সত্য মেনে নেয়া কি এতই কঠিন…
বর্তমানের এই কঠিন বাস্তবতায় সত্যকে মেনে নেয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। সত্যকে আকঁড়ে থাকা এমনকি সত্যের পথে চলা ও সত্য চর্চা করা যেমন কঠিন তেমনি কঠিন সত্যকে মেনে নেয়া। হাজারো মিথ্যার মধ্যে যে সত্য প্রস্ফুটিত তা কিন্তু সকলেই দেখে কিন্তু বিশ্বাস করে না। কারণ মানুষ এখন অসত্য চর্চায় এতো বেশী ব্যস্ত যে, এখন আর সত্যকে মিথ্যা থেকে আলাদা করতে পারে না; বা মিথ্যাকেই সত্য ভেবে অগ্রসর হয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এই যদি হয় আমাদের নিয়তির বাস্তবতা তাহলে পূর্বের অবস্থান যখন হযরত মূসার কাছে তৌরাত নাযিন হয়নি)। সেই অবস্থায় অবশ্য সত্য কে মিথ্যা থেকে আলাদা করা যেতনা কারন তখন কোন মানদন্ড ছিল না। কিন্তু এখনতো বিভিন্ন ধর্মের কিতাব বা পুস্তকগুলো সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত মানদন্ড নিয়ে এসেছে। এমনকি মানুষ দেশের, সমাজের ও রাষ্ট্রের প্রয়োজনে মানদন্ড তেরী করেছে এবং সেই অনুযায়ী অগ্রসরও হচ্ছে।
তাহলে আমাদের দুর্বলাতা কোথায়? এই যে চারিদিকে শুধু মিথ্যায় জয়জয়কার আর সত্যের হা হা কার। সত্যকে মানুষ গ্রহণ করেনা। এখন বাস্তবে যাহা সৎ, যাহা খাঁটি, যাহা উপযুক্ত; মোট কথা যাহা সম্মান পাবার যোগ্য সেই জায়গাটিতেই মিথ্যা পাকাপোক্তভাবে স্থান দখল করে আছে।
আমাদের এখন করণীয় বলতৈ খোদার দরবারে মোনাজাত করা এবং সেই দিক নির্দেশনা যা খোদা তায়ালা দিয়েছেন তাঁর আলোকে পথ চলা। এইতো সারা পৃথিবীর মারা-মারি, হানা-হানি এবং হিংসা বিদ্বেশের আগুনে জ্বলে পুরে যাচ্ছে সততা এবং ন্যায়নিষ্টতা… তা কিন্তু একদিন প্রজ্জ্বলিত হবেই। কারণ সত্যের ধর্মই হলো নিভু নিভু টিকে থেকে প্রজ্জ্বলিত হওয়া এবং অন্ধকারকে জয় করে আলোকিত করা।
মায়ানমারে এখন যে, জলন্ত নরক বা দোযখ তা কিন্তু খোদার ইচ্ছায় হয়নি বরং হয়েছে শয়তানের ইচ্ছায়। কারণ শয়তান চায় শান্তির বিপরীতে অশান্তি সৃষ্টি করে রাখতে। আর এই কাজে ব্যবহার করে যাচ্ছে আমাদের মত সৃষ্টির সেরা জীব মানুষকে যাকে আল্লাহ তায়ালা আশরাফুল মাকলুকাত হিসেবে নিজ রুহানী ছিফতে বা সুরুতে সৃষ্টি করে পৃথিবীকে দেখা-শুনা বা পরিচর্যার দায়িত্বে নিয়োজিত করেছিলেন।
এর বিপরীতে আমরা আজ নিজেদের স্বার্থ হাছিলেই বেশী ব্যস্ত। যখনই কেউ কোন ভালো কাজ বা সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছার বহি:প্রকাশ ঘটিয়ে থাকেন আর তখনই এর বিরোধীতায় নানাবিধ যুক্তি এবং চক্রান্তে লিপ্ত হয় মানুষ। এর কারণ খুুবই স্পষ্ট যে, শয়তান চায় না কোন একটি সৎ ইচ্ছা বা খোদার ইচ্ছা মানুষের দ্বারা পৃথিবীতে বাস্তবায়ীত হউক। আর এটাই হলো শয়তানের চ্যালেঞ্জ খোদার সঙ্গে। কারণ শয়তানের শেষ বিচারের ফয়সালা হয়ে গেছে কিন্তু মানুষের হয়নি। তাই এখনও শয়তান চায় মানুষকে অশান্তিতে রেখে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে এবং সর্বশেষে সৃষ্টিকর্তা থেকে বিচ্ছিন করে রাখতে।
