্ত নয়, টাঙ্গাইলের বাসাইলে ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠিত জোবেদা রুবেয়া মহিলা কলেজ ননএমপিওভুক্ত। কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সাইফুর রহমান কলেজ ননএমপিওভুক্ত। এসব প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ হওয়ার ফলে স্ব-স্ব জনপথ বদলে যাবে। এলাকার মানুষ পাবে কাঙ্খিত শিক্ষা কম খরচে। বিধি মোতাবেক নিয়োগ প্রাপ্ত ডিগ্রী, অনার্স/মাস্টার্সের সম্মানিত শিক্ষকসহ স্কুল কলেজের সকল শিক্ষকেরা আসবে জনবল কাঠামোর আওতায়। দূর হবে বৈষম্য। সমাজ ফিরে পাবে তাঁর ন্যায্য আলো।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের প্রতি আকুল আবেদন যে, নতুন করে এম.পি.ও দেওয়ার কথা ভাবতে হবে। কেননা, এ কথা নিশ্চিত ভাবেই বলা যাই যে, ২০০৫ ইং সালের নিবন্ধনের মাধ্যমে পাস করে শুন্য ও সৃষ্টপদে নিয়োগ পাওয়া সকল শিক্ষকরা আগের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশী যোগ্য। সুতরাং শুন্য কিংবা সৃষ্টপদের বৈষম্য সৃষ্টি করা যাবে না। বিশেষ করে অনার্স/ মাস্টার্স শ্রেনীর শিক্ষকদের এমপিও দিতে হবে। অন্যথায় উচ্চশিক্ষার মান কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে একটু চিন্তা করছেন কী ? জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত বেসরকারি কলেজে অনার্স-মাস্টার্স শ্রেণিতে নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা না দিলে কি ভাবে উচ্চ শিক্ষার মান উন্নয়ন সম্ভব ? ডিগ্রির চেয়ে অনার্স শ্রেণিতেই দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয়, তাই এই শ্রেণির শিক্ষকদের কথা বেশি ভাবার দরকার ছিল।
পাশাপাশি, বেসরকারি অনার্স মাস্টার্স কলেজের শিক্ষার্থীরা চরম উৎকণ্ঠায় দিনযাপন করছেন। দেশে এখন সরকারি কলেজের সংখ্যা ৩৩৫। সরকারের সিদ্ধান্ত হচ্ছে সরকারি কলেজে মাসিক বেতন যেখানে মাত্র ২৫ টাকা এবং ভর্তি ফি ২০০০-২৫০০ টাকা সেখানে বেসরকারি কলেজে ছাত্র/ছাত্রীদের নিকট হতে অনার্স কোর্সের জন্য ভর্তি ফি বাবদ প্রতি বছরে (৬০০০-১২০০০) টাকা ও মাসিক বেতন (৫০০-১২০০) টাকা পর্যন্ত (কলেজ ভেদে) আদায় করা কোটি কোটি টাকা শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সরকার কারোই কোন কল্যাণে আসছে না বরং গরীব ঘরের মেধাবী ছাত্র/ ছাত্রীরা আর্থিক অনটনের কারণে কোর্স সম্পন্ন না করতে পেরে হতাশা ও বেকারত্বের অভিশাপ বয়ে বেড়াচ্ছে। এর ফলে দেশের সামগ্রিক উচ্চশিক্ষা বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে এবং বাড়ছে বেকারত্বের সংখ্যা। তাই ছাত্রছাত্রীদের যৌক্তিক প্রশ্ন কবে তাদের কাঙ্খিত আকাঙ্খা অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানটি সরকারীকরন করা হবে কিংবা তাঁদের অনার্স শাখাটি এমপিও হবে ? সহসাই মিলবে কী কোন উত্তর !

Leave a Reply

Your email address will not be published.