তাজুল ইসলাম নয়ন ॥ আগষ্ট নিয়ে কথা বলতে বা লিখতে গেলেই মনের কোন জমাটবাধা বরফ না গলে আরো কঠিন জমাট বাধতে শুরু করে। তাই এই আগষ্ট বাঙ্গালী জাতির জন্য দু:খের, কষ্টের, ইতিবাচক সকল অর্জন হারানোর এবং বেদনাবিদৌত অকুল সায়রে ভেসে বেড়ানো দিশাহীন গন্তর্বের অন্ধকারের মত। কিন্তু এই আগষ্টের শোককে যখন শক্তিতে পরিণত করে এই জাতি এগিয়ে যাচ্ছে তখন আবার এই আগষ্টেই বার বার হানা দিয়েছে সেই এগিয়ে যাওয়াকে স্তব্ধকরে দিয়ে আবারো দিশাহীন গন্তর্বের অন্ধকারের দিকে এগিয়ে নিতে। কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাস তা আর হয়ে উঠলো না। কারণ স্বয়ং সৃষ্টিকর্তার আশির্বাদ তিনিই তাঁর বান্দাদের দ্বারা সচল রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু কি সেই থেকে কোন শিক্ষা নিয়েছে ঐ কুকর্মের সঙ্গে যুক্ত মানুষগুলি? না কোন শিক্ষাই নেই নি বরং সাজিয়েছিল এক জজ মিয়া নাটক। এখানেই শেষ নয় কিন্তু ঐ নাটকের চলমান প্রক্রিয়া এখন দৃশ্যমান।
সেই ২১শে আগষ্ট নিয়ে বলছি… আর এখানে কোন কিছুই বলারও নেই কারণ সবই দুধ বলি আর জল বলি; জলের মতই স্পষ্ট। যদি একবাক্যে একটি দূধেুর শিশুকেও প্রশ্ন করা হয় ঐ ২১শে আগষ্টের হত্যাযঙ্ঘের পিছনে করা ছিল? সেই শিশুটিও ইশারা ইংগিতে বা আধু আধু ভাঙ্গা বাংলা বাক্যে বলবে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি ও এর বাস্তবায়নকারী এদেশীয় দোসররা। বা এককথায় পরাজিত শক্তির দোসররা। যদি বলা হয় কে এই দোসর … উত্তরে আসবে জামাত, শিবির এবং এর উপকারভোগী পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী বি এন পি। তাহলে কেন আমাদের ঐ নিঘাদ সত্যকে মিথ্যার আশ্রয়ে লেপন করার পায়তারা। কারন এদেশের মানুষ সবই জেনে গেছে। এখন কেন আবার ঐ বিষয়ে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে বিভিন্ন কথাবার্তা চালাচালি হচ্ছে। এতে করে কি নিজেদেরকেও ঐ প্রমানীত দোষীদের সঙ্গে যুক্ত করতে এবং বিবেকের তাড়নায় ঐ বিচার এর শাস্তি ভোগ করতে ইচ্ছে হচ্ছে। তা হলে খুবই ভাল কারণ অন্তত আমাদের নেতিবাচক সমাজের মানুষগুলোর মনুষত্য ও বিবেক আবার সচল হচ্ছে দেখে। কারণ অন্যায় যে করে এবং যে করায় এমনকি অন্যায়কে যে নিরবে সমর্থন করে সেও সমান অপরাধী। আর সেই বিচারে ঐ অপরাধের দায়তো আপনাদের কাধেও রয়েছেই।
আমার এই কথাগুলি বলা এবং লিখার মুল কারণ হলো ইদানিং সোসাল মিডিয়ায় বি এন পির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের লিখাগুলো দেখলে গা শিওড়ে উঠে। কত বড় উদ্যত্ব বা সাহস দেখানো হচ্ছে। ঘৃণীত ঐ একুশে ২১ আগষ্ট এর দায় আওয়ামী লিগের কাধে চাপানোর মিথ্যা চেষ্টা চালানো এবং বলা হচ্ছে এই আগাষ্টের আক্রমের সঙ্গে বিএনপি জামাত জোট জড়িত ছিল না বরং আওয়ামী লীগই এই পরিকল্পনা মাফিক আক্রমন করেছে। কি অদ্ভুতই না ঐ মিথ্যাবাদীদের কথা। আমার প্রশ্ন তখন কি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল? আওয়ামী লীগ কি তখন নিজেরা আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়ে সবাই একযোগে মরতে গিয়েছিল?
