তাজুল ইসলাম নয়ন॥ অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস, ভালবাসা, স্নেহ-মমতা ও নির্ভরতাই হারালাম আমাদের স্বপ্নের সোনার বাংলার কান্ডারীকে। এই ১৫ই আগষ্ট এর উৎপত্তি এবং সফলতা কিন্তু বাঙ্গালী জাতির জন্য নয়। তা হয়েছিল পাকিস্থান এবং এর পরাজিত শক্তির দোসর আমেরীকার কুট চালে। যা বাংলার কতিপয় মিরজাফর ও ক্ষমতালোভী দ্বারা বাস্তবায়িত হয়েছিল। এই লোভীদেরকে আজ সকলেই চিনতে পেরেছে কিন্তু বাস্তবে কিছুই করতে পারেনি। তারা তাদের সেই কুটচাল এখনও বন্ধ করেনি বরং মাত্রাবাড়িয়ে নতুন নতুন ফন্দি আটছে এবং বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে কর্মযজ্ঞ চালাচ্ছে। আমাদের শেষ অবলম্বন এবং আশ্রয়স্থল শেখ হাসিনা আর তাকে টার্গেট বা কেন্দ্র করেই সকল ষড়যন্ত্র আটা হচ্ছে। রাখে আল্লাহ মারে কে? কিন্তু আমাদেরও সেই সাথে সতর্ক থাকতে হবে। কিতাবের ভাষায় তোমরা সাপের মত সতর্ক হও ও কতুবরের মত সরল হও।
হতভাগা এই জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর অগাধ বিশ্বাস ছিল এই বাংলার জনগণের উপর; তাইতো তিনি বলেছিলেন এই বাংলার ছেলে; বাঙ্গালীরা আমাকে মারতে পারে না। আর সেই প্রমান তিনি মৃত্যুতে দেখিয়ে গেছেন। তাঁর সেই আত্মবিশ্বাস, ভালবাসা, ¯েœহ-মমতা এবং নিেিজর চারিপাশে বেষ্টিত মুখোশ পড়া শত্রু বা মীরজাফরদের কথায় বিশ্বাস ও নিজের উপর বেশী নির্ভরতার কারণে প্রাণ দিতে হয়েছিল এবং আমরা হয়েছিলাম এতিম। সেদিন জাতি স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তার পরেও জাতির পিতার সন্তানদ্বয় কোন ভ’মিকা নিয়েছিল? নেয়নি বরং সকল অরাজকতা এবং নির্মমতাকে নিরবে শয্য করে গিয়েছিল। কেউ কেউ আবার বিবেক এবং ন্যায়-নীতি বিসর্জন দিয়ে হায়েনার দলে যোগ দিয়েছিল। খুবই সামান্য কিছু মানুষ যারা সেদিন মাথা উঁচু করে বিভিন্নভাবে প্রতিবাদ করেছিল; তাঁর আজ অমর। আমারা জানি সেই সকল বীরদের। এডভোকেট সিরাজুল হক বাচ্চু মিয়া, কামাল আহমেদ মজুমদার, আলহাজ্জ এ বি ছিদ্দিক, সামসুল কাউনাঈন কুতুব, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকসহ আরো অনেকে। কিন্তু তাদের সেই প্রতিবাদ সাড়া জাগাতে পাড়েনি বাংলার ৭কোটি জনতাকে। যার জন্য অপেক্ষার প্রহড় গুনতে হয়েছিল….।
আজ পত্রিকা বা সোস্যাল মিডিয়ায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যে জাগরণ লক্ষ করছি তার সিকিটুকু যদি তখন চলমান থাকত তাহলে হয়তো আমরা আর তাঁকে হারাতাম না। তখন মানুষ সবাই নিজকেন্দ্রীক হয়ে পড়েছিল বেশী আর সেই সুযোগটুকুই কাজে লাগিয়েছে মীরজাফররা। তবে এর পেক্ষাপট তৈরী করেছিল স্বাধীনতার ঠিক পর থেকেই। যা চারবছরেরও বেশী সময় নিয়ে বাস্তবায়ন করেছে মাত্র। আমিও সেদিন ছিলাম তবে মাত্র সাতে তিন বছর বয়সের। তারপরও আমি নিজেকে ধিক্কার জানাই সেইদিনের অক্ষমতার জন্য। প্রতিবাদ না করার জন্য। তবে আজ পর্যন্ত ঘৃণা ও প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছি এবং নিরলস কাজ করে যাচ্ছি। তবে বর্তমান এবং অতিতের কাউকে আঘাত বা কষ্ট দেয়ার জন্য বলিনি বা লিখিনি। শুধু মনের কুনে জমা থাকা জমাটবদ্ধ কষ্ট ও বাস্তবতাই শেয়ার করে হালকা হতে চেষ্টা করছি মাত্র।
