লন্ডন থেকে চপল॥ বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এখন লন্ডনে। বাংলাদেশ সময় গত রোববার দুপুর ২টায় তিনি লন্ডন পৌঁছান। আগামী ৪২ দিন লন্ডনেই থাকবেন বেগম জিয়া। এর উদ্দেশ্য বলা হচ্ছে চিকিৎসা ও পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো। তবে এটি ওপেন সিক্রেট, লন্ডনে অবস্থানের মূল উদ্দেশ্য আগামী নির্বাচনে বিএনপির রূপরেখা কী হবে তা নিয়ে ছেলে বিএনপির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট তারেক জিয়ার সঙ্গে বেগম জিয়ার আলোচনা।
এছাড়া এই লন্ডনে বিএনপির মনোনয়ন বাণিজ্য, দলের নেতৃত্ব নিয়ে তারেক বনাম বেগম জিয়ার অবস্থানেরও ফয়সালা হবে বলে জানা গেছে। এতে যুক্ত হলো নতুন বিষয়-‘লন্ডন বাণিজ্য’। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, আগামী সপ্তাহেই লন্ডনের বিলাসবহুল পার্ক রয়্যাল হোটেলে সভা আয়োজন করেছে বিএনপি। বেশ কলেবরেই ওই সভা অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃত্ব বিদেশে গেলে সেখানে সভা আয়োজন করা নতুন কিছু নয়। সাধারণত বিদেশে অবস্থানরত ওই দলের সমর্থক বাংলাদেশিরাই এর আয়োজন করে। যেখানে অনেক সময়ই ওই দলের সমর্থক না হলেও স্বতস্ফূর্তভাবে এসব সভায় অংশ নেন সাধারণ প্রবাসীরা। তবে বিএনপি এখানে ‘নতুনত্ব’ এনেছে। পার্ক রয়্যাল হোটেলে অনুষ্ঠেয় বিএনপির সভা ভিন্ন কারণে আলোচিত হচ্ছে। এরই মধ্যে ওই সভায় অংশ নিতে অনেকের কাছেই চিঠি, মেইল বা অন্য কোনো মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয়েছে। এমনকি দেওয়া হয়েছে স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন। সভায় অংশ নেওয়ার জন্য চাওয়া হচ্ছে ৩০০ থেকে ৫০০ পাউন্ড (৩২ থেকে ৫৩ হাজার টাকা)। রাজনৈতিক সভায় অংশগ্রহণে অর্থ চাওয়ার এমন ঘটনা নজিরবিহীন।
এখানেই শেষ নয়। জানা গেছে, ৪২ দিনের দীর্ঘ সফরে বেগম জিয়া অনেককেই সাক্ষাৎ দেবেন। ব্যক্তিগতভাবে কেউ বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাইলে গুণতে হবে তিন থেকে পাঁচ হাজার পাউন্ড (তিন লাখ ২০ হাজার থেকে পাঁচ লাখ ৩০ হাজার টাকা)। আর ৪-৫ জনের গ্রুপে বেগম জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাইলে দিতে হবে ১০ হাজার পাউন্ড পর্যন্ত (১০ লাখ ৫৮ হাজার টাকা)।
লন্ডনে বেগম জিয়ার অবস্থান উপলক্ষে অর্থ সংগ্রহের আয়োজনকে সাংগঠনিক কর্মকান্ডের জন্য বলে দাবি করা হচ্ছে। অবশ্য ‘নিন্দুকেরা বলছেন, অর্থ সংগ্রহের এই আয়োজন সাংগঠনিক ব্যয় থেকে অনেক বেশি। ওই নিন্দুকেরা বিএনপির এই আয়োজনকে বলছেন দলটির ‘লন্ডন বাণিজ্য’।