বাংলাদেশ সরকার এবং সরকার প্রধান চেষ্টা করে যাচ্ছেন মানবতা এবং সত্যের আলোকে কিছু একটা করতে; কিন্তু এর সামনে পাহাড় সমান বাধা হয়ে দাড়িয়েছে মিথ্যা বা অসত্যের দেয়াল। ঐ দেয়াল বেধ করে এগিয়ে যেতে হলে প্রয়োজন এদেশের মানুষ এর ঐক্যবদ্ধ খোদায়ী প্রচেষ্টার বা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির ব্যবহারের। কিন্তু এখানেই আমাদের সীমাবদ্ধতা।
বিভিন্ন গোজব এবং চক্রান্ত মোকাবেলা করা এখন একটি সময়ের কঠিন বাস্তবতা হয়ে দাড়িঁয়েছে। মায়ানমারের বিপদগ্রস্থ মানুষের সাথে শয়তানের পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারীরাও আমাদের মাতৃভুমিতে এসেছে। এখন মানবতার মাঝেও কঠোরতা দেখানোর প্রয়োজনীয়তা লক্ষ্য করা আবশ্যক। এই সময় আবার কিছুদিন আগে দেশে ঘটে যাওয়া রাজনীতি, বিচারবিভাগ এবং সরকারের ভীতে আঘাত করা ষড়যন্ত্রকারীদের ক্ষমতালোভী ক্রু নামক ষড়যন্ত্রের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে। কিন্তু এর রেশ কাটিয়ে উঠে স্বস্তীদায়ক অবস্থায় এখনও পুরোপুরো যেতে পারেনি দেশ ও জনগণ। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরাও আবার নতুন খেলায় মেতে উঠেছে যা এখন বিভিন্নভাবে দৃশ্যমান। এর সাথে যুক্ত হয়েছে আমাদের দেশের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশাপাশি রুহিঙ্গা সমস্যা। এই তিনে মিলে দেশের উন্নয়ন গতি কিছুটা সময়ের জন্য উন্নতির গতিময়তা থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে এবং আগামীতে আরো বিপন্নতারও কঠোর বাস্তবতার মুখোমুখি করে তুলতে পারে। তাই চোখ, কান খোলা রেখে এবং সজাগ থেকে সার্বজনীন পদক্ষেপ নিয়ে এগুতে হবে।
নোবেল নিয়ে আমাদের কোন কিছু বলার নেই কিন্তু যদি নোবেল পাওয়া যায় তাহলে ইহা অতি উত্তম এবং আগামীর দৃষ্টান্ত হয়ে থাকেবে। আর না পেলেও নতুন সংস্করণে নোবেলের আর্বিভাব ঘটবে এমনকি বিশ্বাস করি নোবেলের অন্তনীহিত তাৎপর্যের নূতন মোড়ক উন্মোচিত হবে। এই পর্যন্ত যারাই নোবেল পেয়েছিলেন তারা কিছুটা হলেও কিন্তু অর্ন্তনীহিত তাৎপর্যের দিকে এগিয়েছিলেন। বিশেষ করে শান্তিতে পাওয়া নোবেলবিদ আমাদের দুজন (মোহাম্মদ ইউনূছ এবং অং সাং সুচি) কিছুই করে দেখাতে পারেন নি বরং নোবেলের মর্যাদাকে অন্তষাঢ়শুণ্যতায় পরিণত করে মৃত্যু ঘটিয়েছেন। {এই দুজনই তাদের নামের যে পবিত্রতা তা রক্ষা করতে পারেননি বরং ঐ দুটো মহা পবিত্র নামকে করেছেন কলঙ্কিত।} আর এই মৃত্যু বা কলঙ্ক থেকেই আজ আবার নতুন মোড়কে নোবেল চেতনা ও মর্যাদা জীবিত হউক এবং পৃথিবীর কল্যাণের তরে মঙ্গলের আর্ভিভাব নিয়ে এগিয়ে আসুক আর্তমানবতার সেবায়। এটাই আমাদের কামনা ও মনোবাসনা।