আজ বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যে কথা, গল্প এবং নানাহ ধর্মীয় আমেজ ও আচার অনুষ্ঠান হচ্ছে তা ছিল সুদুর অতীতে অনুপস্থিত। সেই অনুপস্থিতির সুযোগটুকুই দেশকে পিছিয়ে দিয়ে পরাজিত ভাবধারায় আজকের অবস্থানে নিয়ে এসেছে। কিন্তু সেই অবস্থান থেকে মুক্তির জন্যই কিন্তু বঙ্গবন্ধুর সেই আপোষহীন রক্ত আজ আমাদেরকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে অভিষ্ট লক্ষের দিকে। তবে গর্বভরে বলতে পারি আজকের খবর, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও কাগজের ভাষ্য এমনকি সকল আচার অনুষ্ঠানের মুলে কিন্তু শেখ হাসিনা। তিনিই জাতিকে উজ্জীবিত করেছিল এবং পথের দিশা আবার দেখিয়েছিল তাই আজ এই ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস।
যা হারিয়েছি তা হয়ত ফিরে পাব না কিন্তু সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামীতে না হারানোর কাজটুকু করতে শপথ নিয়ে সতর্ক দৃষ্টিতে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টাতো অব্যাহত রাখতে পারি। আজকের এই দিনের শপথ হউক শেখ হাসিনাকে রক্ষার দায়িত্ব আমাদের এবং আমরা প্রত্যেকে প্রত্যেকের জীবন বাজি রেখে আল্লাহর আশির্বাদ এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতিমুর্তি ও প্রতিচ্ছবি জাতির অভিভাবক শেখ হাসিনাকে মীরজাফরদের হাত থেকে রক্ষা করব। তাঁর তরে কাজ করে যাব বিনা স্বার্থে। বঙ্গবন্ধুর পরিবারের অবশিষ্ট যারা রয়েছে, শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও তাদের সন্তানদের রক্ষার দায়িত্ব আল্লাহর পরেই আমাদের এবং তাদের তরে দেশের প্রয়োজনে কাজ করে যাব। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মানে মৃত ব্যক্তির লাশের সামনে দাঁড়িয়ে এই অঙ্গিকারেই জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ হউক। সকল ষড়যন্ত্রের মুলউৎপাটন করে এগিয়ে যাবো একসঙ্গে সেই অভিষ্ট লক্ষ্যে।
আর কি লিখব সবইতো সকলের জানা এবং বাস্তবে দৃশ্যমান তবে আমাদের প্রতিনিয়ত মোনাজাত ১৫ই আগষ্টের শহীদানের প্রতি। আল্লাহ তাদেরকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করুন। আর তাদের আত্মার উপলব্দি আমাদের হৃদয়ে উৎসারিত হয়ে তাদের প্রতিচ্ছবি হয়ে নি:স্বার্থভাবে কাজ করতে সহায়তা করুন। আল্লাহ আমাদেরকে তৌফিক দান করুন। আমিন॥