চপল, যুক্তরাজ্য থেকে॥ যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় চাইতে পারেন বেগম জিয়া। বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তাঁকে ‘হয়রানি’ এবং গ্রেপ্তার করা হতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে বেগম জিয়া রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন তৈরি করছেন বলে, বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র জানিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, গত ১২ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার বেগম খালেদা জিয়া, তারেক জিয়া এবং জোবায়দা রহমান হলবর্নে ম্যাকারনি অ্যার্টনি অফিসে যান। সেখানে তাঁরা প্রায় তিনঘণ্টা সময় কাটান। বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে যেসব মামলা চলমান আছে সেগুলোর কপি আদালত থেকে তুলে লন্ডনে পাঠানো হয়েছে। এই মামলার ভিত্তিতেই তিনি লন্ডনে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করবেন বলে বেগম জিয়ার ঘনিষ্ট সূত্রগুলো জানাচ্ছে।
তাঁদের মতে, গত ১৫ জুলাই বেগম জিয়া লন্ডনে যান। বেগম জিয়ার কাছে এরকম নিশ্চিত খবর ছিল যে, এসময় ‘বাংলাদেশে কিছু একটা ঘটবে’। বিশেষ করে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী সংক্রান্ত রায়ের পর বেগম জিয়া বেশ উল্লসিত ছিলেন। এরপর বাংলাদেশে কিছু একটা ঘটার সম্ভাবনা উজ্জ্বল বলে বেগম জিয়া ও তারেক জিয়া তাঁর ঘনিষ্ঠদের জানিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিছুই ঘটেনি। বেগম জিয়া ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই লন্ডনে গেছেন বলে, শুরু থেকে সরকার দাবি করে এসেছিল। লন্ডনে বেগম জিয়া একাধিক বিতর্কিত বৈঠকের খবরও গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। ‘কিছু একটা না ঘটার পরিপ্রেক্ষিতে বেগম জিয়া বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে রাজনৈতিক আশ্রয় নিতে চাইছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশে ফিরলেই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট এবং জিয়া চ্যারিটেবল এর মামলায় তাঁর দন্ডিত হবার সম্ভাবনা আছে। দুটি মামলাই শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এই মামলাগুলোতে দন্ডিত হলে বেগম জিয়া কেবল নির্বাচনের অযোগ্যই হবেন না, তাঁকে জেলেও যেতে হবে। কারাদন্ড এড়াতেই বেগম জিয়া দীর্ঘস্থায়ীভাবে লন্ডনে থাকতে চাইছেন বলে তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জানাচ্ছে।
বেগম জিয়া লন্ডনেও একাধিক ঘরোয়া আলোচনায় বলেছেন, দেশে তাঁকে নির্যাতন করা হবে। এটা রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের একটা ভালো যুক্তি। বিএনপির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, দ্রুত বাংলাদেশের দৃশ্যপটে যে পরিবর্তনের আশা বিএনপি করেছিল, অলৌকিকভাবে তা ভেস্তে গেছে। রোহিঙ্গা ইস্যু দেশে এবং বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। এখন পেছন থেকে কিছু ঘটনার সম্ভাবনা নেই। এনিয়ে বেগম জিয়া ও তারেক জিয়া একরাশ হতাশা। এই হতাশা থেকেই যতদিন বর্তমান সরকার ততদিন লন্ডনে থাকার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন বেগম জিয়া।