সামনে আসছে দূর্গাপূজা; আর এই দূর্গাপুজায়ও পবিত্র ঈদুল আযহার ন্যায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকবে বলে বিশ্বাস রাখা যায়। কারণ সকল সার্বজনীন উৎসবে বাংলা এবং বাঙ্গালীর ভাবমূর্তী বিনষ্ট যেন না হয় সেইদিকে লক্ষ রাখা এখন আমাদের সকলেরই দাবী। একটি কথা বলতে হয়, আমাদের সম্প্রীতির বন্ধন অটুট থাকুক। কোন ধর্মের, বা গোত্রের ও বর্নের বেড়াজালে আবদ্ধ না থাকুক। সকলে আমরা বাংলাদেশী এই মন্ত্রে উজ্জীবিত হউক আমাদের মননশীল মানসীকতা। দেশে যখন ইসলামী টেরোরিষ্ট বা বিপথগামী মানুষগুলো রক্তের খুলি খেলায় মেতেছিলো তখনতো মসজিদে নামাজ এমনকি ঈদের নামাজ পড়াও ছিলো দুস্কর বা ভয়ঙ্কর ও আতঙ্কিত ভাব’র ভিবিষিকাময় রূপ। ঠিক সেই সময় মুসলমানদের নামাজের সময় হিন্দুরা দিয়েছিলো পাহাড়া যাতে করে নিবিঘেœ ঈদের নামাজ আদায় করা যায়। এই যে একটি সম্প্রীতির বন্ধনের প্রকাশ্য রূপ তা অটুট থাকুক। এই বন্ধন অটুট রাখার লক্ষ্যে আমাদের সকলের যৌক্তিক এবং পারস্পারিক সহযোগীতা অব্যাহত রাখা প্রয়োজন। সরকারের একার পক্ষে কোন সফলতায় পৌঁছা সম্ভব না। কারন সফলতা মানে সার্বজনীীন ঐক্যের চিন্তা এবং কজের সমন্বয়ের ফল। আর এই ফল ঘরে তুলেছিলেন বঙ্গবন্ধু এবং এখন তুলছেন তারই কন্যা শেখ হাসিনা। এই দুই জাদুকরী দৃষ্টান্তকে কাজে লাগিয়ে দেশকে নিয়ে এমনকি আমাদের ঐতিহ্যকে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
আন্তর্জাতিক মহলের যে চেষ্টা বাংলাদেশকে স্বাবলম্বি হতে না দেয়ার, সেই চেষ্টায় এখন ভাটা পড়েছে এবং সামনের দিকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টার ইতিবাচক মনোভাব এবং এর বাস্তবায়ন প্রতিফলিত হচ্ছে। আশা করি এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে পাড়লে খুব অল্প সময়েই বাংলাদেশ পৌঁছে যাবে অভিষ্ট লক্ষ্যে। তবে এর বিরোধীতায়ও কমতি নেই। দেশী এবং বিদেশী কিছু চক্রান্ত পর্যায়ক্রমেই পরিলক্ষিত হয়। যা আমাদের দেশের মানুষের দৃষ্টিসীমার নাগালে। আর এই চক্রান্তকারীদের ছলনা হতে সাবধান হওয়া এখন আমাদের নিবৃত মনের জাগ্রত বাসনার জাগতিক কামনা।
ডিজিটাল উন্নয়ন হচ্ছে দ্রুত গতিতে এবং এর প্রসারে জাতি পেয়ে যাচ্ছে সঠিক নির্দেশনা এবং আগামীর পথচলার পাথেয়। এই অগ্রগামীতাকে অব্যাহত রাখতে হলে সত্যের অনুসন্ধান করা জরুরী এবং সত্যকে মেনে নিয়ে মিথ্যাকে পরিহার করা এখন আমাদের নৈতিক ও ঈমানি দায়িত্ব হয়ে পড়েছে। আসুন খোদার সত্যকে অনুসন্ধান করি এবং সেই সত্যের আলোকে আগামীর নিঃছিদ্র নিশ্চয়তা গ্রহন করি।