তাজুল ইসলাম নয়ন॥ ১০ই আগষ্ট ১৯৭২ সালে আমার জন্ম। জন্মসূত্রে আমি স্বাধীনতা ভোগকারী। কিন্তু কর্মসূত্রে এবং বংশ ও রক্তের অবহে আমি স্বাধীনতা অর্জনকারী এবং তৎপরবতীতে রক্ষাকারী। কিন্তু আমার শৈশব এবং কৌশর এবং যৌবনের পরন্ত বেলায় এসে যা দেখেছি, শুনেছি এবং উপলব্দি করেছি তার আলোকে শ্রদ্ধাভাজন প্রধান বিচারপতি সিনহার মত কাউকে দেখিনী। তিনি একক ও অনবদ্য।
কোন দিক দিয়ে তা হয়তো বলার আর অবকাশ রাখেনা কারণ ইতিমধ্যে বাংলার জনগণ তাঁর সবই জেনেছেন। বাংলার পশ্চিমাকাশেও তাঁর কালো মেঘের মুর্তী দেখেছেন। তবে কেউ কেউ আবার তাকে নিয়ে আশা দেখছেন এবং অধির আগ্রহে অপেক্ষায় আছেন মীরজাফরীর উপকার ভোগী হওয়ার জন্য। একমাত্র মীরজাফর গংরাই স্বপ্নপুরন বলি বা বাস্তবায়ন বলি একই আর তা করতে পারেন। তবে এই যাত্রায় বা এই সময়ে হয়তবা সফল হতে পারবেন না কিন্তু বিফল করার জন্য অনেক চড়াই উৎড়াই পাড় করে আসতে হবে। কারণ সকল সর্বনাশা করাল ঘ্রাস বা এর থাবা থেকে মুক্তি পেতে কিছু খোয়াতে হয়। যেমনি করে স্বাধীনতা অর্জন এবং তৎপরবতীতে স্বাধীনতার স্বাধ পাওয়ার বা স্বাধীনতার স্পৃহা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার নিরন্তর সংগ্রাম। ঘাত-প্রতিঘাত এমনকি সকল কিছু হারিয়েও এই জাতি বসে থাকেনি বরং বার বার চেষ্টা করে ফিরে এসেছে তাঁর আপন গতি ও স্ব মহিমায়। ঠিক একই সময়ে আবার আসলো ভিন্ন কৌশলে আঘাত। যা হয়ত উৎরিয়ে যাবো কিন্তু ইতিহাতে কলংকিত হয়ে থাকবে ঐ সময়ের আসনটি।
বাংলার মাটিতে বার বার আঘাত হেনেছে স্বাধীনতা বিরোধী এবং আন্তর্জাতিক ফায়দা হাছিলকারী চক্রান্তকারীরা। আর এবারের আবিস্কার সিংহা সাহেবের কৌশলটিও তারই একটি। তিনি হয়তোবা বুঝতে পেরেছেন এবং অনুতপ্ত হৃদয়ে পায়চারী করছেন এই ভেবে, কি করলাম এবং কিভাবে মুক্ত হবো। কিন্তু হয়তো বা অন্য কিছুর লোভে তিনি সব নৈতিকতা বা বিবেক বিসর্জন দিয়েছেন।
প্রথিবীর ইতিহাসে কোন প্রধান বিচারপতির জনসম্মুখ্যে রাজনৈতিক ভাষন এমনকি সর্বজান্তার ভুমিকাও বিরল। যা তিনি তাঁর শুরু থেকেই করে যাচ্ছেন। তিনি বুঝাতে চাচ্ছেন আগের বিচারপতিরা মেরুদন্ডহীন ছিলেন। তিনি এবং তার মেরুদন্ড ও আন্তর্জাতিক লবিং খুবই শক্ত তাই যা ইচ্ছা তাই করে যেতে পারবেন। হ্যা বিচার বিভাগ স্বাধীন এবং সকলেরই স্বাধীন ইচ্ছা বা মত প্রকাশ করার শক্তি ও অধিকার রয়েছে। সেই দিক দিয়ে বাংলাদেশে এর চর্চাটুকু পরিপূর্ণ হয়েছে জনাব সিংহা সাহেবের মাধ্যমে। তবে আমি বা আমার মত মানুষজনই বলতে পারবেন প্রধান বিচারপতির এই বক্তব্য আগে শুনেছেন কি না? তবে আমি একশতভাগ নিশ্চয়তা দিয়েই বলতে পারি কেউ শুনেন নাই। কারণ ইতিহাস এবং মিডিয়াই এর প্রধানতম স্বাক্ষী। এমন কোন বিষয় নেই যেখানে সিংহা বাবুর কথা নেই। কারণ কি? তিনি কি নিজেকে এতই উপরে ভাবতে শুরু করেছেন যে, দেশের সব মানুষ তাঁর কথা শুনতে বাধ্য বা তাঁর ক্ষমতার