বা ই॥ বিএনপিতে যে কজন শিক্ষিত রাজনীতিবিদ আছেন তাঁদের অন্যতম তিনি। দলের বাইরে তাঁর আলাদা ইমেজ রয়েছে। বিদেশী কূটনীতিক, উন্নয়ন সহযোগীরা যেকোনো প্রয়োজনে তাঁর সঙ্গেই কথা বলতে পছন্দ করেন। বিদেশিদের মতে, অন্যতম আস্থাভাজন রাজনীতিবীদ তিনি। কিন্তু ইদানিং রাজনীতিতে আর উৎসাহ নেই। রাজনীতি নিয়ে তাঁর একরাশ হতাশা। সম্প্রতি বিদেশি বন্ধুদের সঙ্গে এক চা চক্রে রাজনীতি নিয়ে তাঁর দু:খ এবং অস্বস্তির কথা বলেছেন। জানিয়েছেন, ‘বিএনপিতে নিজস্ব মত প্রকাশের সুযোগ নেই। বিএনপি করা মানে আসলে পুতুল হয়ে থাকা। পুতুলকে যেমন সুতো দিয়ে নাচানো হয়, তেমনি আমরা সেটুকুই বলতে পারি, যেটুকু আমাদের বলতে বলা হয়।’
ড. মঈন খান মনে করেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেই চিন্তাশীলতা লোপ পাচ্ছে। সৃজনশীলতা নেই। দলের মধ্যে নতুন চিন্তা, নতুন ভাবনাকে প্রশ্রয় দেওয়া হয় না। কেউ কোনো নতুন কথা বললে, তাঁকে সন্দেহের চোখে দেখা হয়। ষড়যন্ত্র, বিশ্বাসঘাতকতা থেকে বেরুতে পারছে না রাজনৈতিক দলগুলো। এজন্যই তাঁর মতে তরুণ মেধাবীরা রাজনীতির প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। সাধারণ মানুষও দূরে চলে যাচ্ছে রাজনীতি থেকে।
ড. মঈন খান একজন শিক্ষক ও রাজনৈতিক নেতা হিসেবে পরিচিত। নির্বাচনী এলাকায় বিপুল জনপ্রিয়। বিএনপির দুর্নীতির জোয়ারকালেও তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ কম। বিরোধীদলের সমালোচনায় কখনো শালিনতার সীমা লঙ্ঘন করেননি। এজন্য তাঁর দলে কদর কম। ঘনিষ্ঠদের বলেছেন, ‘যে যত অশালীন ভাষায় কথা বলতে পারে, বিএনপিতে তাঁর কদর বেশি। ভালো কথা, ভদ্র কথা বললে মনে করা হয় সরকারের দালাল।’ এনিয়ে তাঁর দু:খবোধ বাড়ছে, বিএনপি ১০ বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে। এই অবস্থায় থেকেও অনেক কিছু করা যায় বলে মনে করেন এই চিন্তাশীল মানুষটি। বিকল্প বাজেট, ছায়া সরকার, উন্নয়ন পথ নকশার মতো অনেক উদ্ভাবনী প্রস্তাব বিএনপিতে দিয়ে মর্যাদা পাননি তিনি। বিএনপির নেতার দায়িত্ব তাঁর মতে একটাই, ম্যাডাম এবং ভাইয়াকে খুশি করা। জনগণ, দেশ এসব আসলে কিছুই নয়। এসব চিন্তা করে কেউ রাজনীতি করে না এখন। রাজনীতি করে কিছু পাবার জন্য। পেতে হলে কর্তার সুজনরই একমাত্র উপায়।