ইসরাত জাহান লাকী॥ মা-বাবাকে অবহেলা, বড় হয়ে মা-বাবার প্রতি দায়িত্ব ভুলে যাওয়ার পথ বন্ধ। সন্তান হিসেবে মা-বাবার প্রতি দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন না করলে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন কাঁচি চালাবে খোদ সরকার। ‘প্রণাম বিল’ নামে এমনই একটি বিল গৃহীত হয়েছে ভারতের আসাম বিধান সভায়। দেশটির কোনো রাজ্যে এই প্রথম এমন বিল গৃহীত হলো।
এই আইন অনুযায়ী, রাজ্যের সরকারি চাকরিজীবীরা বৃদ্ধ বাবা-মাকে যতœ না করলে, অত্যাচার বা অবহেলা করলে বাবা-মা সংশ্লিষ্ট দফতরে নালিশ জানাতে পারেন। সে ক্ষেত্রে কর্মচারীর বেতন থেকে ১৫ শতাংশ বাবা-মায়ের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সরাসরি জমা পড়বে। একই সুবিধা পাবেন প্রতিবন্ধী ভাই-বোনও।
শুক্রবার বিধানসভায় বিলটি গৃহীত হওয়ার পর রাজ্যের স্বাস্থ্য ও অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা জানান, ভবিষ্যতে বেসরকারি ক্ষেত্রকেও এই আইনের আওতায় আনা হবে।
তিনি জানান, প্রতিবন্ধী ভাই-বোন থাকলে তাদের জন্যও বেতনের ৫ শতাংশ খরচ করতে হবে। তাদের অযতœ করলেও কর্মীদের বেতনের অংশ সরাসরি ওই প্রতিবন্ধী ভাই বা বোনের অ্যাকাউন্টে জমা পড়বে। পাশাপাশি, চাকরি করাকালীন কারও মৃত্যু হলে অনুকম্পামূলক নিযুক্তিতে যে জটিলতা দেখা যায় তা কাটাতে এবার থেকে শেষ মাসের বেতনের সমান বেতন তার স্বামী বা স্ত্রী অথবা নিকটতম আত্মীয়কে আজীবন দেওয়া হবে।
রাজ্যে প্রতিবন্ধীদের শুমারি শুরু হচ্ছে। চলতি বছর সব প্রতিবন্ধী এককালীন পাঁচ হাজার টাকা করে পাবেন। পরের বছর থেকে রাজ্য সরকার প্রতিবন্ধীদের অ্যাকাউন্টে মাসে এক হাজার টাকা সাহায্য পাঠাবে।
এদিকে বিল উত্থাপনের সময় হিমন্তের দেওয়া ভাষণের বিরোধিতা করে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ বলেন, ‘অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে ধারণা হয়, অসমীয়া সরকারি কর্মীরা বাবা-মায়ের যতœ নেন না। এই ধরনের কথা দেশবাসীর সামনে অসমীয়াদের নিষ্ঠুর প্রতিপন্ন করে।’
ভারতে এই আইনটি যুগোপযোগী চিন্তার ফসল। আমাদের দেশেও এই আইনটি অতি দ্রুত করা হউক। চারিদিকে যে লজ্জাস্কর সংবাদ পরিবেশন হচ্ছে এবং আমাদের মানবতার মধ্যমণি বিবেক বিধ্বস্ত হয়ে অচড়ে মুচড়ে পরে মূল্যভোদ বিচ্যুত হয়েছে। তা ফিরিয়ে আনতে এমনকি ভিক্ষা ও বৃদ্ধাশ্রম নামক যন্ত্রণার অবসান করতে নতুন এই যুগোপযোগী আইনটি পাস করিয়ে জনমনে স্বস্তি ও নিরাপত্তার সামাজিক বেষ্টনির পরিধি বাড়ানো হউক।