দাপটে শোণাতে বাধ্য করা হবে। এমনটা যদি ভেবে থাকেন তাহলে ওনি শুধু ভুলই করেন নাই বরং নিজের সর্বনাশ ডেকে এনে কলংকিতই হয়েছেন বটে। মানুষ শ্রদ্ধা করার সমস্ত জায়গাটুকু আজ তিনি হারিয়েছেন। সামাজিক এবং বংশীয়ভাবে তিনি এমন কোন সম্মানের জায়গার ছিলেন না যে তাকে মানতে বাধ্য হবে এই দেশের জনগণ। তবে সরকার তাকে সম্মান দিয়েছেন এবং বর্তমানে তিনি রাষ্টের চতুর্থ ব্যক্তি। কিন্তু এই ব্যক্তির মর্যাদাটুকুও তিনি হারিয়েছেন। যা জনসম্মুখে আসলেই টের পাওয়া যাবে। হয়ত সময়ের পরিক্রমায় তা তিনি নগদে পাবেন। আর তা আচ করতে পেরেই তিনি তাঁর রাজউকের প্লটের বাড়িটি বিক্রি করে অসুবিধার সময় পাড়ি জমাতে প্রস্তুত। মঈন ফকরুলরা যেমন পাড়ি দিয়েছেন।
আমি ওনার মত সম্মানীত মানুষের জীবন নিয়ে কিছু বলতে চাই নাা। কারণ ভুল মানুষই করে এবং এই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে মানুষই উৎরে যায়। তবে শুধু বলতে চাই সিংহা সাহেবের প্রধান বিচারিক সময়ের জনসম্মুখে দেয়া বক্তব্য এবং বিচারের রায় ঘোষণার আগে ও মাঝে দেয়া অপ্রীয় সত্য বলা এমনকি বিভিন্ন অপ্রাসঙ্গিক আলোচনা নিয়ে টানা হেচরা করা নিয়ে। ওনি ওনার ঐ সকল বক্তব্য রেকর্ডকৃত এবং ছাপাকৃত যা প্রত্যক্ষ করেছি তা উপলব্দিতে তিনি তাঁর বর্তমান রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ চতুর্থ পদ বা আসনটিকে কলংকিত করেছেন। পৃথিবীর ইতিহাসের সমস্ত বিচারকগণ একদিকে আর ওনি একা একদিকে এটা কি শুভা পায়? বিচারপতি মানিক একজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি ওনি যে বক্তব্য ও যুক্তি দেখিয়েছেন জনাব সিংহা সাহেবের বক্তব্যের উদৃত্তি দিয়ে তা আসলেই দু:খজনক এবং এই স্বীকারোক্তির পরেও কিভাবে ওনি প্রধান বিচারপতির পদে আসীন থাকেন তা বোধগম্য নয়। শুধু তাই নয় বরং সংবিধান বিশেষজ্ঞ আইনজীবিদের ভাষ্যমতে তিনি সংবিধান লংঘন করেছেন। এই সংবিধান লংঘনকারী কিভাবে সাংবিধানিক মর্যাদার আসনে আসীন থাকেন তাও আম জনতার বোধগম্য নয়। তবে মানুষের শেষ আশা এবং আশ্রয়স্থল এই জাগয়াটুকু নিয়ে যেন আর কোন রাজনীতি বা রাজনৈতিক খেলা না হয় সেই দিকে আমাদের সকলেরই খেয়াল রাখা দরকার।
রাষ্ট্রের তিনটি বিভাগের বা স্তরের সমন্বয় সকল সময়ের জন্যই অতিব জরুরী। কোন বিভাই যেন নিজেকে বড় মনে না করে সেইদিকে দৃষ্টি দেয়া জরুরী এবং সময়ের দাবি। প্রত্যেকে প্রত্যেকের দায়ীত্বটুকু ছোট ভেবেই পালন করুন না এবং একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন আগামীর জন্য। রাষ্টের এই স্তম্ভগুলো একে অন্যের পরিপূরক হয়ে কাজ করবে এটাইতো স্বাভাবিক। এখানে কেন হবে বিভেদ? সকলেরইতো একটি ইচ্ছা এই রাষ্টকে এবং এদেশের মানুষকে সেবা করা ও মর্যাদার আসনে পৌঁছে দেয়া। কিন্তু যা দেখছি তাতো একে অন্যের পরিপূরক নয় বরং ক্ষমতা দেখানোর মহরত মাত্র। এই চর্চা থেকে বের হয়ে