আপনারাতো বলতেছেন কিন্তু কি করে এই নিলজ্জ বক্তব্য প্রচার করতেছেন; ভাবছেন কি এই দেশের মানুষ আপনাদেরকে ঘৃণা করে এবং আগামীতেও করবে। কারণ এখন এই দেশের মানুষ আপনাদের মনের গভীরের ও গহীনের কথাও জানে এবং মিথ্যার উপর দাড়িয়ে মিথ্যা দিয়ে আর মানুষের মন জয় করার সময় নেই। শাক দিয়ে মাছ ঢাকার যে সুযোগ কাজে লাগিয়েছিলেন সেটার অবসান হয়েছে। আমার প্রশ্ন তখনতো আপনারা ক্ষমতা এবং সংসদে ছিলেন কি করেছিলন সেদিন? শোক প্রস্তাবও আনতে আপনাদের বুক কেপেছিল তাইনা। তারপরের সকল কাহিনীই খোলাসা হয়েছে; প্রকাশিত এবং চিত্রায়নের মাধ্যমে চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সহ প্রদর্শিতও হয়েছে যা জনতার চোখের সামনে এখন ভিউজিলাইজড্ হচ্ছে।
সর্বশেষ বিশ্বাসযোগ্যভাবে বিচারিক আদালতেও সকল সত্য প্রকাশিত হয়ে মিডিয়ার মাধ্যমে জনগণের দ্বারে উন্মোচিত হয়েছে। কি করে আর মুখ দেখবেন? কিন্তু না লাজ-লজ্জা, হায়া-মায়া, ইজ্জত ও সম্বরন অবশিষ্ট বলতে আর কিছুই রাখলেন না। উলঙ্গ মাতালের ন্যায় মিথ্যা অনবরত বলেই যাচ্ছেন। সকল সত্য ইতিহাস, প্রমান এবং সকল কিছুই আজ আপনাদের ঐ উলঙ্গপনার কাছে জিম্মি মনে করছেন; আসলে তা না বরং আপনারা এখন জিম্মি হয়ে পড়েছেন সত্যের বেড়াজালে। তাই এই আপনাদের দিয়ে আর কিছু হবে না; যা জনগণ বার বার বুঝিয়ে দিয়েছে এবং আপনাদেরকে বাতিলের খাতায় রেখে নতুনের সন্ধানে মানুষ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
আমি আপনাদেরকে সম্মান করতে চাই এবং বলতে চাই আর নয় মিথ্যা আর নয় ষড়যন্ত্র; এখন সময় সত্যের সন্ধানে সামনে এগিয়ে যাওয়ার। জনগণের সামনে যে সত্য রয়েছে সেই সত্যকে মেনে নিয়েই সামনে এগিয়ে যেতে হবে। মিথ্যার আশ্রয়ে আর কিছু করার সময় এখন নেই। বরং সত্যকে আকড়িয়ে সামনের দিকে এগিয়ে গিয়ে সত্যানুসন্ধানির অগ্রগামীতায় নিজেদেরকে নিয়োজিত করুন। তাহলে এই দেশবাসী আপনাদের অপকর্মের দায় থেকে মুক্ত করতে সদয় হবেন। যদি চলমান ষড়যন্ত্র এবং মিথ্যাকে আকঁড়ে ধরে বাঁচতে চান তাহলে হয়ত দেশের মাটি ছেড়ে বিদেশের মাটিতে আশ্রয় নিতে হবে অচিরেই।
২১শে আগষ্টের জঘন্য ও ঘৃণ্যতম ঘটনার দায় সম্পূর্ণ বিএনপি এবং জামাত শিবিরের। আর এই চক্রান্তের হোতা বঙ্গবন্ধুর খুনী জিয়া পরিবার। এই দায় থেকে মুক্তির আর কোন উপায় নেই। সত্যের ধর্ম প্রকাশিত হওয়া আর মিথ্যার ধর্ম সত্যের কাছে পরাজিত হয়ে অস্তমিত হওয়া। তাই বিনয়ের সাথে বলছি আর মিথ্যা বলবেন না এবং নিজেদেরকে ইতিহাসের আস্তাকুড়ে ফেলবেন না এমনকি জনরোষের ভয়াবহতা থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করুন।