আসুন এবং উভয়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই দেশ এবং দেশের মানষকে একটু স্বস্তিতে থাকতে সুযোগ দিন। সাধারণ মানুষকে আর বলির পাঠা বা মরিচ বানিয়ে আপনারা শিল ও পাটার ভুমিকায় যাবেন না। অনেক হয়েছে। আর নয়। যারা আপনাকে এই জঘন্য কর্মযঙ্ঘের পরামর্শ বা উৎসাহ এমনকি উদ্ভুদ্ধ করেছেন তাদের পরামর্শ এবং অস্ফালন থেকে নিজেকে মুক্ত করুন। যারা আজ অনুঘটকের ভুমিকায় রয়েছেন তাদেরকে বলছি সময় থাকতে সাবধান হউন। কারণ জাতি আপনাদেরকে চিনেছে এবং প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশ থেকে চীরতরে বিতারিত করার। এই দেশের মালিক জনগণ এবং জনগন এখন প্রস্তুত আপনাদের কুশিলবগিরি এবং অনুগঠকের ভূমিকা চীরদিনের জন্য শেষ করতে।
শ্রদ্ধেয় সিংহা সাহেব আপনার ভাল কাজগুলোর প্রশংসা আপনি ঐ অনুঘঠকের ভুমিকার কারণে নষ্ট হতে দিবেন না। আর জাতি বা জনগণ চায় না আপনার দ্বারা আর কোন কলঙ্কিত কাজ হউক। তাহলে কিন্তু আর রক্ষে নেই, রাষ্ট্র বা প্রশাসন আপনাকে রক্ষা করতে পারবে না। এমনকি পালিয়ে গিয়েও আর বাঁচার সুযোগ নেই। বাংলার জনগণ এখন সর্বত্রই বিরাজ করছে। সময়ের প্রয়োজনে শান্তি এবং স্থিতিশীলতা রক্ষায় এগিয়ে আসুন। আগে আপনি যাই করেছেন তা ভুলে এখন বাংলাদেশের একজন হিসেবে কাজ করুন। পাকিস্তান প্রীতি ভুলেগিয়ে রাগ ও অভিমান মন থেকে মুছে ফেলে এই বাংলার একজন খাঁটি মানুষ হয়ে বাংলার জন্য, সরকারের জন্য, উন্নয়নের জন্য, কাজ করুন। ক্ষমতালোভী ষড়যন্ত্রকারীদের কুমন্ত্রণায় আর পা দিবেন না। ড. কামাল গংরা এবং বিএনপির চোর বাটপাররা আপনাকে রক্ষা করতে পারবে না বরং আরো বিপদে ঠেলে দিবে। যারা নিজেকেই রক্ষা করতে পারে না তারা কিভাবে অন্যকে রক্ষার নিশ্চয়তা দিবে। চোখ কান খোলা রাখুন এবং বিমরতি থেকে বের হয়ে আসুন। আপনার জ্ঞানকে কাজে লাগান এবং স্বমহিমায় ফিরে এসে রাষ্ট্রের তিনটি স্তম্ভের একত্রে কাজের দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন। আমরা আপনার মঙ্গল এবং দীর্ঘায়ু চাই এবং বলতে চাই যা হয়েছে তা অতীত এবং বর্তমান ও ভভিষ্যৎ হবে আরো সুন্দর এবং শান্তির আর স্থিতিশীলতার।
আমার এই লিখা বাস্তবতার নিরীখেই। তারপরও বলব যদি কোন বেয়াদবী হয় ক্ষমা করবেন। আপনি আমার গুরজন ও মুরুব্বী। কিছু কিছু অনলাইন পোর্টাল এবং সোস্যাল মিডিয়ায় জনাব সিংহা সাহেবের পক্ষে এক অবিশ্বাস্য ইতিহাস রটনা এমনকি ওনাকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে ষড়যন্ত্রকারীরা ফায়দা লোটার চেষ্টা এখনও করে যাচ্ছে। আমাদের দেশসহ অজ¯্র যা দৃশ্যমান তা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি সিমায় আসুক। সিংহা এবং প্রধানমন্ত্রীকে প্রতিপক্ষ করে তোলার চক্রান্ত মুক্ত হউক। আমাদের কাজ হউক নি:স্বাথ্য এবং জঞ্জালমুক্ত। আগামীর জন্য আমরা প্রত্যেকে পরের তরে ব্যবহৃত হব এই প্রত্যাশাই রাখছি।